প্ল্যাটফর্ম নিউজ
শুক্রবার, ১৭ এপ্রিল, ২০২০
তথ্য গোপন করে ভর্তি হওয়ার কারণে লকডাউন ঘোষণা করা হল বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের পুরুষ মেডিসিন ইউনিট- ০৩। সাথে কর্মরত সকল ডাক্তার কে পাঠানো হয়েছে কোয়ারেন্টাইনে।
গত ১২ এপ্রিল (রবিবার) শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এর মেডিসিন ইউনিট- ০৩ এর এডমিশন ছিল। হঠাৎই একজন রোগী আসে বেশ অসুস্থ। যথাসম্ভব জিজ্ঞেস করার পরেও তারা তথ্য গোপন করে, জ্বরের ইতিহাস তারা জানায় না। রোগী দেখে, ক্লিনিক্যাল পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাপত্র দেয়া হয়। প্রথমে তার স্ট্রোক এর মত কিছু উপসর্গ ছিল, কিন্তু পরবর্তীতে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ইলেক্ট্রোলাইট-ইমব্যালেন্স (Hyponatremia) পাওয়া গেল, রোগীর সাথে তার স্ত্রী এবং ছেলে ছিল,তারাও রোগীর জ্বর থাকার কথা স্বীকার করেনি। পরবর্তীতে রুটিন এক্সামিনেশনের অংশ হিসেবে তাকে X-Ray করতে দেয়া হয়। এক্সরে রিপোর্ট দেখে চিকিৎসকরা তাকে করোনা পজিটিভ হিসেবে সাসপেক্ট করেন। সাসপেক্টেড কেস হিসেবে তাকে করোনা পরীক্ষা করানোর জন্য বলা হল,তখন রোগী পার্টি স্বীকার করল রোগীর জ্বর ছিল। গতকাল রোগীর করোনা পরীক্ষার রিপোর্টে করোনা পজিটিভ এসেছে। ফলশ্রুতিতে এই রোগীর সংস্পর্শে আশা সকল ইন্টার্ন চিকিৎসক, মিডলেভেল চিকিৎসক ইউনিট প্রধান সহ ইউনিটের সকলেই করোনা ঝুঁকিতে পড়ে গেছে। সকলকেই কোয়ারেন্টাইন এ যাবার নির্দেশ দিয়েছে হাসপাতাল কতৃপক্ষ এবং একই সাথে বাধ্য হয়েই মেডিসিন ইউনিট- ০৩ কে লকডাউন ঘোষণা করেছে কতৃপক্ষ।
এ ব্যাপারে হাসপাতালের পরিচালক ডা. মোহাম্মদ বাকির হোসেনের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জানান,
“শের-ই -বাংলা মেডিকেল কলেজ এবং হাসপাতাল, বরিশাল-এর মেইল মেডিসিন ইউনিট-৩ কে লক ডাউন করা হল এবং তার সাথে এই ইউনিটের সকল চিকিৎসক ও সংশ্লিষ্ট নার্সদেরকে কোয়ারান্টাইনে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হল ৷ এই সিদ্ধান্ত শেবাচিমের অধ্যক্ষ ও মেডিসিনের বিভাগীয় প্রধান এবং ইউনিট প্রধানের সিদ্ধান্ত মোতাবেক হয়৷ IEDCR কেও বিষয়টি জানানো হয়েছে ৷ ১৩/০৪/২০২০ এ এক অজ্ঞান রোগীকে তার আত্মীয়রা ভর্তি করে যায়, জ্বর- কাশি-শ্বাসকষ্টের তথ্য গোপন রেখে ৷ এরপর যখন ১৫/০৪/২০২০ তারিখে তার এক্স-রে রিপোর্ট আসে তখন চিকিৎসকরা রিপোর্ট দেখে সন্দেহ করে এবং তাৎক্ষণিকভাবে তাকে করোনা আইসোলেশন ইউনিটে প্রেরণ করা হয় এবং আজকে তার কোভিড পজেটিভ রেজাল্ট আসে ৷ এভাবে তথ্য গোপন রাখলে কিভাবে চলবে চিকিৎসক সমাজ?”
উল্লেখ্য, গত কিছুদিন ধরেই তথ্য গোপন করে রোগীরা হাসপাতালে ভর্তি হবার মাধ্যমে ঝুঁকিতে ফেলে দিচ্ছে এদেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থাকে। কারণ করোনা আক্রান্ত রোগীর সংস্পর্শে আসা চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীরা কোয়ারেন্টাইনে যাওয়া ও আক্রান্ত হলে চিকিৎসা কে দেবে? অন্যান্য রোগীরাও বঞ্চিত হবে চিকিৎসা থেকে। এভাবে ব্যাহত হচ্ছে চিকিৎসাসেবা, যা নিয়ে ব্যাপক শঙ্কা প্রকাশ করেছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
প্ল্যাটফর্ম প্রতিবেদক/ জি.এম.এস.কে. ডালিম