সিলেট উইমেন্স মেডিক্যাল কলেজের ইন্টার্ন চিকিৎসক ডা. নাজিফা আনজুম নিশাতকে ছোরা দেখিয়ে হত্যা ও ধর্ষণের হুমকি দেওয়ার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় ছাত্রলীগ নেতা সারোয়ার হোসেন চৌধুরীককে আজ গ্রেপ্তার করেছিল, পুলিশ। তিনি দ্বায়িত্বরত অন্যান্য চিকিৎসক, নিরাপত্তাপ্রহরী ও লিফটম্যানকেও লাঞ্চিত করেন।
আজ দুপুর সাড়ে বারোটার কিছুর পর নগরীর কোর্ট পয়েন্ট এলাকা খেকে তাকে আটক করা হয়।
আটকের ৪৫ মিনিট এর মধ্যেই হত্যা ও ধর্ষণের হুমকি দেওয়ার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় জামিন পেয়েছেন দক্ষিণ সুরমা উপজেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি সারোয়ার হোসেন চৌধুরী।
মঙ্গলবার (১৪ মে) দুপুরে সারোয়ার গ্রেফতার হওয়ার আগেই সিলেট অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মোস্তাইন বিল্লাহ আদালতে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করলে আদালত তার জামিন মঞ্জুর করেন। এ কারণে আটকের ৪৫ মিনিটের মাথায় তিনি ছাড়া পান।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিলেট অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বেঞ্চ সহকারী আইয়ুব আলী। তিনি জানান, আদালত শুনানি শেষে ছাত্রলীগ নেতা সারোয়ার হোসেনের জামিন মঞ্জুর করেন।
এর আগে তাকে গ্রেফতার করার দাবিতে গতকাল আন্দোলনের নতুন কর্মসূচিও ঘোষণা করেছিললো চিকিৎসরা। সোমবার নগরীর মিরবক্সটুলাস্থ উইমেন্স মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই কর্মসূচি ঘোষণা করন ডা. ইফাত আরা চৌধুরী।
তারা আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে সন্ত্রাসী সারোয়ার হোসেন চৌধুরীর বিরুদ্ধে মামলাগ্রহন ও গ্রেফতারের দাবীতে সিলেটের সকল মেডিকেলের ইন্টার্ণ ডাক্তারদের কর্মবিরতি শুরুর আহ্বান জানান।
তিনি জানান, উইমেন্স মেডিকেল কলেজের ইন্টার্ন ডাক্তাররা ঘটনার পর থেকে কর্মবিরতিতে রয়েছেন। এছাড়া তারা উইমেন্সের সব ডাক্তারকে সোমবার দুপুর আড়াইট থেকে কর্মবিরতিতে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানান। মঙ্গলবার (১৪ মে) সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত সিলেট বিভাগের সব মেডিকেলের সব ডাক্তারদের কর্মবিরতি, একই দিনে সিলেট বিভাগের সব বিশেষজ্ঞ ডাক্তারকে বিকাল ৪টা-৬টা পর্যন্ত প্রাইভেট প্র্যাকটিস বন্ধ রাখা, সকাল ১১টায় সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে মানববন্ধন এবং প্রতিবাদ সমাবেশে যোগদান, বিএমএ সভাপতি ও সম্পাদক, সিভিল সার্জন, ডেপুটি ডিরেক্টর (স্বাস্থ্য), বিভাগীয় পুলিশ কমিশনার ও জেলা প্রশাসক বরাবর স্বারকলিপি প্রদানের কর্মসূচিও গ্রহন করা হয়েছে।
এর আগে সোমবার দক্ষিণ সুরমা উপজেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি সারোয়ার হোসেন চৌধুরীকে প্রধান আসামি করে অজ্ঞাত আরও ৮-১০ জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের হয়। সোমবার (১৩ মে) রাতে মহানগর পুলিশের কোতোয়ালি থানায় মামলা দায়ের করেন সিলেট উইমেন্স মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. ফেরদৌস হাসান। এর আগে গত শনিবার (১১ মে) ইন্টার্ন চিকিৎসক ডা. নাজিফা আনজুম নিশাতের নিরাপত্তা চেয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি (নং-৬১৭ ) করেছিলেন ডা. ফেরদৌস হাসান।