মঙ্গলবার, ২ জুন, ২০২০
অনুবাদঃ ডা. রিজওয়ানুল করিম
ডা. নাওমি নুর
ডা. ইশরাত মৌরী
করোনাভাইরাস এ আক্রান্ত কিন্তু উপসর্গবিহীন যে কোন ব্যক্তি শুধুমাত্র কথা বলার মাধ্যমেই এই রোগের সংক্রমণ ঘাটাতে পারেন। কিন্ত শুধুমাত্র একটা সাধারণ কাপড়ের মাস্ক দিয়ে আমরা জীবানুযুক্ত হাঁচি কাশির তরলকনা বা ড্রপলেট ছড়ানো প্রতিরোধ করতে পারি।
আপনাদের অনেকেই হয়ত অফিসে, পার্কে বা বাজারে গিয়েছেন। পাবলিক ট্রান্সপোর্টে যত্রতত্র ঘুরে বেড়িয়েছেন এবং আপনাদের অনেকেই ইতিমধ্যে নিজের অজান্তেই হয়তো আক্রান্ত হয়ে গেছেন। কেউ কেউ হয়তো মারাও গেছে। বাকীরা হয়তো ভাবছেন যে, আরোগ্য লাভের পূর্বেই উনারা মারা যাবেন।
এই উদ্বেগের বিষয়টাই উল্লেখ করা হয়েছে “Nature”- এ প্রকাশিত রোমান ওউলফেল এবং তার সহযোগীদের প্রবন্ধে। এতে বলা হয়ছে যে প্রথম ৭ দিন আক্রান্ত কোভিড-১৯ আক্রান্ত ব্যক্তির মাধ্যমে সংক্রমনের ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি। সাধারনত, এ সময়ে আক্রান্ত ব্যক্তির কোন ধরনের উপসর্গ দেখা যায় না।
সহজ ভাষায়, অসতর্ক ব্যক্তির জন্যে কোভিড-১৯ হল এক নীরব ঘাতক। হতে পারে, আপনিও এরকমই অসতর্ক একজন। এদের দলভুক্ত হতে না চাইলে অবশ্যই মাস্ক পরুন এবং সামাজিক বা শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখুন।
N95 রেস্পিরেটর কিন্তু আপনার জন্য নয়। স্বাস্থ্য সেবাকেন্দ্রগুলোতে এন ৯৫ রেস্পিরেটরের অপ্রতুলতা রয়েছে। হাসপাতালে কোভিড-১৯ এ আক্রান্তদের সেবা প্রদানকালে স্বাস্থ্য কর্মীদের সুরক্ষায় এই মাস্ক ব্যবহার করা হয়। আপনার মধ্যে এই ঘাতকের সংক্রমন ঠেকাতে ঘরে তৈরি মাস্ক অথবা রুমালের ব্যবহারই যথেষ্ট।
নোবেলজয়ী ভাইরোলজিস্ট ‘হ্যারল্ড ভারমাস’ এর মতে, একজন ব্যক্তিকে ৯৯ ভাগ ড্রপলেট বা তরল কনা থেকে সুরক্ষা দিতে তার মুখের উপর একটা পরিষ্কার কাপড়ের ব্যবহারই যথেষ্ট। বিজ্ঞানের এটি একটি সহজ প্রয়োগ। যখন আমরা অসুস্থ/আক্রান্ত হবো, আমরা হয়ত জানবোই না। আক্রান্তবস্থায়, কথা বলার সময় আমরা বাতাসে ভাইরাসযুক্ত তরল কনা বা ড্রপলেট ছড়িয়ে দিচ্ছি। সাধারণ একটি কাপড়ের মাস্ক এই তরল কোনাগুলোর পরিভ্রমণ/ ছড়িয়ে পড়া বাঁধা দেয়।
ডা. হারভি ফিনবারগ, ন্যাশনাল একাডেমী অব সায়েন্স এর Emerging infectious disease & 21st century health threats বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির সভাপতি বলেন, “আমি কোন সারজিক্যাল মাস্ক ব্যবহার করব না, কারন এটা স্বাস্থ্য সেবাদানকারীর জন্য। তবে আমি আমার একটি সুন্দর রুমাল ব্যবহার করব, অথবা বাঁদুরে টুপি। আমার অনেক ভালো ভালো বিকল্প আছে।”
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা’র পরামর্শক প্রফেসর ডেভিড হেইমান্ন সিবিই বলেন, “এই ভাইরাস থেকে বাঁচতে মাস্ক পরা নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখার চেয়েও বেশি কার্যকর।”
