প্ল্যাটফর্ম নিউজ, ২৭ অক্টোবর ২০২০, মঙ্গলবার
গত শুক্রবার (২৩ অক্টোবর) চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলায়, যাত্রা শুরু করেছে কম খরচে রোগী পরিবহন সেবা ‘আমার অ্যাম্বুলেন্স’। উপজেলায় বসবাসরত প্রায় পাঁচ লাখ মানুষের উদ্দেশ্যে চালু হওয়া সেবাটির উদ্যোক্তা হলেন চিকিৎসক মোরশেদ আলি। সেবাটির মূল ব্যবহারকারী হবেন দরিদ্র্যরোগীরা, যাদের প্রাইভেট ক্লিনিক থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকায় অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করার মত আর্থিক সামর্থ্য নেই। সাতকানিয়ায় ০১৮৭২৯৯২২৭৭ বা ০১৩০৪৪০০৪৯৯ নম্বরে ফোন করলেই রোগীরা ‘আমার অ্যাম্বুলেন্স’ সেবাটি গ্রহণ করতে পারবেন।
‘আমার অ্যাম্বুলেন্স’ সেবাটির ব্যাপারে বর্তমানে চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক হিসেবে কর্মরত ডা. মোরশেদ আলী বলেন, উপজেলায় বসিন্দারা উন্নত চিকিৎসার জন্য অনেক সময় চট্টগ্রামে যেতে হয়। প্রত্যন্ত অঞ্চল এবং আর্থিক অবস্থা যেখানে প্রধান বাঁধা হয়ে দাঁড়ায়। তাছাড়া সরকারি হাসপাতাল গুলোতে অ্যাম্বুলেন্স সংখ্যা অপ্রতুল এবং থাকলেও বেশিরভাগ সময় থাকে নষ্ট। তাই রোগীদের অনেক দূর্ভোগ পোহাতে হয় এবং অনেক ক্ষেত্রে জীবনহানি ঘটে। এসব দূর্ভোগের কথা চিন্তা করেই সেবাটির কথা মাথায় আসে। তিনি তার ফেসবুক একাউন্টের মাধ্যমে অনুদানের আহবান করেন। এতে সাতকানিয়ার মানুষও সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়, ফলে এই ধারণাটি বাস্তবরূপ পায়। তিনি আরও বলেন যে, যারাই এই সেবাটি গ্রহণ করবেন তাদের কাছ থেকে শুধুমাত্র জ্বালানি এবং ড্রাইভারের খরচ নেয়া হবে। অবস্থা বিশেষে অতিদরিদ্র রোগীর জন্য বিনামূল্যে সেবাটি প্রদান করা হবে। এছাড়াও চট্টগ্রামে চিকিৎসাধীন অবস্থায় কোনো রোগীর মৃত্যু হলে, বিনা খরচে সাতকানিয়ায় গ্রামের বাড়িতে পৌঁছে দেবে ‘আমার অ্যাম্বুলেন্স।’
সাতকানিয়া উপজেলার পুরাগড় ইউনিয়নের বাসিন্দা ডা. মোরশেদ আলি ২০০৫ সালে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাস করেন এবং ২৮ তম বিসিএস শেষে সরকারি হাসপাতালে যোগ দেন। এরপর, ২০১৬ সালে তিনি এফসিপিএস পাশ করেন। মহামারির শুরু থেকেই তিনি করোনাকালীন যোদ্ধা হিসেবে কাজ করেছেন। তিনি সাতকানিয়াসহ, কক্সবাজারের কুতুবদিয়া, বান্দরবানের নাইক্ষ্মংছড়ি এবং খাগড়াছড়ির রামগড় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অক্সিজেন সরবরাহ লাইন স্থাপনসহ আধুনিক সুযোগ-সুবিধা গড়ে তোলেন।
দানের টাকায় চালু হওয়া সেবাটি সর্বপ্রথম গ্রহণ করেছেন সাতকানিয়ার ছিটুয়াপাড়ার বাসিন্দা সারোয়ার জামাল (৩৩)। সেবাটি উদ্বোধনের এক ঘণ্টার মধ্যেই তিনি সেবাটি গ্রহণ করেন। সেবাটির মাধ্যমে সাতকানিয়া উপজেলায় বসবাসরত মানুষের বহুদিনে ভোগান্তির মাঝে আশার আলোর উদয় হয়েছে।