প্ল্যাটফর্ম নিউজ, ২৩ মে ২০২০, শনিবার
ডা. শুভদীপ চন্দ
খামের উপর ঠিকানা লেখা না থাকলে যেমন চিঠির মালিকানা থাকে না, আমাদের বাবুটারও তেমনি কোনো নাম নেই। বড় ভাইয়ের ছেলের বয়স তেরো মাস। অথচ তাকে একেকজন একেক নামে ডাকে। তার যখন মর্জি হয় ‘হুঁ..’ করে। তার মা গান গায়। ‘আয় আয় চাঁদ মামা টিপ দিয়ে যা, চাঁদের কপালে চাঁদ টিপ দিয়ে যা’। সে ছন্দমিলের অপেক্ষায় বসে থাকে। চাঁদের সাথে মানুষের পরিচয় শিশুকাল থেকেই।
আরেকটু বড় হলেই জানতে পারবে চাঁদ তার সাথেই আছে। সে যদি উঠোনে যায় চাঁদ উঠোনে যাবে। মাঠে গেলে মাঠে। পুকুর পাড় দিয়ে দৌড়ুলে চাঁদও পুকুর পাড় দিয়ে দৌড়াবে। দাঁড়ালে দাঁড়িয়ে থাকবে। ঘুমানোর সময়ে জানালার বাইরে বসে থাকবে।
বলা হয় বাঙলায় বারো মাসে তেরো পার্বণ। চৌদ্দতম পার্বণটি ছিল সর্দি জ্বর। জ্বর হলে স্পেশাল এটেনশন পাওয়া যেতো। একটু মুখরোচক ভাল খাবার জুটতো। আমরা অপেক্ষা করতাম কবে অসুস্থ হবো! এখন একটু জ্বর কাশিতেই আত্মা উড়ে যায়। গত ক’দিন বন্ধু বান্ধব যাদের ফোন পেয়েছি সব আতঙ্কের ফোন। ‘কোথায় যাব, কোথায় টেস্ট করব, লাইনে দাঁড়াতে হয় কতক্ষণ’- এসব প্রশ্ন। সাথে শুনে নিই দুর্ভাগ্যের গল্প। একজন বললো- অনলাইনে বাসায় এসে টেস্টের জন্য আবেদন করেছিল, ডেট পেয়েছে ২৮ তারিখ!
এ বছর অনেকেই ঈদ পরিবারের সাথে করতে পারছেন না। অনেকেই দ্বিগুণ তিনগুণ খরচ করে বাড়ি ফিরছেন। যারা বের হচ্ছেন তাদের ট্রল করছে লোকে। তাদেরও যে কারন থাকতে পারে- কেউ ভাবছে না।
বন্ধুদের কেউ কেউ এ লেখা ফলো করেন। একটু আগে জানলাম আমার সেই কলিগের মেয়ে বেবি হয়েছে। মা মেয়ে দুজনেই ভাল আছে। তারমানে ঈশ্বর এখনো আমাদের উপর থেকে সম্পূর্ণ আশাহত হোন নি!
এটিই আশার কথা।