৩০ অক্টোবর ২০১৯:
গ্রামে জমি দখল নিয়ে দুপক্ষের মারামারির শিকার হলে পেটে ধারালো অস্ত্রবিদ্ধ হয় এক ২৫ বছর বয়সী যুবক। উপায়ন্তর না দেখে উপজেলা/সদর হাসপাতাল থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ, ক্যাজুয়ালিটি বিভাগ রোগীর প্রয়োজনীয় রক্ত সঞ্চালন, ঔষধ ও স্যালাইন দিয়ে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণজনিত শক থেকে রোগীকে স্বাভাবিক রক্তচাপে ফিরিয়ে আনে।
অপারেশন করতে রোগীর পেট কাটার পর দেখা যায়, অস্ত্রটি পাকস্থলীর পেছন থেকে পিত্তথলি এবং যকৃতের ডান দিকের অংশ কেটে অগ্নাশয়ের প্রায় দুইতৃতীয়াংশ ছিঁড়ে নিম্ন মহাশিরা হয়ে মেরুদন্ডের হাড়ে গিয়ে বিঁধেছে। এ অবস্থা রিপেয়ার করতে সংশ্লিষ্ট বিষয়ের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে বিশেষায়িত ইউনিট বা সরঞ্জামাদিসহ অভিজ্ঞ ও পারদর্শী লোকবল দরকার যা ঐ মুহূর্তে ঢামেকে ছিল না। কিন্তু যা জরুরি – রক্তপাত বন্ধ করা এবং রক্তক্ষরণ জনিত তীব্র রক্তশূন্যতা থেকে রোগীকে বাঁচিয়ে তোলা, পরবর্তী চিকিৎসার জন্য প্রস্তুত করা, সময় নষ্ট না করে দ্রুত তাঁকে উপযুক্ত স্থানে প্রয়োজনীয় চিকিৎসার জন্য প্রেরণ করা, একইসাথে রোগীর স্বজনদেরকে ব্যবস্থাপনা নিয়ে প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে আশ্বস্ত করা, এগুলো সাফল্যের সাথে করেন ঢামেক ক্যাজুয়ালটির চিকিৎসকরা।
তাঁরা যোগাযোগ করে পরবর্তী অস্ত্রোপচারের জন্য জাতীয় হৃদরোগ ইন্সটিটিউটে রোগীকে স্থানান্তর করেন। জাতীয় হৃদরোগ ইন্সটিটিউটের চিকিৎসকগণের সঙ্গে যোগ দেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকবৃন্দ। অপারেশন থিয়েটারে শুরু হয় এক অসামান্য কর্মযজ্ঞ।
জাতীয় হৃদরোগ ইনষ্টিটিউটের ভাস্কুলার বিভাগের আবাসিক সার্জন ডা. মোখলেসুর রহমান সজল, ভাস্কুলার সার্জারির সহযোগী অধ্যাপক ডা. এনামুল হাকিম এবং পাশ্ববর্তী হাসপাতাল শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের হেপাটোবিলিয়ারী সার্জারির সহযোগী অধ্যাপক ডা. আখতার আহমেদ শুভ ও তাঁর টিম একত্রে মাল্টি ডিসিপ্লিনারি সার্জারিটি সম্পন্ন করেন।
হেপাটোবিলিয়ারী সার্জন পাকস্থলির পেছন থেকে যকৃতের ডান অংশ এবং অগ্নাশয়ের ছিঁড়ে যাওয়া অংশ মেরামত করে পিত্তথলি অপসারন করেন। ভাস্কুলার সার্জন নিম্নমহাশিরার সামনের ও পেছনের দেয়াল মেরামত করেন। এছাড়াও সার্জারি চলাকালীন এনেস্থেসিওলজিষ্ট হিসেবে ডা. শরীফ সামিরুল আলম ও ডা. মোনালিসা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
তথ্যসূত্র: ডাঃ মোঃ ইউসুফ হোসেন
স্টাফ রিপোর্টার/ হৃদিতা রোশনী