২০১৭ সালে বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি বিক্রিত ঔষধ এর তালিকা এটি। তালিকায় ১ম ৪টি সহ মোট ৬টি অর্থাৎ অর্ধেকের বেশি ওষুধই “গ্যাসের ওষুধ”! এটা দেখে স্বাভাবিক মনে হতে পারে কিংবা মনে মনে হাসিও আসতে পারে । কিন্তু কতটা ভয়ংকর দিকে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি, সেটা জানি কি?
এই “গ্যাসের ওষুধ” গুলো মূলত গ্যাস্ট্রাইটিস, পেপটিক আলসার ডিজিজ, জিইয়ারডি ইত্যাদি রোগে ব্যাবহৃত হয়। কিন্তু এসব রোগ অধিকাংশই খাদ্যভ্যাস সম্পর্কিত। শুধুমাত্র ওষুধে এর মুক্তি নেই। বরং দীর্ঘমেয়াদে এসব ওষুধ ব্যবহারে যেসব প্রমাণিত ঝুকি আছে সেগুলো হলো: ক্যান্সার, হৃদরোগ, স্মৃতিভ্রষ্টতা, রক্তশূন্যতা ইত্যাদি।
ওষুধগুলো পাকিস্থলীতে এসিড নি:সরন বন্ধ করে দেয় অথচ পাকিস্থলীতে এসিড থাকাটাই স্বাভাবিক, এটিই মানুষের স্বাভাবিক শারিরীক প্রক্রিয়া, পাকিস্থলীর কোষগুলোর গঠন সেভাবেই তৈরি। তাই যখনই দীর্ঘসময় এই স্বাভাবিক এসিড বন্ধ থাকছে তখনই কোষগুলো ক্যান্সার কোষে পরিনত হবার ঝুকিতে পড়ছে। আবার এই এসিড আমাদের খাবার হজম করতে সহায়তা করে। এসিড না থাকলে আয়রন শরীরে শোষিত হয়না। তাই দীর্ঘমেয়াদে এসিড বন্ধ থাকলে আয়রন এর অভাবজনিত রক্তশূন্যতা হতে পারে। পাকিস্থলীর এসিড আমাদের জীবানু থেকেও রক্ষা করে তাই রোগ জীবানু দ্বারা আক্রান্ত হবার সম্ভাবনাও বাড়ে। এছাড়াও হৃদরোগ ও স্মৃতিভ্রস্টতার সাথেও দীর্ঘমেয়াদে এসব ওষুধ খাওয়ার সরাসরি সম্পর্ক আছে। আমি নিজে প্রচুর রোগী দেখেছি যারা ৫-১০ বছর এমনকি ১৫-২০ বছর ধরে এসব ওষুধ খাচ্ছেন যা খুবই ভয়ংকর।
তাই আপনার আসলেই এসব ওষুধ খাবার দরকার আছে কিনা (ঢেঁকুর ওঠা, অল্পতেই পেট ভরে যাওয়া, “গ্যাস” হওয়া ইত্যাদি এসব ওষুধ দ্বারা নিরাময়্যোগ্য না) থাকলেও তা কতদিন এগুলো একজন নূন্যতম এমবিবিএস চিকিতসককে দেখিয়ে জেনে নিন। নিজে থেকে বা ফার্মেসী বা অন্যকারো দ্বারা প্ররোচিত হয়ে এসব ওষুধ দীর্ঘমেয়াদে খেলে নিজেই নিজের ক্ষতি ডেকে আনবেন।
তালিকায় ৫ম অবস্থানে আছে সেফ-৩। এটি একটি ৩য় প্রজন্মের এন্টিবায়োটিক। এটি সাধারন অবস্থায় সহজে ব্যবহার হবার কথা না অথচ আমরা মুড়ি মুড়কির মত প্রেসক্রিপশন ছাড়াই এটি কিনে খাচ্ছি। ফলে ক্রমান্বয়ে এই এন্টিবায়োটিক কার্যকারিতা হারাচ্ছে। খোদ যুক্তরাস্ট্রে সবচেয়ে বেশি ব্যাবহৃত এন্টিবায়োটিক হচ্ছে এমোক্সিসিলিন যা ২য় প্রজন্মের ওষুধ। যেখানে তারাই ৩য়-৪র্থ প্রজন্মের এন্টিবায়োটিক এড়িয়ে চলে সেখানে আমরা ২য় প্রজন্মকে গোনায়ই ধরি না! সুতরাং জীবানুরা শক্তিশালী হচ্ছেই।
ওষুধের ব্যাপারে তাই আজই সাবধান হউন। নূন্যতম গ্রাজুয়েট ডাক্তার ব্যতীত যেকোন ধরনের ওষুধ সেবন থেকে বিরত থাকুন।
তথ্যঃ ডা. মারুফুর রহমান অপু, মেডিকেল অফিসার Center for Medical Biotechnology, DGHS।
Good information, this health education should come in mass media out of platform, because not only doctor public should know which will help the healthcare professionals.