মঙ্গলবার, ৮ অক্টোবর, ২০২৪
গত বুধবার (০২ অক্টোবর) বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ঢুকে দুই চিকিৎসক ও এক উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসারকে (প্রস্তাবিতঃ মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট) মারধর করে ২০-২৫ জনের একটি দল। ঘটনাটি অত্যন্ত নিন্দনীয় এবং মানবাধিকারের লঙ্ঘন উল্লেখ করে স্বপ্রণোদিত অভিযোগ (সুয়োমটো) গ্রহণ করেছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন।
আজ সোমবার (০৭ অক্টোবর) জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা ইউশা রহমান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, অভিযোগের বিষয়টি সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ এবং কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা নিশ্চিতে জেলা পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দিয়েছে কমিশন।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ঘটনার বিবরণে বলা হয়, গত ২ অক্টোবর দুপুরে ২০-২৫ জন দুর্বৃত্ত বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে ঢুকে পড়ে। তারা সেখানে কর্মরত উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার চন্দন দাসকে জোর করে বের করে মারধর শুরু করে। তাকে রক্ষায় এগিয়ে যান জরুরি বিভাগে কর্মরত দুই চিকিৎসক ডা. তনুশ্রী ডাকুয়া ও ডা. রেজোয়ানা মেহজাবিন বন্যা। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে হামলাকারীরা তাঁদেরও মারধর করে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরো উল্লেখ করা হয়, এ ঘটনার জন্য স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সাবেক স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মুফতি কামাল হোসেনকে দায়ী করেছেন প্রতিষ্ঠানটির সংশ্লিষ্টরা। তারা জানিয়েছেন, হামলাকারীদের মধ্যে মুফতি কামালের ঘনিষ্ঠ কয়েকজন ওষুধ কোম্পানির কর্মীও রয়েছেন।
মারধরের শিকার চিকিৎসক ডা. রেজোয়ানা মেহজাবিন বন্যা জানিয়েছিলেন, “শিমুল শেখ নামের স্থানীয় এক ব্যক্তির নেতৃত্বে হামলাকারীরা হাসপাতালে এসে আমাদের হামলা করে। হামলাকারীদের মধ্যে ওরিয়ন ফার্মাসিউটিক্যালসের শাহীন ও একমি ফার্মাসিউটিক্যালসের রাব্বিকে আমরা চিনতে পেরেছি। এরা এসেই স্যাকমো চন্দন দাসকে টেনেহিঁচড়ে বাইরে নিয়ে মারতে আরম্ভ করে। চন্দন দাসকে মারতে দেখে আমি ও জরুরি বিভাগের আরেক চিকিৎসক তনুশ্রী ডাকুয়া ঠেকাতে গেলে তারা আমাদেরও মারধর করে। হামলাকারীরা ওই সময় উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শর্মী রায়কে গালাগাল করে। ঘটনার পর থেকে হাসপাতালে ভেতরেও আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আমরা দ্রুত সময়ের মধ্যে হামলার বিচার দাবি করছি।”
সুয়োমটোতে (স্বপ্রণোদিত অভিযোগ) মানবাধিকার কমিশন চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ উল্লেখ করেন, হাসপাতালের মত একটি স্পর্শকাতর স্থানে কর্মরত চিকিৎসকদের প্রহার করা তাদের মর্যাদার ওপর যেমন চরম আঘাত একই সঙ্গে চিকিৎসারত রোগীদের শান্তিপূর্ণ অবস্থায় থাকার অধিকারের চরম লঙ্ঘন।
এ অবস্থায় বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ঢুকে চিকিৎসককে মারধর করার অভিযোগের বিষয়টি সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে যথাসত্ত্বর সম্ভব আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতঃ আগামী ১২ নভেম্বর ২০২৪ তারিখের মধ্যে কমিশনে প্রতিবেদন প্রেরণ করতে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন আইন, ২০০৯ এর ১৭ ধারা অনুযায়ী পুলিশ সুপার, বাগেরহাট-কে বলা হয়েছে। আদেশের অনুলিপি সিভিল সার্জন, বাগেরহাট-কে প্রেরণ করা হয়েছে।
প্ল্যাটফর্ম প্রতিবেদকঃ মঈন উদ্দীন আহমদ শিবলী