প্ল্যাটফর্ম নিউজ, ১৭ জুন ২০২০, বুধবার
সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার চারখাইয়ে এক রোগীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে ডা. জোবায়ের আহমেদকে। তবে এই ঘটনা নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে ধোঁয়াশা। পাওয়া যাচ্ছে ঘটনার সাংঘর্ষিক বর্ণনা।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রমতে, বিগত সোমবার ১৬ জুন এক তরুণী জোবায়ের মেডিকেয়ার সেন্টারে চিকিৎসা নিতে গেলে ডা. জোবায়ের চেকআপের নামে তার সঙ্গে অশালীন আচরণ করেন। একপর্যায়ে শ্লীলতাহানীর চেষ্টা করলে ঐ তরুণী চিৎকার শুরু করেন ও বাইরে বেরিয়ে এসে তার মায়ের কাছে বিষয়টি খুলে বলেন। পরে এলাকাবাসী অভিযুক্ত চিকিৎসককে উক্ত ক্লিনিকে অবরুদ্ধ করে রাখে। রাতে চারখাই ফাঁড়ি পুলিশ ও বিয়ানীবাজার থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। জনতার দাবিতে তারা তাকে আটক করে জেলহাজতে পাঠিয়েছে। পরবর্তীতে বিয়ানীবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি, তদন্ত) জাহিদুল হক বলেন, “যৌন হয়রানি মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে ডা. জোবায়েরকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। আদালত তাকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।”
কিন্তু ঘটনার ভিন্ন বর্ণনা পাওয়া যায় চিকিৎসকের পক্ষ থেকে। ডা. জোবায়েরের বোন আনজুমা সীমা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উল্লেখ করেন,
‘‘আমার ভাই কোনোদিন অন্যায়ের সঙ্গে আপোষ করেন নি। আজও করবেন না। একটা মহল সবসময় ওনাকে সেখানে থাকতে দিতে চায় না। উনাকে অপশন দেওয়া হয়েছে, সিলেট ছেড়ে গেলে মামলা দেবে না। আমার ভাই লড়তে জানে। তিনি মামলা লড়বেন এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আইনের মাধ্যমেই তিনি নির্দোষ প্রমাণিত হবেন।’’
স্থানীয় একটি সূত্র জানায়, চারখাই এলাকায় ডা. জোবায়ের আহমেদের সঙ্গে কিছু লোকের বিবাদ ছিল। ২০১৮ সালে স্থানীয়দের দাবির মুখে তিনি চারখাই ছাড়তে বাধ্য হয়েছিলেন। কয়েক মাস পর পরিস্থিতি শান্ত হলে তিনি ফিরে এসে আবার রোগী দেখা শুরু করেন। এবার তার বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির মামলা দায়ের করা হয়।
অবশেষে গত ১৫ জুন সিলেট এম-এ-জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ এর ২০০৩-০৪ সেশনের শিক্ষার্থী ডা. জোবায়ের আহমেদ এক ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে দাবি করেন যে পুরো ঘটনাই তার বিরুদ্ধে সাজানো এক ষড়যন্ত্র। আত্মপক্ষ সমর্থন করে তিনি ঘটনার বিবরণ দেন। তার ভাষ্যে,
“আমি আক্রান্ত। আমি এবং আমার মেডিকেয়ার সেন্টার আক্রান্ত। আন্দোলনের নেতৃত্বে সেই মইনুল, যে আগে উচ্ছেদ করছে নেতৃত্ব দিয়েছে।
শত শত লোক জড়ো করে হামলা করছে। আমি আহত হয়েছি। বিয়ানীবাজার থানা পুলিশ আন্তরিক ভাবে হেল্প করেছেন। আমি এখন থানায়।অভিযোগ এনেছে রোগীর শ্লীলতাহানির চেষ্টা। রোগী এসেছে ব্রেস্ট এর প্রব্লেম নিয়ে। আমি আমার এটেনডেন্ট এর উপস্থিতিতে তা এক্সামিন করেছিলাম। সেভাবে চিকিৎসা দিয়েছি। রোগী চলে গেলো। চেম্বারে তারা হাসিখুশি ভাবে সব কথা বললো।
আমি যথারীতি অন্য রোগী দেখায় মনোযোগ দেই।
তিন ঘন্টা পর শত শত লোক নিয়ে ক্লিনিক ঘেরাও করে। মিছিল দেয় আমাকে চারখাই ছাড়তে হবে। এবার আর রক্ষা নেই।আমি এসব আগেও মোকাবিলা করছি। ইনশাআল্লাহ সত্য চিরকাল জয়ী হয়।”