প্ল্যাটফর্ম নিউজ, ১১ অক্টোবর ২০২০, রবিবার ডা. শুভদীপ চন্দ
দুইজন মানুষ কাছাকাছি বসে থাকলেও, কাছাকাছি মনের অধিকারী হলেও একজন আরেকজনের মনের কথা শুনতে পায় না। এ যে কত বড় স্বস্তির কথা! নয়তো জগতের সব আস্থা ও বিশ্বাস ভেঙ্গে খানখান হয়ে যেতো।
ঠকানোটা ততক্ষণ মন্দ নয় যতক্ষণে ধরা না পড়ছে। মেয়ে মাকে জড়িয়ে শুয়ে আছে, টুকটাক সংসারের খুঁটিনাটি আলাপ করছে। বিষয়বস্তুঃ নিত্যকার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা। যদিও মেয়ের মন তার ভবিষ্যৎ নিয়েই ব্যস্ত এবং এমন একজনকে নিয়ে যে তার মায়ের কল্পনার দূরতম বিন্দুতেও নেই। আপাত মায়ের স্বস্তি মেয়ে মোবাইল থেকে দূরে। এ অপ্রয়োজনীয় দূরত্বও যে অনেক বেশি নৈকট্য নির্দেশ করে তা আগের প্রজন্ম টের পায় না।ভালোবাসা ও নির্ভরতা হাত ধরাধরি করে হাঁটে। কিন্তু একপাশে থাকে হিংসা ও নিষ্ঠুরতা। এ নিষ্ঠুরতার বশেই তার বন্ধুটি সকল বিধি নিষেধ অমান্য করে রাতের বাসে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছে। সেও না খেয়ে। যেখানে সে ক্ষুধা তৃষ্ণা সহ্য করতে পারে না। নিজেকে ব্যথা দিয়ে অন্যকে জিম্মি বানানোর এ কৌশল পুরনো। সময়ের সাথে প্রয়োগের নতুন নতুন ধরন বের হয়েছে।
আচ্ছা, ছেলেটি কী চায়? কিভাবে বললে বুঝবে ও ও তাকে ভালোবাসে। যদিও সে কখনো স্পষ্ট করে বলে নি। ভয় হয়- পাছে তার (ছেলের) লোভটুকু হারিয়ে যায়। ইচ্ছের তীব্রতাটুকু শুকিয়ে যায়। উন্মাদনার এক উৎস লাগে। সে উৎসের উৎপত্তি ঘাটতি থেকে। আর কে না জানে- নদীর ওপারের ঘাস একটু বেশিই সবুজ! মাকে জড়িয়ে সে এসব ভাবছিলো আর কথা বলছিলো আরও কাছের কিছু নিয়ে। পণ্ডিত জনে বলেন কখনো প্রথম সমস্যার সমাধান হয় না, সমাধান বের হয় দ্বিতীয় তৃতীয় সমস্যার। তাই সমস্যা থেকে মুক্ত হওয়ার এক উপায় নিজেকে আরও জটিল সমস্যায় ফেলে দেওয়া। হুট করে সে সিদ্ধান্তে পৌঁছে গেল তাকে বলে দিবে ‘ভালোবাসি’। ভিন্ন কায়দায়, তার মতো করে।
যদিও সে নিশ্চিত নয় একে ভালোবাসা বলে কিনা। অভিজ্ঞতা নেই। গল্প, কবিতা, উপন্যাসেও এমন পড়ে নি। সে শুধু বলতে পারে তার পাশে বসে শান্তি পায়। যে শান্তি অন্যকোথাও পায় না। সে সারাদিন ভাবে সব কোণ থেকে। তার কথা ভেবে সারাদিনও পার করে দেয়া যায়। এমনকি তার অযাচিত অধিকার ফলানী- সেও তার মন্দ লাগে না। যে ভালোবাসা সামান্য সাক্ষাৎ বা কথা বলাতেই তৃপ্ত- তারচেয়ে মহৎ ভালোবাসা আর হয় না।