মঙ্গলবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০২৪
পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা ও শিক্ষার পরিবেশ বিদ্যমান না থাকায় রাজধানীর বেসরকারি ডা. সিরাজুল ইসলাম মেডিকেল কলেজের আসন সংখ্যা কমিয়ে দিয়েছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়। গত রবিবার (১৫ ডিসেম্বর) স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের চিকিৎসা শিক্ষা-২ শাখার উপসচিব মাহবুবা বিলকিস স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে বিষয়ে বলা হয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘বর্ণিত প্রতিষ্ঠানে আইন অনুযায়ী পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা ও শিক্ষার পরিবেশ বিদ্যমান না থাকায় ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে আসন সংখ্যা ১০০ থেকে কমিয়ে ৫০ করা হলো।’
এর আগে, গত ৮ ডিসেম্বর স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বেসরকারি মেডিকেল কলেজ ও ডেন্টাল কলেজ, ডেন্টাল ইউনিট, হোমিওপ্যাথিক ও ইউনানী মেডিকেল কলেজ, ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজি (আইএইচটি) ও মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং স্কুল (ম্যাটস) প্রতিষ্ঠা, আসন সংখ্যা বৃদ্ধি, কোর্স অনুমোদন ইত্যাদি সংক্রান্ত কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
উল্লেখ্য যে, গত ১৪ অক্টোবর প্ল্যাটফর্মে ‘বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ ও ডেন্টাল কলেজ আইন, ২০২২’ এর অধিকাংশ শর্তকে বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করে চলছে ১০ মেডিকেল কলেজ শিরোনামের সংবাদে সিরাজুল ইসলাম মেডিকেল কলেজের অব্যবস্থাপনা নিয়ে বিস্তারিত প্রকাশ করা হয়েছিল।
প্রকাশিত সংবাদ অনুযায়ী– “রাজধানীর মালিবাগে অবস্থিত ডা. সিরাজুল ইসলাম প্রতিষ্ঠিত ডা. সিরাজুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ পরিচালনার প্রধান শর্তই লঙ্ঘন করেছে। কলেজের ভবনের ১০ দশমিক ৬৪ কাঠা জমি নুরুল হাসান ফারুক, সামসুল হাসান ও মাহবুব হাসানের নামে এবং ৩৪ কাঠা জমি কলেজের প্রতিষ্ঠাতা ডা. সিরাজুল ইসলামের নামে রয়েছে। “বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ ও ডেন্টাল কলেজ আইন, ২০২২”– অনুযায়ী একটি পূর্ণাঙ্গ মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠার প্রধান শর্ত পূরণে কলেজের নামে আরও ১৫২ শতাংশ জমি নামজারি করতে হবে।
কিন্তু স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের তথ্যমতে, এ শর্ত পূরণ না করেই ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষ থেকে ডা. সিরাজুল ইসলাম মেডিকেল কলেজে ১০০ শিক্ষার্থী ভর্তির অনুমোদন পায়। এছাড়াও “বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ ও ডেন্টাল কলেজ আইন, ২০২২” অনুযায়ী হাসপাতালে প্রায় ৩০ হাজার বর্গফুট ফ্লোর স্পেস ঘাটতি রয়েছে।
বিভিন্ন অভিযোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ পরিদর্শক দপ্তর গত বছরের ৬ জুন সুনির্দিষ্টভাবে ১৩টি বিষয়ে জানতে চেয়ে ডা. সিরাজুল ইসলাম মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. এমএ আজিজের কাছে একটি চিঠি দেয়। কিন্তু মেডিকেল কর্তৃপক্ষ সন্তোষজনক জবাব দিতে পারেনি। এর আগে ২০২০ সালের ২৫ আগস্ট স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় গঠিত টাস্কফোর্স এবং র্যাব অভিযান চালিয়ে সিরাজুল ইসলাম মেডিকেল কলেজে হাসপাতালের ল্যাব থেকে মেয়াদোত্তীর্ণ রি-এজেন্ট এবং চারটি অপারেশন থিয়েটার থেকে বিপুল পরিমাণ সার্জিক্যাল সামগ্রী উদ্ধার করেছিল। নানা অনিয়মের অভিযোগে হাসপাতালটিকে তখন ৩০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছিল। ওই সময় এ হাসপাতালে যত মাইক্রোবায়োলজি রিপোর্ট তৈরি হয়েছে, সবই ভুয়া রিপোর্ট বলেও দাবি করেছিল র্যাব।”
প্ল্যাটফর্ম প্রতিবেদক