লাইফ ইন লকডাউন, ডে হান্ড্রেড সেভেন্টি টু

প্ল্যাটফর্ম নিউজ, ২ অক্টোবর ২০২০, শুক্রবার
ডা. শুভদীপ চন্দ

রাজউকের এক কর্মচারী কোটিপতি হয়ে গেছেন। উনি না, উনার বৌ। ডিজি হেলথের এক ড্রাইভার কত পয়সা কেউ জানে না। সিলেটের এক হোস্টেলে এক মেয়েকে গণ ধর্ষণ করা হলো। ধর্ষিত হয়েছেন এক পার্বত্য চট্টগ্রামের মেয়ে বাঙালি সেটেলারদের দ্বারা। এক ব্যর্থ প্রেমিক হত্যাই করে ফেললেন এক কিশোরীকে। এসবের কোন বিচার হবে না। এসব খবর পড়ি না। এটি অন্ধের দেশ। আমরা সবাই অন্ধ। The search of a blind man in a dark night for a black cat- which is not there. কাল বেড়ালটিই জাস্টিস। কোনকালেই কখনো তা ছিলই না!

আমরা অন্ধ বলে বিচার, সংবিধান, আইনের শাসন স্বপ্ন দেখানো হয়েছিল। স্বপ্ন দেখেছিলাম চোখ ভরে আর বুক ভরে। এখন ঘৃণা লাগে। চেতনাবাহী বা পদধারী কাউকে দেখলেই সামনাসামনি তো কিছু বলতে পারি না। দূর থেকে থু থু ফেলি।

ছবি – প্রতীকী

আমাদের এক এসইসিএমও ডাক্তারের চেয়ারে বসে ছবি তুলেছেন। নামের আগে ডাক্তার লাগিয়ে সে ছবি ফেসবুকে পোস্টও করেছেন। আমরা সবাই দেখেছি কিন্তু কিছু করার নেই। উপজেলা লেভেলে দ্বিতীয় তৃতীয় চতুর্থ শ্রেণীর মতো শক্তিশালী অংশ আর নেই। তারা লোকাল রাজনীতির নির্ভরযোগ্য বাহু। মাঝেমাঝে কষ্ট লাগে। আসলে এখনো অভ্যস্ত হতে পারি নি। কাজকে জীবন থেকে আলাদা করতে পারি নি। সরকারি চাকরিতে উর্ধতন অধস্তনের সম্পর্ক এত সূক্ষ ও এত চালাকিতে ভরা তা বুঝে উঠাই কঠিন। ধীরে ধীরে তা মেরুদণ্ডকেই খেয়ে নেয়। আমাদের সিনিয়রদের মেরুদণ্ড নেই। বাস্তুসাপের মতো ঘরের কোনো এক কোনা ধরে পড়ে থাকতে পারলেই খুশি!

দুদিন ধরে জ্বর, বমি, পেটে ব্যথা, তরল পায়খানা। দূর্গের পতন ঘটেছে বুঝতে পারি। বিছানা ছেড়ে উঠার শক্তি পাই না। মরব না অত দ্রুত। আয়ু রেখা অনেক বড়। একবার রক্তবমি হয়েছিল। সুস্থ হয়ে এর কারণ অনুসন্ধান করতে হবে! এ পাড়াটা শিক্ষকদের পাড়া। তারা ব্যাচ করে প্রাইভেট পড়ান। দুইদিন ঘরে আবদ্ধ থেকে জানালাকে সঙ্গি করে ছিলাম। দুইজোড়া কাপল আছে এখানে। টিনএজ প্রেমের মতো অদ্ভুত প্রেম আর নেই। তারা প্রায় সবকিছুতেই ভীরু। হাঁটতে, বসতে, কথা বলতে- সবকিছুতেই ভীতু। এক জোড়া হাঁটতে ভালোবাসে। ছেলেটা মেয়েটার চেয়ে অনেক লম্বা। তারা কথা বলে কম, শুধু হাঁটে। মেঠো পথ দিয়ে। রাস্তায় জমে যাওয়া পানির পাশ দিয়ে। দূর থেকেও ওদের সাইজ দেখে আমি চিনতে পারি। আরেক জোড়া প্রাচীরে উঠে বসে থাকে। বসে বসে গুজুরগুজুর গল্প করতেই থাকে। আমার ধারণা বাকি পৃথিবী অর্ধেক ধ্বসে পড়লেও তারা অনেক পরে টের পাবে! আসলে প্রেম একইরকম প্রকাশে সব ভিন্নতা।

আমি দেখেছি আমাদের ছেলেরা ঠিকমতো মেয়েদের মর্যাদা দিতেই জানে না। কোনো মেয়ে কথা বলতে কাছে আসলে একদল এমন প্রগলভতা করে যেন বুক চিড়ে দেখিয়ে দিবে। অন্যদল এমন ন্যাকামো করে যেন মেয়েদের পাত্তা দেয়ার কিছু নেই। যতটা না রুক্ষ তারচেয়ে বেশি রুক্ষ, আর যতটা না মোলায়েম তার চেয়ে বেশি মোলায়েম।

উপর্যুপরি এসব ধর্ষণের ঘটনার প্রতিবাদে শাহবাগে একটি প্রতিবাদ সভা হয়েছিল আজ। বিছানায় শুয়ে শুয়ে সম্ভবত আরিফ রহমানের একাউন্ট থেকে লাইভ দেখছিলাম। বিশজন লোক মনে হয় হয় নি। এ দেশটি খারাপ হওয়ার পিছনে যত না খারাপ লোকগুলো দায়ি তারচেয়ে অনেক বেশি দায়ি ভাল লোকগুলোর নীরবতা।

আমরা শুধু অপেক্ষা করি আমাদের টার্ন আসার জন্য!

Platform

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Time limit is exhausted. Please reload the CAPTCHA.

Next Post

ডিএমসি শিশু বিভাগে প্রথমবারের মত স্থাপিত হলো পেডিয়াট্রিক কোলনোস্কোপি ও এন্ডোস্কোপি মেশিন

Fri Oct 2 , 2020
প্ল্যাটফর্ম নিউজ, ২ অক্টোবর ২০২০,  শুক্রবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু বিভাগে প্রথমবারের মত পেডিয়াট্রিক কোলনোস্কোপি ও পেডিয়েট্রিক এন্ডোস্কোপি মেশিন স্থাপিত হয়। বাংলাদেশের সকল সরকারি মেডিকেল কলেজের মধ্যে এই প্রথম ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এই মেশিনগুলো স্থাপিত হয়। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজিস্ট ডা. কামাল হোসেন প্ল্যাটফর্মকে দেওয়া তথ্যে […]

Platform of Medical & Dental Society

Platform is a non-profit voluntary group of Bangladeshi doctors, medical and dental students, working to preserve doctors right and help them about career and other sectors by bringing out the positives, prospects & opportunities regarding health sector. It is a voluntary effort to build a positive Bangladesh by improving our health sector and motivating the doctors through positive thinking and doing. Platform started its journey on September 26, 2013.

Organization portfolio:
Click here for details
Platform Logo