১৫ অক্টোবর বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পালিত হয় বিশ্ব হাত ধোয়া দিবস। ভিয়েনা জেনারেল হাসপাতালের হাঙ্গেরিয়ান চিকিৎসক ডাঃ ইগনাজ সেমেলওয়েজকে হাত পরিচ্ছন্নতার জনক বলা হয়।
১৮৪৬ সালে তিনি লক্ষ্য করেন, যেসকল নারীরা
ধাত্রীর মাধ্যমে বাচ্চা জন্ম দেন, তাদের চেয়ে যারা হাসপাতালে বাচ্চা জন্ম দেন তাদের জ্বর হচ্ছে বেশি এবং মৃত্যুর হার ও বেশি। তিনি সিদ্ধান্ত নেন যে, তিনি বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন কেন এ সমস্যা হচ্ছে।
তিনি লক্ষ্য করেন, ডাক্তার এবং মেডিকেল শিক্ষার্থীরা ময়নাতদন্ত শেষে সরাসরি ম্যাটারনিটি ওয়ার্ডে চলে যেতেন। ফলে তাদের হাতে মৃতদেহের জীবাণু রয়ে যেত। ধাত্রীরা এধরনের কোন সার্জারি করতেন না।
উক্ত ঘটনার প্রেক্ষিতে ডাঃ ইগনাজ সেমেলওয়েজ হাসপাতালের ডাক্তারদের ক্লোরিন ব্যবহার করে হাত ধোয়া চালু করেন। ফলে নাটকীয় ভাবে তার হাসপাতালে মাতৃমৃত্যুর হার কমে যায়। এতে প্রমাণিত হয়, পরিষ্কার হাত ইনফেকশন প্রতিরোধ করে। কিন্তু চিকিৎসকগণ তার এ ধারণা কে প্রত্যাখ্যান করেন। তারা অভিযোগ করেন তিনি ডাক্তারদের দোষী সাব্যস্ত করার জন্য এ কথা বলছেন। ইনফেকশনের জন্য তারা দূষিত পানিকে দায়ী করেন। সোমেলওয়েজ তারপরও ইউরোপীয়ান ডাক্তারদের বোঝানোর চেষ্টা করেন, হাত ধোয়া কতটা জরুরী। কিন্তু এত চেষ্টার কোনো ফল পাওয়া যায় নি।
কয়েক বছর পর, ইতালির স্কুটারিতে ক্রিমিয়ান যুদ্ধের সময় ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেল হাত ধোয়ার উপর গুরুত্ব দেন। তখন মানুষ বিশ্বাস করত, পঁচা গলিত পদার্থের দূষিত বাষ্প থেকে রোগ ছড়ায়। তাই ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেল হাত ধোয়ার প্রচলন করেন। এর ফলে ইনফেকশন অনেক কমে যায়।
দুঃখের বিষয় সেমেলওয়েজ ও নাইটিঙ্গেল এত চেষ্টার পরও হাত ধোয়ার প্রচলন করতে পারেন নি। ১৯৮০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ এবং প্রতিরোধ কেন্দ্র খাদ্যজনিত রোগ ছড়ানোর কারণ হিসেবে পরিচ্ছন্নতাকে দায়ী করেন এবং হাত পরিচ্ছন্নতার জন্য গাইডলাইন প্রণয়ন করেন।
সাম্প্রতিক সময়ে, সাবানসহ অন্যান্য উপকরণ দিয়ে হাত ধোয়া জনপ্রিয়তা পেয়েছে।
তথ্যসূত্র: Global Hand Washing Partnership
স্টাফ রিপোর্টার/তামান্না ইসলাম