অস্কার ল্যাংহেম, মাত্র ১০ মাসের একটি ছেলে শিশু।
ছেলেটির এক বিরল শারীরিক অবস্থার কারণে সম্পূর্ণ শরীর লাল লাল ফুসকুড়ি দিয়ে আচ্ছাদিত হয়ে যায়। এমনকি তার জিহবা এবং চক্ষুগোলকেও দেখতে পাওয়া যায় ফুসকুড়িগুলো।
প্রথম দিকে ফুসকুড়ি গুলো চিকেন পক্স এর মত দেখা গেলেও বয়স বাড়ার সাথে সাথে এটি খারাপ থেকে খারাপতর হতে থাকে। এটি এতটাই তীব্র আকার ধারন করে যে অপরিচিত কেউ তাকে স্পর্শ করতে ভয় পায় কারণ তারা মনে করে সংস্পশের্ সংক্রামিত হতে পারে।
ছয় মাস আগে বাচ্চাটির Langerhans cells histiocytosis নামক ইমিউন কোষের একটি ক্যান্সারের মত রোগ ধরা পড়ে।যেখানে শরীরে অনেক অপূর্ণাঙ্গ ল্যাঞ্জারহান্স কোষ জমা হয় যা কিনা সাদা রক্ত কনিকার একটি প্রকার, যেটি সাধারণত দেহের বিভিন্ন সংক্রমণের বিরুদ্ধে কাজ করে। এই কোষ ক্রমাগত জমা হতে হতে টিউমারে পরিণত হয় এবং বিভিন্ন অঙ্গের ক্ষতি করতে পারে মনে করা হচ্ছে।
প্রথমে ডাক্তাররা কিছু বুঝতে পারেনি। তারা ভেবেছিল এটা স্বাভাবিক জন্মকালের ফুসকুড়ি কিন্তু পরবর্তীতে এক ধাত্রী তাঁকে দেখে উপলব্ধি করে এটি একটি সমস্যা হতে পারে এবং তার কথা থেকে পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায় দাগগুলো ধীরে ধীরে খারাপ থেকে আরও খারাপ হচ্ছে।
শরীরে ফুসকুড়ি ছাড়াও অস্কারের লিভার ও প্লীহা স্বাভাবিক এর চেয়ে বড় এবং তার রক্ত কোষ এবং হাড় মজ্জা সঠিকভাবে উৎপাদন হয় না যার ফলশ্রুতিতে দুর্বল ইমিউন সিস্টেম সহ অন্যান্য সমস্যা ও রয়েছে।আশংকা করা হচ্ছে তার চোখের দাগ গুলো বড় হতে থাকলে দৃষ্টিশক্তি ও ব্যহত হতে পারে।
সবচেয়ে উদ্বেগজনক হল এই অবস্থাটির সাথে ক্যান্সারের সংযুক্তি আছে বলে ধারণা করা হচ্ছে ।যদিও তার সঠিক কারণ এখনও জানা যায় নি।
২০১৫ সালে মে মাসে জন্মগ্রহণের পর থেকে অস্কার অগণিত রক্তপরীক্ষা, সাপ্তাহিক রক্ত এবং প্ল্যাটলেট ট্রান্সফিউশন, ছয়বার অস্থিমজ্জা পরীক্ষা এবং দুইবার ত্বকের টিস্যু পরীক্ষা করা হয়েছে ।
এরপর ১৫ সপ্তাহ বয়সে Langerhans cells histiocytosis ধরা পরার আগে মাত্র ১১ সপ্তাহ বয়স থেকে সাপ্তাহিক কেমোথেরাপি সেশন শুরু হয়। কেমোথেরাপি এবং স্টেরয়েড দিয়ে চিকিৎসা করা সত্ত্বেও অস্কার এর দাগ রয়ে গেছে। স্থানীয় ডাক্তাররা এক বিভ্রান্তিকর পরিস্থিতির শিকার কারণ তারা জানে না কিভাবে এ রোগের অগ্রগতি হবে।
বর্তমানে অস্কারকে Royal Stoke University Hospital এ সার্বক্ষনিক পর্যবেক্ষণ এ রাখা হয়েছে এবং জাতীয় বিশেষজ্ঞদের থেকে অভিজ্ঞ মতামত জন্য অপেক্ষা করা হচ্ছে।
সুত্র ঃ ডেইলিমেইল
তথ্য এবং অনুবাদে ঃ আফসারা নওয়ার মুনা,সাফেনা উইমেন্স ডেন্টাল কলেজ