প্ল্যাটফর্ম নিউজ, ২৯ জুন ২০২০, সোমবার
সরকারি হাসপাতালের বহিঃবিভাগের টিকিট বা পেপার স্লিপ এর সাথে কম বেশি সকলেই পরিচিত। প্রায় সবকয়টি সরকারি হাসপাতালে বহিঃবিভাগের টিকিটের আয়তন প্রায় একই রকম। বহিঃবিভাগে রোগীর টিকিট বা প্রেসক্রিপশন, যা দিয়ে দেশের সরকারি হাসপাতালগুলোতে ১০ টাকার বিনিময়ে চিকিৎসা পেয়ে থাকেন রোগীরা। এই ১০ টাকার টিকিটটিই পরামর্শপত্র (প্রেসক্রিপশন) হিসেবে ব্যবহৃত হয়। কিন্তু এটি আকারে এত ছোট, এতে সব তথ্য লিখতে হিমশিম খেতে হয় চিকিৎসকদের।
একটি আদর্শ পরামর্শপত্র বা প্রেসক্রিপশনে রোগীর নাম, বয়স, তারিখ এবং ক্ষেত্র বিশেষে শিশুদের ওজনও লিখতে হয়, বাম দিকে রোগের বিবরণ, রোগীর লক্ষণগুলো লিখতে হয় আর ডান দিকে আরএক্স চিহ্ন দিয়ে ওষুধের নাম এবং নিচে চিকিৎসকে স্বাক্ষর দিতে হয়। আবার ওষুধ লেখার সময় ট্যাবলেট, ক্যাপসুল বা ইনজেকশন কত মিলি বা ডোজ বা কতটুকু খাওয়ার আগে না পরে তা লিখতে হয়। সেই সাথে ওষুধের নামটা অবশ্যই ইংরেজিতে লিখতে হয়, আবার প্রেসক্রিপশনে রোগীর সব তথ্যের পাশাপাশি ডাক্তারেরও সব তথ্য লেখা লাগে। কিন্তু এ প্রেসক্রিপশনে রোগীর তথ্য লেখা হলে ডাক্তার এর সব তথ্য লেখা যায় না, আবার ডাক্তার এর তথ্য লিখলে রোগীর তথ্য অপর্যাপ্ত থেকে যায়। এই পরামর্শপত্র অন্য কোনও চিকিৎসক দেখলেও কিছুই বুঝতে পারবেন না।
নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. রায়হানুল আরেফিন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ ব্যাপারে লিখেছেন,
“এই টিকিটের(পেপার স্লিপ) কোথায় ক্লিনিক্যাল নোটস লিখবেন, কোথায় ইনভেস্টিগেশনস ট্রিটমেন্ট লিখবেন, পরামর্শ লিখবেন, অন্য বিভাগ বা হাসপাতালে রেফার করবেন বা ট্রিটমেন্টের ফলোআপ দিবেন। যদি শুধু টিসি- বিসি- পিসি লেখার জন্যই এ টিকিট দেওয়া হয়, তাহলে বহিঃবিভাগে কোন ডাক্তারের প্রয়োজন আছে বলে তো মনে হয়না। একটা ফার্মেসীতে ডিপ্লোমা করা কাউকে বা সিএইচসিপি টাইপ কাউকে বসিয়ে দিলে বরং ভালো। ডাক্তারদেরকে দেওয়া বেতনভাতার অনেক টাকা সাশ্রয় হয়ে যাবে। বিএসএমএমইউ বা কোন প্রাইভেট হাসপাতালের টিকিটের মত সাইজ ও থিকনেসের কাগজকে প্রেসক্রিপশন টিকিট হিসাবে নির্ধারণ করা কি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের জন্য খুব কঠিন কিছু?”
এছাড়াও চিকিৎসকদের মতে,
“এই টিকিট ১৯৭২ সালে চালু হয়। তখন মানুষের রোগ কম হতো, কিন্তু এখন সময় বদলেছে অথচ টিকিটের সাইজ একই আছে। দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নয়নের স্বার্থে এই টিকিটের আকার বড় করা জরুরি।”