১ ডিসেম্বর ২০১৯
মাইগ্রেন মাথাব্যথা কি?
মাইগ্রেন মাথাব্যথা হচ্ছে এক ধরনের প্যারোক্সিসমাল মাথাব্যথা যেখানে রোগী তার মাথার একপাশে তীব্র ব্যথা অনুভব করেন, একই সাথে বমি এবং দৃষ্টিজনিত সমস্যাও থাকতে পারে।
কি কারণে হয়?
১। ধারণা করা হয়, দুশ্চিন্তা বা অন্য কোন চাপে থাকাকালীন সময়ে মাইগ্রেন আ্যটাক বেশী হয়।
২। মহিলাদের হরমোনাল পরিবর্তন। ওরাল কনট্রাসেপ্টিভ পিল (জন্মবিরতিকরণ বড়ি) খেলে কিংবা হরমোন রিপ্লেসমেন্ট থেরাপি নিলে অনেকের মাইগ্রেন বেড়ে যেতে পারে।
৩। কিছু খাবার যেমন চকোলেট, চিজ, বেশি লবণযুক্ত খাবার, ক্যাফেইন ইত্যাদি মাইগ্রেন আ্যটাক করার জন্য দায়ী।
৪। কোনো বেলার খাবার বাদ দেয়া, দীর্ঘক্ষণ না খেয়ে থাকা মাইগ্রেন কে বাড়িয়ে দিতে পারে।
৫। উজ্জ্বল আলো, উচ্চশব্দ।
৬। না ঘুমানো বা অতিরিক্ত ঘুম।
৭। আবহাওয়ার পরিবর্তন।
মাইগ্রেনের লক্ষণ
১। মাথার এক পাশে ব্যথা
মাইগ্রেনের মাথার ব্যথার প্রধান এবং অন্যতম লক্ষণ হল মাথার একপাশে ব্যথা করা। মাথার একপাশে তীব্র ব্যথা হবে। ঘন ঘন ঘাড়সহ মাথার একপাশে তীব্র ব্যথা করবে। অনেক সময় এই ব্যথা সম্পূর্ণ মাথায় ছড়িয়ে পড়তে পারে।
২। আবছা দেখা, অস্বস্তিকর অনুভূতি
কিছু মানুষ মাইগ্রেনের ব্যথা শুরু হওয়ার আগে ৩০ মিনিট থেকে ১ ঘন্টা পর্যন্ত চোখে আবছা দেখে থাকেন। এই আবছাভাব কেটে যায় মাথা ব্যথা শুরু হওয়ার পর। Dr. Calhoun মতে “আপনি চোখের সামনে কিছু বক্ররেখা, কিছু খাঁজকাটা লাইন দেখতে পারেন”।
৩। বমি বমি ভাব
মাইগ্রেনের ব্যথায় খুব সাধারণ একটি সমস্যা হল বমি বমি ভাব হওয়া অথবা বমি হওয়া। কিছু মানুষের বমি বমি ভাব হতে পারে, আবার কিছু মানুষের ডায়রিয়া বা হজমের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
৪। শব্দ এবং উজ্জ্বল আলো
উচ্চ শব্দ, উজ্জ্বল আলো যদি মাথা ব্যথা বাড়িয়ে দেয়, তবে এটি মাইগ্রেন হতে পারে। এমনকি মাথা ব্যথা যদি চোখসহ করে থাকে, তবে এটি মাইগ্রেন হতে পারে।
৫। বিষন্নতা
মাথা ব্যথার সাথে বিষণ্ণ এবং হতাশবোধ মাইগ্রেনের একটি অন্যতম লক্ষণ।
৬। অনিয়মিত ঘুম
ঘুম থেকে উঠার পর ক্লান্তবোধ করা, অনিয়মিত ঘুম মাইগ্রেনে ব্যথার আরেকটি লক্ষণ। বেশিরভাগ মাইগ্রেনের রোগীরা মাথা ব্যথার কারণে অনিদ্রাজনিত সমস্যায় ভুগে থাকেন।
৭। পানিভর্তি চোখ এবং বন্ধ হওয়া নাক
মাথা ব্যথার পাশাপাশি নাক বন্ধ বা চোখ ছলছল করা মাইগ্রেনের ব্যথার একটি অন্যতম লক্ষণ।
ব্যথা কতক্ষণ থাকে?
এটা সাধারণত ৪-৭২ ঘন্টা পর্যন্ত থাকতে পারে।
এখানে ব্যথা আস্তে আস্তে বাড়তে থাকে, হঠাৎ করে না।
আর এই উপসর্গের সঙ্গে ক্লান্তি, ঘন ঘন প্রস্রাব, বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া, আলো বা আওয়াজে অসুবিধা, ঘামা, কথা বলতে অসুবিধা, খিদে চলে যাওয়া, ইত্যাদি থাকতে পারে। এমনকি মাইগ্রেন চলে যাবার পরও ঘাড়ে ব্যথা, ঘুম ঘুম ভাব, মাথাটা জ্যাম হয়ে থাকার উপসর্গ সঙ্গে সঙ্গে না মিলিয়ে যেতে পারে।
তথ্যসূত্র : ডা. আব্দুল্লাহ আল জোবায়ের
স্টাফ রিপোর্টার/ ফাহমিদা হক মিতি