প্ল্যাটফর্ম নিউজ, ১৫ এপ্রিল, বৃহস্পতিবার, ২০২১
করোনাভাইরাস সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সারাদেশে গত ১৪ এপ্রিল, ২০২১ হতে জারি হয়েছে কঠোর লকডাউন। তাই জরুরী সেবাদানকারী ব্যতীত জনসাধারণের চলাচলের জন্য মুভমেন্ট পাস ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এদিকে নির্দেশনা জারির স্বল্প সময়েই মুভমেন্ট পাস গ্রহণের জন্য বিপুল পরিমাণে আবেদনকারী থাকায় জরুরী প্রয়োজন থাকা সত্ত্বেও যথাসময়ে উক্ত ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আবেদন করতে পারেননি অনেকেই। যার ফলশ্রুতিতে দেশের এমন ক্রান্তিকালে সম্মুখসারির অন্যতম যোদ্ধা ও জরুরী সেবাদানকারী হবার পরেও চিকিৎসকদের অনেকেই নিজ কর্মস্থলে সেবা দিতে গিয়ে পথেই শিকার হয়েছেন নানান রকম ভোগান্তির।
সেরকমই এক বিড়ম্বনার শিকার ডা. ইশরাত জাহান গত ১৪ এপ্রিল দেশের চিকিৎসক এবং মেডিকেল, ডেন্টাল শিক্ষার্থীদের সর্ববৃহৎ স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন “প্ল্যাটফর্ম” এর ফেসবুক গ্রুপে তাঁর অভিজ্ঞতা জানিয়ে লিখেন-
“গতকাল সবার মধ্যেই গাড়ি নিয়ে বের হওয়ার ব্যাপার একটু সন্দেহ ছিল। আমরাও যথারীতি উৎকন্ঠার মধ্যে ছিলাম। আমার হাসব্যান্ড স্কয়ার হসপিটালের কোভিড ইউনিটে কর্তব্যরত আছেন। আজকে সকাল ৮টা থেকে তার ডিউটি ছিল। আমাদের বাসায় আমার শশুর কোভিড পজেটিভ হওয়ায় আমার হাসবেন্ড বাসা(মুন্সীগন্জ) থেকে নিজেদের গাড়ি নিয়ে ডিউটিতে যাচ্ছেন বেশ কিছুদিন যাবৎ। গতকাল মুভমেন্ট পাস নিয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার পর বিকাল থেকে রাত পর্যন্ত বারবার চেস্টা করছিলাম আর গ্রুপের পোস্টগুলো দেখছিলাম আাসলে কি করা যায় সে ব্যাপারে। অনেকেই পজেটিভ কথাবার্তা লিখল যে ডাক্তারদের লাগবে না। কিন্তু আজ সকালে আমাদের গাড়ি সাইনবোর্ডের একটু পরে থামায় এবং ৩০০০ টাকা জরিমানা করে। আমার হাসব্যান্ডের সাথে তার কর্মস্থলের আইডি কার্ড ছিল।”
পরবর্তীতে প্ল্যাটফর্ম ফেসবুক গ্রুপে দেয়া উক্ত পোস্টটি দায়িত্বশীলদের নজরে আসায় তাঁরা ব্যক্তিগতভাবে ত্বরিত পদক্ষেপ নেন। পুলিশের উচ্চ পর্যায়ে যোগাযোগ করা হয় এবং তাঁরা বিষয়টি খতিয়ে দেখে একদিনের মধ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। যার ফলস্বরূপ আজ ভুক্তভোগীর গাড়ির প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ফেরত দেয়াসহ জরিমানা মওকুফ করা হয়। অতঃপর এ বিষয়ে নিজের কৃতজ্ঞতা জানিয়ে ডা. ইশরাত প্ল্যাটফর্মের ফেসবুক গ্রুপে লিখেন-
“গতকাল গাড়ি নিয়ে হয়রানির ব্যাপারে পোস্ট করেছিলাম যাতে আর কাউকে রাস্তায় এরকম সমস্যায় না পড়তে হয়। পরবর্তীতে সকলের সহযোগিতায় সমস্যার সমাধান হয়েছে। আজকে সকালে গাড়ির কাগজপত্র ফেরত দেয়া হয়েছে এবং জরিমানা মওকুফ করা হয়েছে। সাথে থাকার জন্য সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আশা করি ভবিষ্যতে কেউ যাতে এমন সমস্যার সম্মুখীন না হয় সে ব্যাপারে আমাদের যারা অভিভাবক আছেন তারা একটি স্থায়ী ব্যাবস্থা গ্রহণ করবেন।”