বিজ্ঞান যেভাবে প্রতিনিয়ত এগিয়ে যাচ্ছে সেদিকে সরকারি মেডিকেলগুলো এখনও অনেক সুবিধা থেকে বঞ্চিত আছে। সদ্য জানতে পারলাম, বাংলাদেশের অন্যতম সরকারি মেডিকেল স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের মর্গে লাশ রাখার ফ্রিজটি প্রায় ছয় মাসের ওপর নষ্ট হয়ে পরে আছে। মর্গ সহকারি জানান, ফ্রিজটি নষ্ট হয়ে যাওয়াতে তাদের অনেক অসুবিধার মধ্যে পড়তে হচ্ছে। আগে লাশ এনে ফ্রিজে রেখে দেওয়া যেত, কিন্তু এখন বেশিক্ষন রেখে দেওয়া যায় না দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পরে। স্বজনদের বরফ জোগার করতে হয় লাশ রাখার জন্য। মাঝে মাঝে একাধিক লাশ রাখার জন্য অনেক বরফ লাগে তখন তাকে সারা রাত থাকতে হয়। তিনি আরো বলেন, ফ্রিজটি নষ্ট হওয়ার পর থেকে অন্তত ছয় থেকে সাতটি আবেদনপত্র দিয়েছি ঊর্ধ্বতন স্যারদের কাছে। পরে তারা সংশ্লিষ্ট মেরামতকারী প্রতিষ্ঠানের কাছে দিয়েছেন। মেরামতকারী প্রতিষ্ঠানটি আজ নয়, কাল করে করে সময় পার করছে। অথচ প্রতিদিনই একাধিক মরদেহ সংরক্ষণ করে রাখতে হয় মর্গের মধ্যে।
সিদ্দিকুর রহমান বরিশাল থেকে এসে তার ভাইয়ের মৃতদেহ রাখতে অনেক সমস্যার মধ্যে পরেন। তিনি খুব হতাশ হয়ে নিজের মনের কথা ব্যক্ত করলেন। সংশ্লিষ্ট থানার পুলিশের পেছন পেছন তিনিও মরদেহের সঙ্গে এসেছেন মিটফোর্ড হাসপাতাল মর্গে। মর্গের ডোমরা বললেন, সন্ধ্যা হয়ে গেছে। আজ আর লাশ কাটা যাবে না। আগামীকাল লাশ কাটার পর ময়না তদন্ত হবে। এই বিরতির সময়ে লাশ যাতে না পচে, তার জন্য বরফের মধ্যে রাখতে হবে। এমন অবস্থায় সিদ্দিকুর রহমান তার মৃত ভাইয়ের মরদেহ ভালো রাখতে বরফের জন্য এদিক-ওদিক ছোটাছুটি করতে থাকেন। কোথায় পাওয়া যাবে বরফ! সিদ্দিকুর জানান, মরদেহের ময়না তদন্ত শেষ হলে বরিশালের পিরোজপুরে নিয়ে দাফন করা হবে। এতে অনেক সময় লেগে যাবে। ফলে মরদেহ বরফে রাখা ছাড়া উপায় নেই। বরফ কোথায় পাওয়া যাবে- বিভিন্নজনের কাছে এমন প্রশ্ন করতে থাকেন তিনি। এক সময় মর্গ থেকে বাইরে বেরিয়ে যান বরফের সন্ধানে।
বুড়িগঙ্গা নদীর উপর দিয়ে যাওয়া বাবুবাজার ব্রিজ সংলগ্ন স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ (মিটফোর্ড) হাসপাতালটির ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. প্রণব কুমার চক্রবর্তী বলেন- মেরামতকারী প্রতিষ্ঠানটি বলেছে ফ্রিজটি প্রায় নষ্ট হয়ে গেছে। এখন এটি মেরামত করতে গেলে ব্যয় অনেক বেশি হবে। ফলে, বিষয়টি ঊর্ধ্বতনরা বিবেচনা করছেন।
তবে মর্গের জন্য শিগগিরই ফ্রিজ প্রয়োজন বলে জানান তিনি। ১৮ জুন মর্গে দিয়ে দেখা যায়, পুরুষ আর একজন মহিলার লাশ অর্ধেক কাটা অবস্থায় পরে আছে। এদিকে, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাসপাতালটির একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, হাসপাতালটির পরিচালক ব্রিগ্রেডিয়ার জেনারেল জাকির হাসান ২০১৪ সালের ৭ ডিসেম্বর মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ দিলীপ কুমার ধরের কাছে মরদেহ রাখার ফ্রিজটি মেরামত ব্যয় সাশ্রয়ী হবে না বলে একটি চিঠি দিয়েছিলেন। এরপর থেকে এ বিষয়ে আর কোনো অগ্রগতি নেই। চিঠি পর্যন্তই বিষয়টি যেন ফ্রিজ হয়ে রয়েছে!
এমন আরো হাজারো সমস্যায় জর্জরিত হয়ে আছে এস এস এম সি.. যেখানে প্রশাসনের ভুমিকা প্রায় নিরব বললেই চলে….. :-/
সরকার পিছিয়ে থাকলে সরকারি মেডিক্যাল কেনো , পুরো দেশ পিছিয়ে যাবে ! আমাদের সরকারই পিছিয়ে আছে ভাই ! !