প্রসংগঃ চিকিৎসকের কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা প্রসঙ্গে –
গতকাল ৮ এপ্রিল,২০১৯ ইং সকাল ১১ টায় প্রায় ১০০ জন চিকিৎসকের উপস্হিতিতে ঢাকা মেডিকেল কলেজের সার্জারি কনফারেন্স রুমে একটি মত বিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সভায় চিকিৎসকদের উপর চলমান সহিংসতা ও করণীয় বিষয়ে সভার মতামত চাওয়া হয়। সভায় বক্তারা প্রায় সকলেই চলমান সহিংসতায় বর্তমান স্বাস্হ্য প্রসাশনের নিস্ক্রিয় ভূমিকায় ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করার পাশাপাশি অবিলম্বে হাসপাতালগুলোতে (সরকারি এবং বেসরকারি) চিকিৎসা সংক্রান্ত সকল জনবলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করণে নিম্নের প্রস্তাবনা সমূহ তুলে ধরেনঃ
১. চিকিৎসকদের নিরাপত্ত বিধানে স্বাস্হ্য প্রসাশনকে দায়িত্ব নিতে হবে। সরকারী হাসপাতালে চিকিৎসক তার দায়িত্ব পালন কালে হামলার স্বীকার হলে সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ বাদী হয়ে মামলা করতে হবে এবং তার সমস্ত ব্যয় কতৃপক্ষকে বহন করতে হবে এবং বেসরকারী হাসপাতালে এধরনের ঘটনার জন্য মালিকগণ মামলার বাদী হবেন এবং খরচ বহন করবেন।
২. স্বাস্হ্য অধিদপ্তরে মামলা পরিচালনার জন্য এবং ঘটনার তরিৎ সমাধানের আলাদা সেল গঠন করতে হবে।
৩. প্রায় প্রতিটি হাসপাতালে আসনের তুলনায় রোগীর সংখ্যা অনেক বেশী। রোগীর সাথে আগত দর্শনাথী হাসপাতালে প্রায় সময় অরাজক পরিস্হিতির সৃষ্টিকরে এবং তাতে রোগীর চিকিৎসা ব্যাবস্হাপনা প্রায় ব্যাহত হয়। তাই অবিলম্বে প্রতিটি হাসপাতালে কার্যকরভাবে দর্শনার্থী রেস্ট্রিকশন করতে হবে। কোন রোগীর সাথে একজনের বেশী দর্শনার্থী যাতে প্রবেশ না করে স্বাস্হ্য প্রশাসনকে ব্যাবস্হা গ্রহণ করতে হবে।
৪. প্রতিটি হাসপাতলের সেবা সম্পর্কে জনগণকে অবহিত করতে হবে। আমরা মনে করছি, সেবা সম্পর্কে ঢালাও মন্তব্যের কারণে ডাক্তারদেরকে জনগণের মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে এবং স্বাস্থ্য প্রশাসন কখনোই এহেন মন্তব্য বা কর্মকান্ডকে মনিটর করেনি, যার ফলে চিকিৎসা পেশার সাথে সংশ্লিষ্টগণ বারবার নাজেহাল হচ্ছেন। এর বিরুদ্ধে মনিটরিং ব্যবস্হাসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্হা গ্রহণ করতে হবে।
৫.প্রতিটি সরকারি হাসপাতালের আউটডোর ও ইমার্জেন্সির সামনে ডিজিটাল বোর্ড স্থাপন হাসপাতালে বেড সংখ্যা এবং ভর্তি রুগীর সংখ্যা (যা তিন থেকে চারগুন হয়) এবং আউটডোরে চিকিৎসা প্রাপ্ত রোগীর সংখ্যা (ঢাকা মেডিকেলের আউটডোরে দৈনিক প্রায় চারহাজার রোগীর চিকিৎসা পায়) প্রকাশ করতে হবে।এতে সরকারী মেডিকেলে চিকিৎসার ব্যাপারে জনগণের ভুল ধারণার কিছুটা হলেও অবসান ঘটবে।
