১। জেমস পি গ্র্যান্ট স্কুল অফ পাবলিক হেলথে ভর্তির জন্য লিখিত পরীক্ষার জন্য কি পড়তে হয়?
উঃ লিখিত পরীক্ষা হয় অনেকটা জিআরই পদ্ধতিতে। এখানে থাকে গণিত এবং ইংরেজি ভাষার দক্ষতা যাচাই করা হয়। জিআরইর প্রস্তুতি থাকলে এতে সুবিধা হয়। আর থাকে একটি কম্প্রিহেনশন রাইটিং। সেখানে একটি সমস্যা (সাধারণত জনস্বাস্থ্য বিষয়ক) দেওয়া থাকে। সেটার আলোকে লিখতে হয়।
২। লিখিত পরীক্ষায় ভালো করলেই কি চান্স পাব?
উঃ না। লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে পরের ধাপ গ্রুপ ভাইভাতে অংশ নিতে হয়। গ্রুপ ভাইভাতে ৬/৭ জন করে একটি গ্রুপ করা হয়। সেখানে একটি জনস্বাস্থ্য বিষয়ক টপিক দেওয়া হয়। নিজের মতামত প্রকাশ করতে হয়। সাথে গ্রুপের কারও মতামত যদি সমর্থন বা বিরোধিতা করতে হয়, কেন করছেন সেটা জানতে চাওয়া হয়। এখানে নিজের মুখ ফুটে কথা বলাটাই বেশি জরুরি এবং অনেকের ভিতর নিজেকে প্রকাশ করতে পারাটা বেশি দরকার।গ্রুপ ভাইভাতে উত্তীর্ণ হলে একক ভাইভাতে অংশ নিতে হয়। এখানে নানা প্রশ্ন থাকে। আপনার ব্যাকগ্রাউন্ড, কেন জনস্বাস্থ্যে পড়াশুনা করতে চান, জনস্বাস্থ্য পড়ে কি করবেন এইসব বিষয় নিয়ে জানতে চাওয়া হয়। জনস্বাস্থ্যে কাজ করার অভিজ্ঞতা থাকলে এখানে সেটা সম্পর্কেও জিজ্ঞাসা করা হয়। মনে রাখবেন জনস্বাস্থ্যে কাজ করার অভিজ্ঞতা আপনাকে ভর্তি পরীক্ষায় অনেক কাজে দিবে।
৩। ইংরেজি আর ম্যাথ পড়ব কোথা থেকে?
উঃ জিআরইর বই বাজারে পাওয়া যায়। সেখান থেকে প্রস্তুতি নিতে হবে। এটাই সহজ সমাধান। এছাড়া কম সময়ে প্রস্তুতির জন্য আইবিএর এমবিএ গাইড পড়তে পারেন।
৪। জেমস পি গ্র্যান্ট স্কুল অফ পাবলিক হেলথে ভর্তির জন্য কি আইইএলটিএস বা টোফেল মাস্ট?
উঃ না, মাস্ট না। আইইএলটিএস বা টোফেল আপনাকে ভর্তির এক্সট্রা যোগ্যতা দিবে।
৫। জেমস পি গ্র্যান্ট স্কুল অফ পাবলিক হেলথে ভর্তির ফি কত?
