বর্তমানে বাংলাদেশে যে কয়েকটি রোগের আকার ভবিষ্যতে আমাদের হুমকির মুখে ঠেলে দিতে পারে, তার একটি হচ্ছে “থ্যালাসেমিয়া” । এরই প্রেক্ষিতে আজ ০৬.০৬.২০১৫ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের মিলন হলে হয়ে গেল একটি দিনব্যাপী সেমিনার, যার নাম ছিল – Thalassaemia- Treatment and Beyond . আয়োজনে ছিল বাংলাদেশ থ্যালাসেমিয়া সমিতি, ইয়ুথ ক্লাব অফ বাংলাদেশ। সার্বিক সহযোগিতায় ছিল- চিকিৎসক এবং চিকিতসা-শিক্ষার্থীদের সব চেয়ে বড় প্রয়াস- প্ল্যাটফর্ম। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন অধ্যাপক কামরুল হোসেন খান, উপাচার্য, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়। সন্মানিত অতিথি ছিলেন জাতীয় অধ্যাপক এম আর খান। এছাড়াও বিশেষ অতিথি ছিলেন অধ্যাপক আবিদ হোসেন মোল্লা, অধ্যাপক আফিকুল ইসলাম, অধ্যাপিকা মাসুদা বেগম, অধ্যাপক চৌধুরী ইয়াকুব জামাল।
সকাল ১০ টায় পবিত্র কুরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। এরপরে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন করা হয়। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন প্রকৌশলী মোশাররফ হোসেন, এক্টিং প্রেসিডেন্ট, থ্যালাসেমিয়া সমিতি। এরপরেই থ্যালাসেমিয়া সমিতির একটি প্রেসেন্টেশন পরিবেশিত হয়। এরপর অধ্যাপক এম এ খান , (অধ্যাপক এবং বিভাগীয় প্রধান, হেমাটোলজি) – বোন ম্যারো ট্রান্সপ্লান্টেশনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। তিনি এ ক্ষেত্রে বোন-ম্যারো দাতার সঙ্কটের কথা আলোকপাত করেন। এ ছাড়াও থ্যালাসেমিয়া প্রতিরোধে সচেতনতা সৃষ্টির দিকেও মনযোগ দিতে বলেন। অধ্যাপক আফিকুল ইসলাম বোন-ম্যারো ট্রান্সপ্লান্টেশনের সুবিধার কথা বলেন যে, ৯০% ক্ষেত্রে ট্রানপ্লেন্টেশনে আরোগ্য লাভ সম্ভব। এ ছাড়াও একটি স্বতন্ত্র থ্যালাসেমিয়া ইন্সটিটিউট প্রতিষ্ঠার কথাও বলেন। এ ছাড়াও বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক আবিদ হোসেন মোল্লা, অধ্যাপিকা মাসুদা বেগম, অধ্যাপক চৌধুরী ইয়াকুব জামাল।
জাতীয় অধ্যাপক এম আর খান তার বক্তৃতায় বলেন যে, থ্যালাসেমিয়া সমিতির বয়স অনেক হলেও এ ক্ষেত্রে আমাদের অগ্রগতি সুবিধাজনক নয়। সবাই মিলে এগিয়ে আসলে আমরা হয়ত ভাল কিছু আশা করতে পারি। থ্যালাসেমিয়া প্রতিরোধে সবাই এগিয়ে আসবে- এই আশা ব্যক্ত করেন তিনি। ১৫-২০ বছর পর থ্যালাসেমিয়া-মুক্ত বাংলাদেশের স্বপ্নের কথাও তিনি জানান। প্রধান অতিথি অধ্যাপক কামরুল হোসেন খান ভবিষ্যতে থ্যালাসেমিয়া সমিতি আরো ভাল কাজ করবে, এই আশা ব্যক্ত করেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পরে চা-বিরতি দেয়া হয়। এরপরেই প্রথম সেশন পরিচালিত হয়, যার নাম ছিল – Thalassaemia- Supportive Treatment. এখানে বিভিন্ন দিক আলোকপাত করেন অধ্যাপক আনোয়ারুল করিম, ডা. এ কে এম আমিনুল মোর্শেদ, ডা. তাসনীম আরা, অধ্যাপক এম এ হানিফ টাবলু, ডা. আহমেদ মর্তুজা চৌধুরী । সেশন শেষে থ্যালাসেমিয়ার উপর একটি কুইজ অনুষ্ঠিত হয়। এরপরে মধ্যাহ্ন বিরতি দেয়া হয়।
মধ্যাহ্ন বিরতির পর দ্বিতীয় সেশন অনুষ্ঠিত হয়। এ সেশনের নাম ছিল – Thalassaemia- Curative treatment. এ সেশনে অধ্যাপক এম এ খান বোন ম্যারো ট্রানপ্লান্টেশন নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। এ ছাড়াও ঢাকা মেডিকেল কলেজে বোন ম্যারো ট্রান্সপ্লান্টেশন ইউনিটের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। এরই সাথে রক্ত-দান কর্মসূচী চলতে থাকে। সেশন শেষে চা-বিরতি দেয়া হয়।
চা-বিরতির পর সমাপনী এবং পুরষ্কার বিতরনী অনুষ্ঠান একই সাথে হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন ড. বদিউল আলম মজুমদার। তিনি বর্তমান প্রজন্মকে আরো বেশি সমাজ-সেবামূলক কার্যক্রমে এগিয়ে আসতে বলেন এবং সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে বক্তব্য শেষ করেন। এরপর ফটোসেশনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি হয়।
পরিমার্জনায়- মারেফুল ইসলাম মাহী