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে আপনি যদি অসুস্থ হন বা অসুস্থ কাউকে দেখতে যান, শুধু তখনই মাস্ক ব্যবহার করুন। কিন্তু নতুন তথ্য মতে, এ বার্তাটি সঠিক নয়। মনে রাখতে হবে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত বেশিরভাগ রোগীই উপসর্গবিহীন। অনেক আক্রান্ত ব্যক্তি নিজের অসুস্থতা সম্পর্কে অবহিতই নয়।
মাস্ক ব্যবহারের নীতি পরিবর্তনের প্রভাব খুব স্পস্ট। দক্ষিন কোরিয়ায় ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত মাস্ক দুস্প্রাপ্য ছিল। এরপর সেদেশের সরকার তার সকল জনগনের মাস্কের সরবরাহ নিশ্চিত করে। তার আগ পর্যন্ত, দক্ষিন কোরিয়ায় কোভিড-১৯ এর আক্রান্তের হার ইতালীর মতই ছিল। কিন্তু সকলের জন্য মাস্ক নিশ্চিত করার পরই সেখানে এই রোগের প্রাদুর্ভাব কমে এসেছে।
ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদল মাস্ক ব্যবহারে অর্থনৈতিক উপকারিতা তুলে ধরেন, “জনগনের পরিহিত প্রতিটি অতিরিক্ত মাস্ক এর বিপরীতে লাভ ৩০০০-৬০০০ মার্কিন ডলার বা সমমুল্যে, যেহেতু তারা ভাইরাসটির সংক্রমণ প্রতিরোধে সাহায্য করছেন”।
বিশেষত এসব কাপড় আপনি বিনামূল্যে পাবেন, কারন এটা আপনি টুকরো কাপড়, আপনার পুরানো যে কোন টি-শার্ট, সুতি কাপড় বা চাদর কেটে বানাতে পারবেন। এর ব্যবহারের উপকারিতা টাকায় হিসাব করলে অবাক হওয়ার মত। আপনি মাস্কে ১ টাকা বিনিয়োগের বিপরীতে ১০০০ টাকা ফেরত পাবেন।
একটা বড় সমস্যা হচ্ছে, মাস্ক পরার সুফল পেতে অধিকাংশ মানুষকেই মাস্ক পরতে হবে। ‘ফুড এন্ড ড্রাগ এডমিনিস্ট্রেশন’ এর গবেষণায় দেখিয়েছে, ৫০ শতাংশ ভাইরাসের সংক্রমণ কমানো সম্ভব যদি জনগনের ৫০% মাস্ক পরে। আর ভাইরাসটি ‘কার্যত নির্মূলে’ ৮০% জনগনকে মাস্ক পরতে হবে। এজন্যে, অনেক দেশে জনাকীর্ণ স্থান (যেমনঃ গনপরিবহন বা বাজার) মাস্ক ব্যবহারের জন্য আইন প্রনয়ণ করা হয়েছে। কিছু দেশ এক্ষেত্রে আরো কঠোর নীতি ঘোষনা করেছে। যেমন, ঘর থেকে বেরোলেই মাস্ক পরতে হবে।
ইসরাইল, অস্ট্রিয়া, চেক রিপাবলিক, হংকং, মঙ্গোলিয়াসহ আরো অনেক জায়গায় “সবার জন্য মাস্ক আইন” প্রনয়ণ করা হয়েছে এবং প্রতিদিন এ তালিকায় আরো নতুন নতুন এলাকা অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে। আমেরিকার বেশ কিছু প্রদেশ; যেমন, টেক্সাসের লারেডো এবং ক্যালিফোর্নিয়ার রিভারসাইড কাউন্টি স্থানীয় পর্যায়ে মাস্ক ব্যবহারের আইন প্রনয়ণ করেছে।
এসব পদক্ষেপ কোনভাবেই সামাজিক দূরত্ব এবং হাত ধোয়ার অভ্যাসকে বাদ দিয়ে নয়। এই ঘাতককে থামাতে হলে আমাদের আওতাধীন বা সাধ্যের মধ্যে সকল উপায়গুলো ব্যবহার করতে হবে।