উঃ এখন পর্যন্ত সাড়ে সাত লাখ টাকা। দুই বছর আগে চার লাখ বিশ হাজার টাকা ছিল। সামনে আরও বাড়তে পারে।
৬। জেমস পি গ্র্যান্ট স্কুল অফ পাবলিক হেলথে ভর্তির জন্য কি স্কলারশিপ দেওয়া হয়।
উঃ লের নিজস্ব কিছু স্কলারশিপ রয়েছে। ভর্তি পরীক্ষায় ভালো করলে পরিবারের অর্থনৈতিক অবস্থা বিবেচনা করে পূর্ণ বা অর্ধ স্কলারশিপ দেওয়া হয়। এছাড়া বিশ্ববিখ্যাত কিছু সংস্থার স্কলারশিপ থাকে। যেমন ২০১২ থেকে ২০১৪ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র সরকার যুক্তরাষ্ট্র আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা (ইউএসএআইডি) মাধ্যমে ‘ডেভেলপিং দি নেক্সট জেনারেশন অব পাবলিক হেলথ এক্সপার্টস ইন বাংলাদেশ’ প্রকল্পের আওতায় ৭৯ জন শিক্ষার্থীকে স্কলারশিপ (পূর্ণ বা আংশিক) দেওয়া হয়েছিল। বর্তমানে রয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার টিডিআর স্কলারশিপ। দেশী বিদেশী শিক্ষার্থী এই স্কলারশিপ পেতে পারেন মেধার ভিত্তিতে। কিন্তু সবাই এমন সৌভাগ্যবান নাও হতে পারেন। সে কথাটা মাথায় রাখতে হবে।
৭। জেমস পি গ্র্যান্ট স্কুল অফ পাবলিক হেলথে ভর্তির জন্য কি স্কলারশিপ দেওয়া হয়। জব এক্সপেরিয়েন্স মাস্ট?
উঃ না। জেপিজিতে ভর্তির ক্ষেত্রে সব সময় জব এক্সপেরিয়েন্স লাগে না। কিন্তু স্কলারশিপ পেতে গেলে জব এক্সপেরিয়েন্স+ পাবলিকেশন+ ভর্তি পরীক্ষার রেজাল্ট সবই দরকারি।
জেপিজির এমপিএইচ প্রফেশনাল ডিজাইন ফলো করে। তাই অনেক সময় ফ্রেশ গ্র্যাজুয়েটরা খাবি খায়। এই জন্য জেপিজি ফ্রেশ গ্র্যাজুয়েটের থেকে প্রফেশনাল এক্সপেরিয়েন্স সহ ক্যান্ডিডেট চায়। কিন্তু ফ্রেশ গ্র্যাজুয়েট চান্স পায় না এমন না কিন্তু। বরং হিসাব করলে বেশির ভাগই ফ্রেশ গ্র্যাজুয়েট। কিন্তু তখন স্কলারশিপ পাওয়া যাবে কিনা জানা নাই।
৮। জেমস পি গ্র্যান্ট স্কুল অফ পাবলিক হেলথে পড়লেই কি আমি বাইরে পিএইচডি করতে যেতে পারব?
উঃ আপনি যেখানেই পড়েন আপনাকে রেজাল্ট ভালো করতে হবে। জেমস পি গ্র্যান্ট স্কুল অফ পাবলিক হেলথে পড়লেই আপনাকে পিএইচডি মুখে তুলে দিয়ে যাবে এই কথা ভাবা ভুল এবং বোকামি। সাথে জব এক্সপেরিয়েন্স, সিজিপিএ, পাবলিকেশন সবই লাগে।
৯। জেমস পি গ্র্যান্ট স্কুল অফ পাবলিক হেলথের নাম এত বিখ্যাত কেন?
উঃ এই অঞ্চলের উন্নয়নশীল দেশের যেকোন পাবলিক হেলথ স্কুলের চেয়ে জেমস পি গ্র্যান্ট স্কুল অফ পাবলিক হেলথের ফ্যাকাল্টি অনেক বেশি সমৃদ্ধ। রিচারড ক্যাশ, অ্যালেনা এডামস, স্তিফেন লুবির মত বিশ্বখ্যাত গবেষকরা ক্লাশ নেন। ক্লাশ নেন আইসিডিডিআরবির সেন্টার ডিরেক্টররা। ক্লাস নেন ব্র্যাকের জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা এখানে প্রচুর ফিল্ড ভিজিট হয়। এখান কোর্সের ২য় দিনেই ফিল্ড ভিজিটে যেতে হয়। ২০০৭ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা তাদের নিউজ বুলেটিনে জেমস পি গ্র্যান্ট স্কুল অফ পাবলিক হেলথকে উন্নয়নশীল বিশ্বের সেরা ৬ টি পাবলিক হেলথ স্কুলের একটি হিসেবে সম্বোধন করে। এই স্কুলে বাংলাদেশী ছাড়াও বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে শিক্ষার্থী পড়াশুনা করতে আসেন। এর ফলে গ্লোবাল প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্লাসরুম। এই জন্যই এর এত খ্যাতি।