প্ল্যাটফর্ম রিপোর্টঃ আজ ১৮ ই মে, ২০১৯ ভোররাতে সেহেরির পর, ফরিদপুর মেডিকেল কলেজের ইন্টার্ন চিকিৎসক ডা. আদনান ইব্রাহিম, ডা. রায়হানুল ইসলাম এবং এফ-২৪ ব্যাচের শিক্ষার্থী রেদোয়ান এর উপর মর্মান্তিক এবং ন্যাক্কারজনকভাবে সন্ত্রাসী হামলা হয়েছে। তাদেরকে ছোরা দিয়ে কুপিয়ে মারাত্মক ভাবে আহত করেছে, ছাত্রলীগের স্থানীয় নেতা ও সন্ত্রাসীরা।
ডা. আদনান ইব্রাহিম হাসপাতালে দায়িত্বরত অবস্থায় ছিল। রোজা রাখার উদ্দেশ্যে সেহেরি করার পরে, ফরিদপুর পুরাতন বাসস্ট্যান্ডের (ভাঙা রাস্তার মোড়) পাশে চা খাওয়ার সময়, সেখানে আসেন কয়েকজন নেতাকর্মী।
সিগারেট খাওয়াকে কেন্দ্র করে ডা. আদনান ইব্রাহিম এর উপর অতর্কিত হামলা চালায় তার সাথে থাকা লোকজন। চড় থাপ্পড় এবং কাঠ দিয়ে অমানসিক ভাবে মারা শুরু করে। বাঁধা দিতে গেলে, ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি ডা. রায়হানুল ইসলাম এবং ফমেক শিক্ষার্থী রেদোয়ানকে ১০-১৫ জন মিলে স্ট্যাম্প এবং কাঠ দিয়ে মেরে গুরুতরভাবে আহত করে।
মেরে ফেলার উদ্দেশ্যে এক পর্যায়ে ছুড়ি বের করে, এলোপাতাড়ি ভাবে ছুরিকাঘাত করে। দৌড় দিয়ে সেখান থেকে চলে আসতে চাইলে, ডা. আদনান এর বাম পায়ে কয়েকটি জায়গায় ‘স্ট্যাব’ করে এবং গুরুতর জখম হয়। ঐদিকে কাঠ দিয়ে মারার এক পর্যায়ে রেদোয়ান এর পিঠে এবং শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ছুরিকাঘাত করে!
গুরুতর আহত অবস্থায়, ডা. আদনান এবং রেদোয়ান’কে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তারা হাসপাতালের কেবিন ব্লকের ডক্টরস সিক রুমে আহতাবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
দায়িত্বরত চিকিৎসক এবং নার্সের সাথে কথা বলে জানা যায়, দুইজনের অবস্থা এখনও আশংকাজনক। আদনান এর প্রচুর রক্ষন হয়েছে। তাই, তাকে এক ব্যাগ রক্ত দেয়া হয়েছে। ডান হাত ভেঙে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এক্সরে রিপোর্টের জন্য অপেক্ষা করা হচ্ছে।
রেদোয়ান এর পিঠের আঘাত কতটা গুরুতর এবং তা ফুসফুসকে ফুটো করেছে কি না, তা এক্সরে রিপোর্ট পাওয়ার পর বোঝা যাবে।
এই ঘটনার বিষয়ে কলেজ এবং হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এর বক্তব্য জানতে, ফোন দেয়া হলে নাম্বার বন্ধ পাওয়া যায়।
ফরিদপুরের সাধারন চিকিৎসক এবং চিকিৎসা শিক্ষার্থীরা জানায়, দীর্ঘ দিন ধরে ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের অবাধ চলাফেরায় এবং ক্যাম্পাসের যেকোন বিষয়ে তাদের নগ্ন হস্তক্ষেপ এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার পর, ব্যবস্থা নেয়া হয়েছিল। কিন্তু সেই ব্যবস্থায়ও কমছে না, ক্যাম্পাসে স্থানীয় সন্ত্রাসীদের চলাফেরা। প্রতিবাদ করলে শুনতে হয় হুমকি ধামকি। এই ঘটনা তারই ফলশ্রুতিতে হয়েছে বলে তারা মনে করেন। হাসপাতাল এবং কলেজ প্রশাসন স্থানীয় এই সন্ত্রাসীদের হাতে জিম্মি এবং ভয় পায়। তাই, কলেজ প্রশাসনের পক্ষে কোন যথাযথ পদক্ষেপ নেয়া সম্ভব হয় না। ছোরা দিয়ে গুরুতর ভাবে জখম করা, এই ন্যাক্কারজনক হামলার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করে তারা।
এই সমস্যা উত্তরনে সাধারন শিক্ষার্থীরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আস্থাভাজন, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় এবং প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের প্রাক্তন মাননীয় মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন এমপি এর হস্তক্ষেপ কামনা করেছে।
প্ল্যাটফর্ম নিউজ ডেস্ক/টিআর