গতকাল সোমবার ,২৭ নভেম্বর চলে গেল শহীদ ডা. মিলন দিবস। ৯০-এর স্বৈরাচার বিরোধী গণঅভ্যুত্থানের শ্রেষ্ঠ সন্তান বিএমএ’র তৎকালীন যুগ্ম-সম্পাদক শহীদ ডা. শামসুল আলম খান মিলন -এর ২৭তম শাহাদত বার্ষিকী। বাংলাদেশ মেডিক্যাল এসোসিয়েশন-বিএমএ যথাযোগ্য মর্যাদায় বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে দিবসটি পালন করে।
এ লক্ষ্যে বাংলাদেশ মেডিক্যাল এসোসিয়েশন (বিএমএ) ২৭ নভেম্বর ২০১৭ সোমবার সকাল ০৭:০০ টায় কালোব্যাজ ধারণ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ প্রাঙ্গণে শহীদ ডা. মিলনের সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ, সকাল ০৭:৩০ টায় টিএসসি মোড়ে শহীদ ডা. মিলন স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন ও সকাল ০৮:০০টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজের শহীদ ডা. মিলন চত্তরে এক আলোচনা সভার আয়োজন করে।
বিএমএ সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন এর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জনাব ওবায়দুল কাদের এমপি। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ডা. দিপু মনি এমপি, বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য অধ্যাপক ডা. আ ফ ম রুহুল হক এমপি, শহীদ ডা. শামসুল আলম খান মিলন এর জননী সেলিনা আখতার, বিএমএ’র সাবেক সভাপতি অধ্যাপক ডা. মাহমুদ হাসান, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ এর সভাপতি জনাব শরীফ নুরুল আম্বিয়া, গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক ডা. শাহাদাৎ হোসেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ডা. রোকেয়া সুলতানা ও বিএমএ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ।
প্রধান অতিথির বক্তৃতায় শহীদ ডা. মিলনের স্মৃতি স্মরণ করে জনাব ওবায়দুল কাদের বলেন “তারুণ্য ও ছাত্র রাজনীতির প্রতিকৃতি হলো ডা. মিলন।দল মত নির্বিশেষে সকল পেশার এই সমাবেশ ও তাঁর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন প্রমাণ করে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে ডা. মিলনের আত্মাহুতি দেশবাসী ভুলে নাই।”
শহীদ ডা. মিলনের মহিয়সী জননী সেলিনা আখতার ব্যথাতুর হৃদয়ে মিলনকে স্মরণ করেন ও দেশে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠার প্রতি সকলের প্রতি আহবান জানান।
বিএমএ সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন শহীদ ডা. মিলনের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, তৎকালীণ বিএমএ’র নেতৃত্বে স্বৈরাচার সরকারের চাপিয়ে দেওয়া গণ-বিরোধী স্বাস্থ্য নীতির বিরুদ্ধে ও চিকিৎসকদের ২৩ দফার দাবীতে যে আন্দোলন সংগ্রাম চলছিল সেখানে মিলনের ব্যাপক অবদান ছিল। অসীম সাহসী মিলন দেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে ও চিকিৎসকদের ২৩ দফা দাবী বাস্তবায়নে নিজেকে উৎস্বর্গ করে গেছেন। ৯০ পরবর্তী সরকার মিলনের স্বপ্ন বিএমএ প্রণীত চিকিৎসকদের ২৩ দফা দাবীর প্রতি তেমন কোন নজর না দিলেও বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের সময়ে চিকিৎসকদের প্রায় সকল দাবীই বাস্তবায়িত হয়েছে।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিএমএ মহাসচিব ডা. মোঃ ইহতেশামুল হক চৌধুরী, বিএমএ কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদ সদস্য ডা. এম নজরুল ইসলাম ও ডা. মোহাম্মদ মুশতাক হোসেন, ঢাকা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ। সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন বিএমএ কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদের বর্তমান ও সাবেক নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের চিকিৎসকবৃন্দ, বিএমএ কেন্দ্রীয় কাউন্সিল সদস্যবৃন্দ, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও ইঞ্জিনিয়ার্স ইস্টিটিউশনস বাংলাদেশ এর কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দসহ বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশা নেতৃবন্দ উপস্থিত ছিলেন।
অন্যান্য বিশেষ অতিথি ও চিকিৎসক নেতৃবৃন্দ ৯০ এ দেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে শহীদ ডা. মিলনের অবদানের কথা স্মরণ করে সেই সময়ের স্মৃতিচারণ করেন।
বক্তারা বলেন, দেশে মুক্তিযদ্ধের চেতনার গণতান্ত্রিক সরকার বিদ্যমান থাকলেই শহীদ ডা. মিলনের আত্নদান স্বার্থক হবে।
বিএমএ দপ্তর সম্পাদক ডা. মোহাঃ শেখ শহীদ উল্লাহ, প্রচার ও জনসংযোগ সম্পাদক ডা. মোঃ মাহবুবুর রহমান (বাবু) অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন।
তথ্য ও ছবি ঃ কেন্দ্রীয় বিএমএ