১২জুলাই, ২০২০, রবিবার
অধ্যাপক ডা. সানজিদা শাহরিয়া
চিকিৎসক, কাউন্সিলর
ফিনিক্স ওয়েলনেস সেন্টার বাংলাদেশ
**বর্তমান এই মহামারীর সময়ে সেল্ফ কেয়ার বা নিজের যত্ন নেওয়া খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা ব্যপার। কারণ নিজেকে ভালো রাখতে না পারলে চারপাশের সবকিছু ভালো রাখা কঠিন হয়ে পড়ে। এক কথায় বলতে গেলে নিজের যত্ন নেওয়ার মানে নিজেকে ভিতরে পূর্ণ করা।
তবে নিজেকে ভালো রাখতে গিয়ে যেন কেউ আত্নকেন্দ্রিক না হয় সেদিকে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, বাড়িতে অনেক সময়ই ছোট বাচ্চারা কাজের মাঝখানে অদ্ভুত বা শিশুসুলভ অভিযোগ নিয়ে আসে। সেক্ষেত্রে বিরক্ত না হয়ে বরং ইতিবাচক আচরণ করে তাকে বোঝাতে হবে। এসব ক্ষেত্রে রূঢ় আচরণ সাধারণত ব্যক্তির আত্নকেন্দ্রিক বা সেল্ফ সেন্ট্রিক মনোভাব প্রকাশ করে। আবার অনেক সময় জুনিয়র সহকর্মীর উপর নিজের কাজ চাপিয়ে দেওয়াটা আত্নকেন্দ্রিক মনোভাবের আরেকটা কারণ হতে পারে।
পুরো ব্যপারটি ইথিক্সের ভাষায় বলতে গেলে, নিজের ভালোর জন্য অন্যের ক্ষতি না করা এবং নিজের ক্ষতি হতে না দেওয়া। বর্তমানের এই কঠিন সময়ে ইথিক্সের এই ব্যপারটা কতটা মানা হচ্ছে সেটা নিজেদের ভেবে দেখতে হবে।
এ ধরনের আত্নকেন্দ্রিক আচরণ যেন শিশুদের মধ্যে তৈরি হতে না পারে সেজন্য অভিভাবকদের কিছুটা বাড়তি জিনিস খেয়াল রাখতে হবে। যেমন একাধিক সন্তানের মধ্যে কোনো একজনকে যদি বারবার শুধু তার পছন্দের গুরুত্ব অনুসারে চাহিদা পূরণ করা হয় তবে পরবর্তীতে এটা তার অভ্যাসে পরিণত হবে। ভবিষ্যতে নিজের প্রয়োজনীয় চাহিদা সে যে কোন মূল্যে পূরণের চেষ্টা করবে। আবার বাড়ির প্রধান যার উপর একটা পরিবার নির্ভরশীল, তার পছন্দ অপছন্দ গুলো অন্যের উপর চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে কিনা সেটা তার নিজের লক্ষ্য রাখতে হবে।
নিজের আচরণের জন্য যদি অন্য কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হয় তাহলে অবশ্যই তা আত্নকেন্দ্রিক মনোভাবের বহিঃপ্রকাশ। এ ধরনের আচরণ নিজেকে ভালো রাখলেও আশেপাশের বাকি মানুষের জন্য ক্ষতির কারণ। কারো সাথে মতের মিল না হওয়ার কারণে তাকে অসম্মান করা বা আঘাত করার মনোভাব থেকে সবারই বের হয়ে আসতে হবে। মনে রাখতে হবে নিজের সম্মান বজায় রাখার জন্য আরেকজনকে সম্মান করাটা আবশ্যক।
সেল্ফকেয়ার মানে সেল্ফিশনেস নয় এটা মেনে চলতে পারলে পরিবেশ হয়ে উঠবে আরও সুন্দর এবং প্রাণবন্ত।
নিজস্ব প্রতিবেদক
ডা. টি এইচ এম এনায়েত উল্লাহ খান