আমাদেরকে অবশ্যই আমাদের তৃণমূল জনগনের সচেতনতা, আন্তরিকতা ও চেষ্টার উপর গুরুত্ব দিতে হবে। যেন আমরা সেই ৮০% মাস্ক ব্যবহার এর লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করে, ভাইরাসটি নির্মূল করতে পারি। অর্থাৎ শতকরা ৮০ জন যেন অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার করে। আমরা জানি, এটা সম্ভব।
ঘরে তৈরি কাপড়ের মাস্কের ব্যাপারে সিডিসি -এর নির্দেশনাঃ
বিভিন্ন জনসমাগমযুক্ত জায়গা, যেখানে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা সম্ভব নয়; যেমনঃ মুদির দোকান, বাজার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ফার্মেসী ইত্যাদি জায়গায় সিডিসি পরামর্শ দিয়েছে কাপড়ের তৈরী মাস্ক ব্যবহার করার।
সাধারণ কাপড়ের মাস্ক ঘরেই তৈরী করা যায় এবং এটা কোভিড-১৯ এর ছড়িয়ে পড়া প্রতিরোধেও সাহায্য করতে পারবে।
কাদের কাপড়ের তৈরী মাস্ক ব্যবহার করা উচিৎ নয়ঃ
২ বছরের নিচের বয়সের শিশু, বা যাদের শ্বাসপ্রশ্বাসের সমস্যা আছে, অজ্ঞান, অক্ষম বা তারা যাদের অন্যের সাহায্য লাগে মাস্ক খুলার জন্য।
কাপড়ের তৈরী মাস্ক সার্জিক্যাল মাস্ক বা এন-৯৫ রেসপিরেটরের মত নয়।
সিডিসি-এর প্রস্তাবনা অনুযায়ী সার্জিক্যাল মাস্ক এবং এন-৯৫ রেসপিরেটর গুলো অবশ্যই স্বাস্থ্যকর্মী যারা রোগীর সংস্পর্শে আসে তাদের জন্য সংরক্ষিত রাখতে হবে।
সেলাই করা এবং সেলাইবিহীন মাস্ক তৈরি নির্দেশনাঃ
সেলাই করা কাপড়ের মাস্কঃ
উপকরণঃ
– দুইটি আয়তকার ১০” × ৬” সুতি কটনের কাপড়।
– দুইটি ৬” ইলাস্টিক ব্যান্ড (বা রাবার ব্যান্ড, সুতা, কাপড়ের ফিতা বা চুল বাঁধার ফিতা)
– সুঁই এবং সুতা (বা ববি পিন)
– কাঁচি
– সেলাই মেশিন
কিভাবে বানাবেন?
১/ দুটো সুতি কাপড়কে (১০ ইঞ্চি দৈর্ঘ্য, ৬ ইঞ্চি প্রস্থ) আয়তাকার আকৃতিতে কেটে নিন।
শক্ত/ ঘনভাবে বোনা কাপড় বা সুতির কাপড় [কটন শিট] ব্যবহার করুন।
কিছু না পেলে গেঞ্জি/ টি শার্টের কাপড় ব্যবহার করাও যেতে পারে। মাস্ক সেলাই করার জন্য এবার কাপড়ের খন্ড দুটিকে একসাথে করুন।
২/ দৈর্ঘ্যের বরাবর দুই ধারে ১/৪ ইঞ্চি করে ভাজ করে নিন এবং মুড়িয়ে সেলাই করে নিন। প্রস্থ বরাবর দুই ধারে আধ ইঞ্চি করে ভাজ করে দিন। এবং সেলাই করে নিন।
৩/ মাস্কের প্রস্থ বরাবর দুধারের চওড়া মুড়ি দিয়ে এবার ৬ ইঞ্চি লম্বা এবং ১/৮ ইঞ্চি চওড়া একটি ইলাস্টিক ফিতা ঢুকিয়ে দিন। এটি কানে পড়ার জন্য ফাস হিসেবে কাজ করবে। সেলাইয়ের জন্য বড় সুই অথবা ক্লিপ ব্যবহার করুন।
ইলাস্টিক ফিতা নেই? এক্ষেত্রে মাথা বাধার রাবার ব্যান্ড ব্যবহার করুন। অথবা আপনার বাড়িতে যদি দড়ি জাতীয় কিছু থাকে তাহলে তা ব্যবহার করতে পারেন। মাথার পিছনে বাঁধার জন্য লম্বা করে নিতে পারেন ফিতাটি।
৪/ ইলাস্টিক ফিতাটিতে সুন্দর করে গিট বেঁধে নিন এবং তা টেনে নিয়ে মুড়িয়ে নেয়া অংশের ভিতর গুজে দিন। এবার ইলাস্টিক বরাবর মাস্কের দুই প্রান্ত কাছাকাছি নিয়ে আসুন, যাতে মাস্কটি আপনার মুখের সাথে খাপ খেয়ে যায়। এখন ইলাস্টিকটি যেন জায়গা থেকে সরে না যায়, সে জন্য সাবধানতার সাথে তা কাপড়ের সাথে সেলাই করে নিন।
