প্ল্যাটফর্ম নিউজ, ২০ আগস্ট ২০২১, শুক্রবার
ডা. মোহাম্মদ নেয়ামত হোসেন রিপন
সহকারী অধ্যাপক (নিওনেটোলজী)
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ, ফরিদপুর।
#Early_Childhood_Development:
আমাদের বাচ্চাদের ব্রেইনের ৯৫% গঠন হয় প্রথম ৫ বছরে। বাকি ৫% গঠন হয় পরের ৩ বছরে। তাই প্রথম ৮ বছর আপনার সন্তানের জন্য – সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময়। এর ভিতর ৫ বছর বেশী গুরুত্বপূর্ণ! ফলে এই সময়ে সবচেয়ে careful থাকা উচিৎ! এই গঠন বলতে বুঝায় – ব্রেইনের connection তৈরী হওয়া। যার যত connection তৈরী হবে, সে তত ব্রিলিয়ান্ট হবে! এই connection তৈরীতে রঙিন খেলনা, পুষ্টিকর খাবার, বাচ্চার সাথে খেলা করা, গল্প বলা – এমনই অনেক কিছু নির্ভরশীল!
কিন্তু আমাদের দেশে বাচ্চা কথা বলা শেখার আগেই সবাই লাঠি নিয়ে বসে ঠিকমত পড়ালেখা শিখছে তো?
খাবারঃ
একসময় এদেশে মায়েদের বাচ্চার খাবারই ছিল – বার্লি আর সাগু! তখন বার্লি Face বলে, একটা অপুষ্টির লক্ষ্মণ দেখা যেত। বাচ্চা হতো মোটাতাজা, মা মনে করতো – বেশ ভাল স্বাস্থ্য হয়েছে! আজ সেই জায়গাটা নিয়েছে, সুজি! সুজি হয় চালের গুড়া, নাহলে গমের। আবার এর সাথে কোন না কোন দুধ মিশ্রিত করে, সাথে থাকে চিনি। অথচ এর সবগুলোই অপুষ্টির জন্য যথেষ্ট। কারণ গরীব হলে, গরুর দুধ মিশ্রিত করে – আর টাকা থাকলে infant formula অথচ দুটোই বাচ্চার জন্য ক্ষতিকারক! Infant formula তে কোন কিছু মিশানো নিষেধ। আবার কোন চিকিৎসক লিখে দিলে – শাস্তিযোগ্য অপরাধ। আমরা জানি সবসময়ই সুষম খাবার প্রয়োজন। সেক্ষেত্রে খিচুড়ি হলো, বাচ্চার সুষম খাবার। অথচ মা’দের বুঝানো কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে। সাথে যোগ হয়েছে – দাদা/দাদি, নানা/নানি। মুরুব্বিদের ধারণা – তারাও তো বাচ্চা মানুষ করেছে, কখনো তো সমস্যা হয় নাই! এর উত্তরে অনেক সময় বলি, দেশ যে ব্রিলিয়ান্ট জনসংখ্যার সংকটে ভুগছে, তা আপনাদের দান! জাপানে প্রাইমারি স্কুলে কোন পরীক্ষা নেয় না! ওরা এই early childhood development এর উপর গুরুত্ব দিয়ে থাকে। আর তাই সেরা ব্রিলিয়ান্ট ঐদেশে তৈরী হয়। আমাদের মত লাঠি হাতে নিয়ে শিক্ষা দেয় না।
কেন_খিচুড়ি_সেরা?
আমরা সবাই বা অনেকেই জানি essential amino acid বলে, একটা শব্দ আছে। যা শরীর তৈরী করতে পারে না। ফলে বাহিরের খাবার খেয়ে সেই অভাব পূরণ করতে হয়। একমাত্র খিচুড়িতেই সবগুলো পাওয়া সম্ভব (চালে আটটি আর বাকিগুলো ডালে থাকে)। ফলে চাল-ডাল একসাথে থাকলেই শুধু সবগুলো essential amino acid পাওয়া সম্ভব! এছাড়াও ডিমে এইসবগুলো essential amino acid থাকে।
ফলে_বাচ্চার_খাবার_হওয়া_উচিৎঃ
১) মায়ের বুকের দুধ ২ বছর পর্যন্ত, এর বাহিরে আর কোন দুধ নয়।
২) খিচুড়ি (চাল+ডাল+সয়াবিন/অলিভ ওয়েল+সবজি)
৩) ডিম
৪) মা যখন যা খাবেন – সেখান থেকে মাছ/মাংস/সবজি বাচ্চাকে দিবেন। (ফ্রেশ হতে হবে)
৫) সারাদিনে একবার ফল খাবে। #আঙ্গুর বাদে। বাচ্চা সকাল/দুপুর/রাত, প্রচুর ফল খায় – এটাও ভাল লক্ষণ নয়। কারণ পেট ভরা থাকায়, অন্য প্রয়োজনীয় খাবার খাবে না।
তাই সবাই Early Childhood Development এর উপর সময় দিন। সঠিক খাবার নিশ্চিত করুন! সুজি/গরু/ছাগলের (২ বছর বয়স পর্যন্ত) দুধ খাওয়ানো বন্ধ করুন।
বি.দ্র. ছাগলের দুধে অতিরিক্ত অসুবিধা, এক ধরনের রক্তশূন্যতা রোগ হয়।