শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫
যশোরে শান্তি সমাবেশের অন্যতম আয়োজক ছিলেন চিকিৎসকদের নিয়ে কটূক্তি করা ফরিদপুরের সিভিল সার্জন ডা. মাহমুদুল হাসান। তারই পরামর্শ ও ইন্ধনে গত ০৪ আগষ্ট, ২০২৪ তারিখে যশোর মেডিকেল কলেজ প্রাঙ্গণে শান্তিকামী চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীবৃন্দের ব্যানারে জামায়াত-শিবির ও বিএনপির সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে রাষ্ট্রীয় সম্পদ ধ্বংস ও পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে কথিত শান্তি সমাবেশের আয়োজন করা হয়।

শান্তি সমাবেশের বক্তব্যে তিনি বলেছিলেন, “আজ দেশে কোটাবিরোধী আন্দোলনের নামে যে হত্যাযজ্ঞ, ভাঙচুর চালানো হয়েছে এগুলোর আমরা তীব্র নিন্দা জানাই।”
তিনি তার বক্তব্যে বেশ কয়েকবার পতিত স্বৈরাচার শেখ হাসিনার নাম নিয়ে তার প্রশংসা করে বলেন, “আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের কন্যা, আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোটা বিরোধী আন্দোলনের প্রত্যেকটা দাবি মেনে নিয়েছে এবং উনি গতকাল বলেছেন – আমার গণভবনের দরোজা খোলা। তোমরা যে-কোনো বিষয়ে আলোচনা করতে চাইলে গণভবনে আসো।”
কোটা বিরোধী আন্দোলনকারীদের তিনি ঘৃণা করেন এবং চিকিৎসকদের তাদেরকে প্রতিহত করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেছিলেন, “কিন্তু এখন তারা ১ দফা সরকার পতনের আন্দোলন শুরু করেছে। এটা কোনভাবেই আমরা মেনে নিতে পারি না, এর তীব্র নিন্দা জানাই। আমরা ঘৃণা করি – সে শক্তিকে আমরা প্রতিহত করব, আমরা সবাই মিলে প্রতিহত করব। আমি সর্বস্তরের চিকিৎসকবৃন্দকে এই এক দফা দাবির বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি।”
বক্তব্যের শেষে ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ স্লোগান দিয়ে তিনি বক্তব্য শেষ করেছিলেন!
পরবর্তীতে স্বৈরাচারের পতন পরবর্তী সময়ে তিনি ফরিদপুরের সিভিল সার্জন হিসেবে যোগদান করেন।
সবশেষে গতকাল (২১ ফেব্রুয়ারি) ম্যাটসদের এক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে তিনি চিকিৎসকদের নিয়ে কটূক্তি করেন। চিকিৎসকদের নিয়ে কটুক্তি ও বিতর্কিত মন্তব্য ফরিদপুরের সিভিল সার্জনের! শিরোনামে এ বিষয়ে প্ল্যাটফর্মে বিস্তারিত সংবাদ প্রকাশিত হয়।
উল্লেখ্য, মেডিকেল কলেজে ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে যুক্ত ছিলেন ডা. মাহমুদুল হাসান। যশোরে সিভিল সার্জন হিসেবে কর্মরত থাকার আগে গোপালগঞ্জের কাশিয়ানি উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ছিলেন। সেখানে তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ছিল। এরপর তার নিকটাত্মীয় কুড়িগ্রাম-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য বিপ্লব হাসান পলাশ, যশোর-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ ও কেশবপুর আসনের সাবেক সংসদ আজিজুর ইসলামের ডিও লেটার নিয়ে তিনি যশোরের সিভিল সার্জন হয়েছিলেন। একইসঙ্গে তিনি যশোরে থাকাকালীন উল্লেখিত এমপি ও ক্ষমতাসীনদের প্রভাব-প্রতিপত্তি ব্যবহারে করে নানা কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতেন।
প্ল্যাটফর্ম/এমইউএএস