প্ল্যাটফর্ম নিউজ, ২৫ এপ্রিল, ২০২০
শেখ হাসিনা ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অফ বার্ন এন্ড প্লাস্টিক সার্জারি কোভিড চিকিৎসা কেন্দ্র হিসেবে ঘোষিত হয়েছে। তবে কোভিড সেন্টার নিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বারবার নোটিশ পরিবর্তন করছে। এ নিয়ে জনমনে বিভিন্ন প্রশ্নের উদয় হয়েছে। এসব কিছু নিয়েই কথা বললেন উক্ত ইন্সটিটিউটের সহকারী অধ্যাপক ডা. শারমিন আক্তার সুমি।
তিনি বলেন, “শেখ হাসিনা ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অফ বার্ন এন্ড প্লাস্টিক সার্জারি নিঃসন্দেহে অনেক পরিকল্পনা করে নির্মাণ করা হয়েছে। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে এই ইন্সটিটিউট এখনো সেনাবাহিনীর অধীনে আছে। অনেক কাজ অসমাপ্ত অবস্থায়, যা হস্তান্তর ও হয়নি। শুধুমাত্র কয়েকজন সৎ এবং নিবেদিতপ্রাণ প্লাস্টিকসার্জন, যেমনঃ ডা. সামন্তালাল সেন, ডা. প্রফেসর আবুল কালামসহ আরও কয়েকজন কর্মপাগল মানুষের তত্বাবধানে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর এবং পোড়া রোগীদের আকাঙ্ক্ষা পূরণে, কোনো রকমে জোড়াতালি দিয়ে এই ইন্সটিটিউট চলছে। ডাক্তার-নার্সের ভয়াবহ সংকট রয়েছে।
পাশাপাশি তিনি আরও কিছু সমস্যার কথা তুলে ধরেনঃ
১. ৩য়, ৪র্থ শ্রেণীর লোকবল নিয়ে সবচেয়ে বড় সমস্যা। প্রয়োজন এর তুলনায় মাত্র এক-পঞ্চমাংশ নিয়ে কাজ চলছে। কিন্তু এরা কেউ সরকারি চাকুরীপ্রাপ্ত না। এরা ডেইলি বেসিসে কাজ করে। যদি এই সেন্টার কোভিড সেন্টার হয়, তাহলে এরা কয়জন আসবে তা আরো অনিশ্চিত।
২. এই সেন্টার এ অত্যাধুনিক কিচেনের ব্যবস্থা আছে, কিন্তু তা এখনো হস্তান্তর হয় নি। এখন পর্যন্ত রোগীদের খাবার রান্না বা নাস্তার জন্য ন্যূনতম ক্যাফেটারিয়ার/এমনকি পানির ব্যবস্থা ও নেই।
৩. এখনো লন্ড্রির হস্তান্তর হয়নি। কোভিড পেশেন্ট এর বেডশিট থেকে শুরু করে কোন কাপড় ক্লিনিং এর ব্যবস্থা এখানে নেই।
৪. অসংখ্য সেনসিটিভ ও মূল্যবান মেশিনারিজ এখনো হস্তান্তর হয় নি, যেগুলো ভেন্ডর এর লোকজন তত্ত্বাবধান করছে। এগুলোর নিরাপত্তা মাথায় রাখতে হবে।
৫. লকডাউন মানেই কিন্তু পুড়ে যাওয়া থেমে নেই। এই রোগীদের চিকিৎসা শেষ না করে বাড়ি কিংবা অন্য কোন হাসপাতালে পাঠানোও সম্ভব না। একজন পোড়া রোগী মানেই সিরিজের পর সিরিজ সার্জারি। এখনো প্রায় ৩০০ রোগী ভর্তি আছে এই ইনস্টিটিউটে। প্রতিদিনই ৮/১০টা সার্জারি ও প্রসিডিওর করতে হচ্ছে এই লকডাউন এর মধ্যেই। আর এ সময়ে যদি আবার বড় কোন বার্ন এক্সিডেন্ট যদি ঘটে, তখন সেই রোগীদেরই বা কি হবে!
অন্যদিকে প্লাস্টিক সার্জারির ২য় বড় সেন্টার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এর বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘উক্ত ভবন ইতিমধ্যেই খালি করে দেয়া হয়েছে। পাঁচ তলা ঐ হাসপাতাল ভবনটিও অনেক আধুনিক। ওখানেও আছে সেন্ট্রাল অক্সিজেন লাইন। সি.এম.এস.ডি থেকে ভেন্টিলেটর আনার ব্যবস্থা করছেন ঢাকা মেডিকেল এর পরিচালক। সেন্ট্রাল এসিতে কোভিড সংক্রমণের যে ভয় ও সমস্যা আছে সেটাও ওখানে নেই। আর এটি ঢাকা মেডিকেল এর নত্ন ইউনিট-২ (মেডিসিন ভবন) এর কাছে।
প্রয়োজনীয় বিশেষজ্ঞ লোকবল সহজেই ব্যবহার করা সম্ভব হবে, যেটা কোভিড ১৯ এর সঠিক চিকিৎসা নিশ্চিত এর জন্য খুবই কাজে দেবে। এই ভবনটির পেছন দিকে আরো একটা গেট আছে যেটি খুলে দেয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে, যা কোভিড রোগীদের সরাসরি ইমারজেন্সী দিয়ে ঢোকার যে সমস্যা ছিল, সেটাকেও প্রতিহত করবে।’
স্টাফ রিপোর্টার/ শরিফ শাহরিয়ার