৬. ইন্টার্ন চিকিৎসকদের চলমান আন্দোলনকে সহমর্মিতার সহিত দেখার আহবান জানানোর পাশাপাশি তাদের দাবির প্রতি একাত্ততা ঘোষনা করা হয়েছে এই সভায়।
৭. হাসপাতালে অনাকাঙ্খিত ঘটনা রোধে অফিস প্রধানগণকে ম্যাজিস্ট্রেসি প্রদান
৮. দাবীর স্বপক্ষে বিভিন্ন পর্যায়ে জনমত তৈরী
##কর্মপরিকল্পনা:
এ সপ্তাহের মধ্যেই প্রতিনিধিদল ঢাকার সব মেডিকেলের নেতৃবৃন্দের সাথে বসবেন এবং ঢাকার বাইরে সবার সাথে যোগাযোগ করবে।ইতিমধ্যে বিএসএমএমইউ, ডিএমসিতে তারা বসেছেন । আরো বেশ কয়েকবার বসে সুনির্দিষ্ট কর্মসূচী নেয়াটা খুবই জরুরি।এটা কেবল সূচনামাত্র।দল মত,গ্রুপিং,লবিং এর উর্ধ্বে উঠে গতকাল ৮/৪/১৯ তারিখে ঢাকা মেডিকেলে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
#আগামী_১২এপ্রিল_২০১৯_ইং তারিখে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেলে আলোচনা সভা বা ওপেন ডিস্কাসন মিটিং অনুষ্ঠিত হবে যেখানে সকলের মতামতের ভিত্তিতে কর্মসূচী দেয়া হবে।
#আর_নয়_কালো_ব্যাজ_বা_মানববন্ধন_কর্মসূচী
বরং
সুদূরপ্রসারী কোন স্টেপ বা পদক্ষেপ যা ডাক্তারদের কর্মস্থলের নিরাপত্তাকে সুনিশ্চিত করতে পারে-সেজন্য এই কর্মসূচি। এই কর্মসূচিতে ঢাকা মেডিকেল,সলিমুল্লাহ মেডিকেলের পরপরই সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসকদের সাথে মতবিনিময়ের পর বিভিন্ন সোসাইটির (সোসাইটি অব মেডিসিন,সার্জারি,গাইনী,বিসিপিএস) নেতৃবৃন্দকেও যাতে এই কর্মসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করে ডাক্তারদের নিরাপদ কর্মস্থলের দাবী যাতে আরো জোরদার করা যায়-সে ব্যাপারেও আলোচনা করা হবে।
পরিশেষে সিনিয়রদের কিছু কথা না বললেই নয় ‘ নগর পুড়লে দেবালয় কি বাদ যায়। ‘জুনিয়ররা এমনকি সদ্য পাশ করা ইন্টার্ণরা আপনাদের সব বিপদে আপদে হাজারো সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও পাশে দাঁড়াচ্ছে । অথচ তাদের যৌক্তিক আন্দোলনে অাপনাদের সামান্য বিবৃতিটুকুও পাওয়া যাচ্ছে না।আজকে একজন জুনিয়র যখন বিনা কারণে মার খাচ্ছে , মারটা কি আপনার গায়ে লাগছে না ? মন্ত্রণালয়ে জুবুথুবু হয়ে বসে থেকে পোস্ট পোস্টিং নিয়ে কাড়াকাড়ি করে যদি বাকি জীবনটা কাটিয়ে দেয়া আপনাদের একমাত্র উদ্দেশ্য হয় , তাহলে বিনীত ভাবে বলব আপনারা অবসরে যান।
আমরা আর আমাদের পেশাকে অসম্মানিত হতে দিব না।
আপনাদের সকলের সুচিন্তিত মতামত প্রত্যাশা করছি।সেটা এখানেও হতে পারে কিংবা ১২ তারিখে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেলের মিটিংয়েও হতে পারে।
ডা. মারযূক
কে ৬৩
ডিএমসি
নাক,কান,গলা রেসিডেন্ট
ঢামেকহা।