সারাদেশে সম্প্রতি ৩৩তম বিসিএস এ ৬০০০ এর বেশি নতুন ডাক্তা নিয়োগ বাংলাদেশের ইতিহাসে এই প্রথম। আগে যেখানে একজন ডাক্তার কাজ করতেন বা ইউনিয়ন পর্যায়ে যেখানে কোন ডাক্তার ছিলেন না সেখানে একাধিক নতুন ডাক্তার যোগ দিয়ে দেশের চিকিৎসাসেবা ত্বরান্বিত করছেন। পূর্বের চিকিৎসক সংকটাবস্থাতেও ঈদ পূজায় কখনো হাসপাতালের জরুরী সেবা বন্ধ থাকেনি। মুসলিম-অমুসলিম কর্মকর্তা কর্মচারীরা মিলেমিশে সারাবছর সব বন্ধেই হাসপাতালের জরূরী সেবা চালু রেখে আসছেন বহু বছর ধরে। এবার নতুন ডাক্তার নিয়োগের পরে এই চাপ আরো কমে যাবার কথা। এমতাবস্থায় ভোলা জেলার ডিসি জেলার সিভিল সার্জনের সম্মতিতে উক্ত জেলার সকল স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানে কর্মরত সকল কর্মকর্তা কর্মচারী ছুটি বাতিলের সেচ্ছাচারী, অমানবিক, নজিরবিহীন সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং এই আদেশ পালনে সব ডাক্তার ও কর্মচারীদের বাধ্য করেছেন। নিজেদের রাজনৈতিক প্রভাব বর্ধিত করতে তারা এমন আচরন করেছেন বলে জানা যায়। আমরা এই হঠকারী সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং শাস্তি দাবি করছি। আদেশের কপিটি এখানে সংযুক্ত করা হলঃ
এভাবে সিনিয়র চিকিতসকদের সাথে পরামর্শ করলে তারা বলেনঃ
“নির্ধারিত ছুটি বিধিমালা ১৯৫৯ (The prescribed Leave Rules, 1959) অনুসারে যে ১৭ প্রকারের ছুটি আছে তার মধ্যে সাপ্তাহিক ছুটির দিন ব্যাতীত অন্য আর মাত্র দুই প্রকার ছুটি ক্যালেন্ডারে লাল কালিতে দাগান্বিত থাকে । তা হলো সাধারন ছুটি (Public holiday) ও নির্বাহী আদেশে সরকারী ছুটি (Government holiday)
ঈদ ও পুজার ছুটি Public holiday, আর ঈদের একদিন আগে ও পরে এ দুদিন Government holiday- সবই লাল হরফে লেখা । সিভিল সার্জন স্বাক্ষরিত নোটিশটিতে দেখা যাচ্ছে, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মিটিংয়ে ভোলার স্বাস্হ্য প্রতিষ্টানে কর্মরত সব কর্মকর্তা কর্মচারীর আসন্ন ঈদ ও পুজার সব ছুটি বাতিল ঘোষনা করা হয়েছে । প্রশাসন, পুলিশ বা অন্য সার্ভিসের চাকুরীজীবিদের জন্য এমন কোন তুঘলকী আদেশ নাযেল হয়নি । অথচ নিয়ম হলো চিকিৎসাসেবা যাতে ব্যাহত না হয় সেজন্য সমন্বয়ের মাধ্যমে ডাক্তার-নার্সদের একটা অংশ কর্মস্হলে থাকেন, অন্যরা ছুটিতে যান ।
স্পষ্টত বুঝা যায় এটা প্রশাসন ও সিভিল সার্জনের এটা একটা শো-আপ । তা করুক, কিন্ত অন্যদের বিধিবদ্ধ অধিকার হরন করে কেন? পুলিশ বা প্রশাসনের লোকদের জন্য এমন আদেশ জারী হবেনা কেন? ডিসি এসপিদের তুলনায় সিভিল সার্জনরা শিথিল লিঙ্গাধিকারী হলেও চিকিৎসকদের abuse করে attention seek করা ও নিজেকে জাহির করার ক্ষেত্রে তারা শতভাগ Erect । অধীনস্হ ডাক্তারদের misuse না করলে তাদের চরম পুলক ঘটেনা । কেউ নাড়ু খাইবে, হাড্ডি চিবাইবে- আর বিশেষ পেশার শতভাগ কর্মচারী প্রাপ্য ছুটিগুলি বে অব বেঙ্গলের বাতাসে উড়াইয়া দিবে কেন? ছুটিতে হাসপাতাল কিন্ত খলি থাকেনা । তখনও অপারেশন হয় । জরুরী পরীক্ষানিরীক্ষা হয় । IMO/CA থাকা অবস্হায় আমার ঈদ-পুজা হাসপাতালেই কাটতো । এ সময় চিকিৎসকদের মতই গনহারে সব পুলিশ বা প্রশাসনের কর্মকর্তা কর্মচারীরাও ছুটি পায়না, সেটা বাস্তবসম্মতও নয় । আবার তাদের শতভাগ কর্মকর্তাও ছুটিতে অফিসে পড়ে থাকেন না।
কিন্ত কোনপ্রকার মহামারী, disaster, দূর্বিপাক ছাড়াই শুধুমাত্র একটি পেশার সবার ছুটি গনহারে বাতিলের নোটিশ- ঔদ্ব্যত্বপূর্ন ও অযৌক্তিক বটে। একটা গোলযোগহীন, দূর্বিপাকহীন সময়ে যদি এমন সিদ্বান্ত হয় যে, শতভাগ পুলিশ ও প্রশাসনের কর্মকর্তার ঈদ ও পুজার ছুটি বাতিল- তা কিন্ত তাদের কাছে বাড়াবাড়ি বা show-up মনে হবে । সেটি তখন পত্রিকার হেডলাইন হতো, টিভি মিডিয়ায় ব্রেকিং নিউজ হতো ।
সবকিছুরই বিধি ও পদ্ধতি আছে । একটা সাইক্লোনের সময়ের ছুটি বাতিল আর স্বভাবিক সময়ে শুধু এক পেশার নিরীহজনদের গনহারে ছুটি বাতিল এক কথা নয় ।”