যারা এবার বিসিএস পরীক্ষায় পাশ করেছেন তাদের আন্তরিক অভিনন্দন জানাচ্ছি । আশা করছি, শীঘ্রই আপনারা সরকারী চাকুরিতে যোগদান করবেন । আপনাদের হয়ত কাজে লাগতে পারে, তাই আপনাদের উদ্দেশে কিছু কথা বলছি–
১) আপনার যে ফলাফল বের হয়েছে, সেটার নাম জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপন বা গেজেট । একে সারা জীবন আগলে রাখবেন । প্রতি বছর কয়েকবার তো এর দরকার হবেই, ৩০/৩৩ বছর পর যখন সরকারী চাকুরী থেকে অবসর নিবেন তখনও এটা কাজে লাগবে ।
২) বিভাগীয় পরিচালকের অফিস থেকে যে আদেশের মাধ্যমে আপনাকে সরকারী চাকুরিতে যোগদান করতে বলা হবে, সেটা হল আপনার প্রথম পদায়ন বা নিয়োগাদেশ । গেজেটের মত এটাও আপনার বার বার কাজে লাগবে ।
৩) নিয়োগাদেশ বা প্রথম পদায়নের আদেশ পাবার পর আপনার সর্বপ্রথম কাজ হল, আপনাকে যে জেলায় পোস্টিং দেয়া হবে, সেই জেলার সিভিল সার্জন এবং সংশ্লিষ্ট উপজেলার স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ইউএইচএণ্ডএফপিও)-র সাথে টেলিফোনে কথা বলা । আপনি নিজে চেষ্টা করে তাদের ফোন নম্বর সংগ্রহ করে নিন । অথবা, আপনি অনলাইনে গিয়ে সংশ্লিষ্ট উপজেলার ইমারজেন্সী মেডিক্যাল অফিসারের ফোন নম্বর সংগ্রহ করুন এবং তাঁর কাছ থেকে সিভিল সার্জন এবং ইউএইচ এণ্ডএফপিও-র নম্বর জেনে নিন । এটাও সম্ভব না-হলে আপনার পরিচিত ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিকে বলুন সেই নম্বর দুটি সংগ্রহ করে দিতে ।
৪) আপনি সিভিল সার্জন এবং ইউএইচএণ্ডএফপিও-কে বলুন, “স্যার আমি (আপনার নাম বলুন), আপনার …ঊপজেলায় আমার নতুন পোস্টিং হয়েছে । … (এত) তারিখ আমি যোগদান করতে চাই । আমার প্রতি আপনার কোন নির্দেশনা আছে কি ?”
৫) কাঙ্ক্ষিত দিনটিতে ভাল পোশাক পরে, পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন হয়ে যোগদান করতে যাবেন ।
নিচে উল্লেখিত কাগজগুলোর দশ কপি করে ফটোকপি সাথে নিয়ে যাবেন
ক) আপনার জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি
খ) এমবিবিএস পাশের সার্টিফিকেট
গ) ইন্টার্নশিপের সনদ
ঘ) বিএমডিসি হতে প্রাপ্ত রেজিস্ট্রেশন
ঙ) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপন বা গেজেট
চ) বিভাগীয় পরিচালক কর্তৃক পদায়ন/নিয়োগাদেশ
এ কাগজগুলো সত্যায়িত হতে হবে এমন কোন কথা নেই । আমি যে উপজেলায় কাজ করি সেখানে এ কাগজগুলোর ফটোকপি হলেই চলে, সত্যায়িত করার দরকার হয় না ।
৬) যোগদানের জন্য কাউকে এক পয়সা ঘুষ দেবার প্রয়োজন নেই ।
৭) যোগদান সম্পন্ন হবার পর ইচ্ছে করলে অফিসের সবাইকে মিষ্টি খাওয়াতে পারেন । প্রথম বেতন পাওয়ার পরও এর কাজা আদায় করা যেতে পারে । আপনার খুশী কীভাবে আপনি অন্যের সাথে ভাগভাগি করবেন–সে আপনার ইচ্ছা ।
৮) যোগদানের পর সংশ্লিষ্ট অফিসের পরিসংখ্যানবিদ-কে বলুন, এইচআরআইএস-এ আপনার নাম অন্তর্ভুক্ত করতে ।
৯) এখন থেকে আপনি একজন সরকারী কর্মকর্তা হয়ে গেলেন ।
মানুষকে সার্ভিস দেবার জন্য, দেশকে সেবা করার জন্য সরকারী চাকুরী একটি উত্তম উপায় । এখানে আপনি সম্মান পাবেন, সরকার হতে প্রাপ্ত বেতনের পাশাপাশি বৈধ উপায়ে কিছু রোজগার করতে পারবেন । আপনি উচ্চ শিক্ষার জন্য যোগ্য হলে সরকার আপনাকে বেতন সহ পড়ার সুযোগ দিবে ।
তাই, নতুন উদ্দ্যমে, নব প্রেরণায় উজ্জীবিত হয়ে দেশের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করুন । সঠিক সময়ে অফিসে যাবেন, পুরো সময় নিষ্ঠার সাথে ঠাণ্ডা মাথায় কাজ করবেন, কাজে ফাঁকি দিবেন না, অফিস সময় শেষ হবার পর বাসায় ফিরবেন । কাজে ফাঁকি দিলে অথবা অননুমোদিত ভাবে কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকলে আপনার বেতনের টাকা আপনার জন্য হালাল হবে না ।
১০) যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নীলক্ষেত থেকে ফিরোজ মিয়ার লেখা সবুজ রঙের ‘চাকুরীর বিধানাবলী’ এবং হলুদ রঙের ‘বাংলাদেশ সার্ভিস রুলস’ বই দুটি কিনে পড়া শুরু করে দিন ।
হতাশামুক্ত থাকুন । যতটুকু আয় হয়, তাতেই সন্তুষ্ট থাকুন । আপনার জীবন সুন্দর হবেই ।
….
পরামর্শ প্রদানেঃ
Dr.Zainal Abedin Tito
বিসিএস (স্বাস্থ্য)
Onek dhonnobad apnake. Ami 35 BCS e koyekdin age gazetted hoyechi.
Iffat Mahmud Iffa
Sumaya Siraj…pore dekho
Nafiz Masud Leon Himel
Thanks Masudur Rahman Badhan