সেলাইবিহীন কাপড়ের মাস্কঃ
উপকরণ সমূহঃ
১। রুমাল, পুরনো গেঞ্জির কাপড় অথবা চারকোণা সুতির কাপড় (আনুমানিক ২০” X ২০” কাটুন)
২। রাবার ব্যান্ড (চুলের ব্যান্ড)
৩। কাঁচি (যদি আপনি আপনার নিজের কাপড় কেটে থাকেন)
বানানোর পদ্ধতিঃ
১। রুমালটির মাঝখানে সমান ভাবে ভাঁজ করুন।
২। রুমালটি উপরের ও নিচের থেকে দুটি অংশ রুমালটির মাঝামাঝি জায়গায় এনে ভাঁজ করুন।
৩। দুইটি রাবার ব্যান্ড ৬ ইঞ্চি ব্যবধানে রুমালটিতে স্থাপন করুন।
৪। পাশ থেকে ভাঁজ করে মাঝখানে আটকে দিন।
যেসব বিষয়গুলো কাপড়ের মাস্কের ক্ষেত্রে লক্ষণীয়ঃ
> মুখে ঠিকমতো আটকানোর পাশাপাশি পরিধানে আরাম বোধ হবে।
> নাক এবং মুখ পুরোপুরি ঢেকে থাকবে।
> মাস্কটি কানের সাথে রাবার ব্যান্ড এর মাধ্যমে আটকে থাকবে।
> কাপড়ের একাধিক স্তর থাকবে।
> বাঁধাহীন ভাবে শ্বাস নেয়া যাবে।
> কাপড়ের কোন ক্ষতি এবং আকারের পরিবর্তন ছাড়া ধোয়া এবং মেশিনে শুকানো যাবে।
কাপড়ের তৈরি মাস্ক পরিষ্কার করার নিয়মঃ
কোভিড-১৯ এর ছড়িয়ে পড়া প্রতিরোধে সামাজিক দূরত্ব মেনে চলা সহ প্রতিদিনের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের সাথে কাপড়ের তৈরি মাস্ক ব্যবহার একটি কার্যকরী উপায়।
কাপড়ের তৈরি মাস্ক গুলোকে প্রতিবার ব্যবহারের পর ধুয়ে ফেলতে হবে। সঠিক নিয়মে মাস্ক খোলা ও মাস্ক খোলার পর হাত পরিষ্কার করার খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
যেভাবে পরিষ্কার করতে হবে-
ওয়াশিং মেশিন-
> প্রতিদিনের ব্যবহার্য কাপড়ের সাথে মাস্ক ধোয়া যাবে।
> সাধারন ডিটারজেন্ট ও পানি যা দিয়ে দৈনন্দিনের কাপড় পরিষ্কার করা হয়, সেটাই ব্যবহার করা যাবে।
হাতে পরিষ্কারের ক্ষেত্রে-
> ব্লিচের একটি দ্রবণ নিম্নক্ত উপায়ে তৈরি করতে হবেঃ
– ৫ টেবিল চামচ গৃহস্থালি কাজে ব্যবহার্য ব্লিচ এক গ্যালন পানির সাথে মিশাতে হবে।
– এক গ্যালনের ১/৪ অংশ পানির সাথে ৪ চা চামচ গৃহস্থালি কাজে ব্যবহার্য ব্লিচ মিশাতে হবে।
– ব্লিচের লেবেল পরীক্ষা করে দেখতে হবে যে, এটা জীবাণুনাশক হিসেবে ব্যবহারের জন্য কিনা।
কেননা বাজারে কাপড় রাঙানোর জন্য ব্লিচ পাওয়া যায়, যা জীবাণুনাশক হিসেবে ব্যবহার করা যায় না। – এছাড়া ব্লিচের মেয়াদ আছে কিনা, সেটাও দেখতে হবে। গৃহস্থালি কাজে ব্যবহার্য ব্লিচের সাথে কখনই অ্যামোনিয়া বা অন্য কিছু মেশানো যাবে না।
> মাস্কটিকে ব্লিচ দ্রবনে ৫ মিনিট ভিজিয়ে রাখতে হবে।
> ঠাণ্ডা বা কক্ষ তাপমাত্রার পানি দ্বারা মাস্কটিকে ভালভাবে ধুয়ে ফেলতে হবে।
মাস্ক শুকানোর নিয়মঃ
>ওয়াশিং মেশিন/ শুষ্ককরণ যন্ত্র দ্বারা-
– সর্বোচ্চ তাপমাত্রায় সম্পূর্ণরূপে শুকাতে হবে।
> বাতাসে শুষ্ককরণের ক্ষেত্রে-
– সমানভাবে বিছিয়ে রাখে সম্পূর্ণরূপে শুকাতে হবে।
– সম্ভব হলে সরাসরি রৌদ্রের তাপে শুকাতে হবে।