আবারো চিকিৎসকের উপর হামলা, এবার ঢাকা শহরের শের এ বাংলা নগর এলাকার শহীদ সোহরাওরার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসকদের উপর হামলার ঘটনা ঘটেছে।
শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ২৪ সেপ্টেম্বর (মঙ্গলবার) সন্ধ্যায় ইমার্জেন্সিতে ৪ জন বহিরাগত নারী এবং তাদের সাথে কতিপয় দুর্বৃত্ত দ্বারা চিকিৎসকদের উপর অতর্কিত হামলা হয়।
ঘটনার বিবরণীতে জানা যায় এক রোগী গত বৃহস্পতিবার ভর্তি হন ৫ দিনের জ্বর এবং CBC (কমপ্লিট ব্লাড কাউন্ট) রিপোর্ট নিয়ে। হিমোগ্লোবিন কম থাকায় (5 gm/dl) এবং প্লাটিলেট 70000/cmm থাকায় মেডিসিন ইউনিটে ভর্তি করানো হয় সাসপেক্টেড ডেঙ্গু ফিভার হিসেবে। NS1 নেগেটিভ ছিল। উল্লেখ্য, সুস্থ মানুষের হিমোগ্লোবিনের মাত্রা পুরুষের ক্ষেত্রে ১৪-১৮ g/dl ও নারীর ক্ষেত্রে ১২-১৫.৫ g/dl। রোগীকে ওইদিন রাতেই এক ব্যাগ রক্ত দেয়া হয়। পরদিন CBC রিপোর্ট করালে হিমোগ্লোবিন 9.5 gm/dl এবং প্লাটিলেট -117000/cmm হয়। রোগী ইতিমধ্যেই বিভিন্ন কারণে নার্সদের এবং স্টাফদের সাথে কয়েকবার খারাপ ব্যবহার করেন। পরে চিকিৎসকগণ যেয়ে মীমাংসা করেন।
এতদিন চিকিৎসা নেয়ার পর ২৪ সেপ্টেম্বর রাতে রোগী সুস্থ হয়ে গেলে রোগীর কয়েকজন আত্মীয় এসে চিকিৎসককে প্রশ্ন করেন রোগীকে কেন বৃহস্পতিবার রাতে রক্ত দেয়া হয়েছিল? উপস্থিত চিকিৎসক বোঝানোর চেষ্টা করেন হিমোগ্লোবিন অনেক কম ছিল তাই রক্ত না দিলে বিভিন্ন সমস্যা হতে পারতো। এগুলা বোঝানোর পরও রোগীর এক আত্মীয় বলেন রক্ত দেয়ার পর কেন হিমোগ্লোবিন 9.5 হলো। এটা বলেই সে বলে বসে আপনারা ভুল চিকিৎসা দিয়েছেন এবং এসময় রোগীর মেয়ে ভিডিও করতে থাকে।
অতপর মোবাইলটা তার কাছ থেকে কেড়ে নেয়া হলে কর্তব্যরত এক ইন্টার্ন চিকিৎসক এবং মহিলা মেডিকেল স্টাফের উপর দুইজন নারী আক্রমন করে। উপস্থিত মেডিকেল স্টাফরা তাদেরকে এক রুমে আটকিয়ে রাখে।পরে পুলিশে খবর দেওয়া হলে পুলিশের উপস্থিতিতে তাদের সবকিছু বুঝিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়।
এ ঘটনার ২০ মিনিট পর তারা ১০-১২ জন বহিরাগত দুর্বৃত্ত নিয়ে আসে এবং হাসপাতালে ঢুকে নিজেরা নিজেদের জামাকাপড় ছিড়ে ভিডিও করতে থাকে। এক মেডিকেল শিক্ষার্থী তাদের এগুলো করতে বাধা দিলে রোগীর দুর্বৃত্তরা ওই মেডিকেল শিক্ষার্থীকে রাস্তায় ফেলে মারাত্মকভাবে প্রহার করতে থাকে।
সে সময় ইমার্জেন্সিতে উপস্থিত ছিলেন একজন ইএমও, একজন এইচএমও এবং তিনজন নারী ইন্টার্ন চিকিৎসক। ইমার্জেন্সি মেডিকেল অফিসারের রুম ভাঙচুর সহ ইন্টার্ন নারী চিকিৎসকদের ধারালো অস্ত্র দিয়ে আহত করা হয়। এমতাবস্থায় তাদেরকে সাহায্য করার জন্য আসা হাসপাতালের অন্যান্য ইন্টার্নদের উপরেও হামলা করা হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নিকটস্থ থানায় খবর দিলে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়।
বেশ কিছুদিন থেকে ধারাবাহিক ভাবে চিকিৎসকদের উপর হামলার ঘটনা ঘটছে, চিকিৎসা কেন্দ্রগুলোতে চিকিৎসকদের নিরাপত্তার ব্যাবস্থা না থাকায় এরকম ঘটনার পুনরাবৃত্তি হচ্ছে।
তথ্যসূত্র :
শুভবর্ত কর্মকার শুভ
শ সো মে ক
প্ল্যাটফর্ম নিউজ:
ওয়াসিফ হোসেন
ন প্রা মে ক