৫ এপ্রিল, ২০২০
বাংলাদেশে গত দুই মাসে করোনা নিয়ে যা হচ্ছে তাতে কয়েকটা জিনিস দিনের আলোর মতন পরিস্কারঃ
আমরা অদক্ষ। ইনইফিশিয়েন্ট। আমরা তোষামোদ করে করে দেশ চালাই। আমরা সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগি। মিথ্যা বলি। আমাদের মধ্যে সত্য ধামাচাপা দেয়ার একটা অসুস্থ টেন্ডেন্সি আছে।
আমাদের সর্বোচ্চ পর্যায়ে স্মার্ট ডিসিশন নেয়া লোক নাই।
আমরা ঘূর্নিঝড়ে যেরকম প্রস্তুতি নিই, করোনাতেও সেইরকম প্রস্তুতি নিয়ে বসে আছি। সব ডাক্তারের ছুটি বাতিল, বরাবরের মতই প্রস্তুতি মানে এইটুকু! কনভেনশনাল, যুক্তিহীন, বুদ্ধিহীন স্বিদ্ধান্ত!
প্রস্তুতির ঘাটতির কথা বলি, আমরা সময় হাতে পেয়েও কোন প্রস্তুতি নিই নাই। হাসপাতালে ট্রায়াজ সেন্টার খুলিনাই। আইসোলেশন ওয়ার্ডের কথা ভাবিনাই। সময় মতন পিপিই পর্যন্ত যোগাড় করিনাই। টেস্ট এভেইলবল করি নাই। শুধু সামনে দাঁড়ানো ডাক্তারকে দাবার ঘুটির মতন এগিয়ে দিয়েছি। আর সর্বোচ্চ পর্যায়ে থাকা মানুষ ঘরের কোণায় লুকিয়ে গেছে!
এখন কি করতে পারিঃ
যা হওয়ার হয়েছে। সে সব তো আমরা আর বদলে দিতে পারিনা।
এখন আমরা আমাদের সামনের দিনের জন্য কি করতে পারি?
দয়া করে ডাক্তারদের গ্রুপে গ্রুপে ভাগ করে ফেলেন। সার্জন, স্কিন স্পেলাশিট সহ সবাইকেই ফিজিশিয়ান হিসেবে ব্যবহার করুন। এখন আর স্পেশালিটির সময় নাই।
বিভিন্ন হেলথ কম্পলেক্স থেকে স্যাকমো দের নিয়ে আসুন বিভিন্ন হাসপাতালে। নার্সদের গ্রুপে গ্রুপে ভাগ করুন।
রোটা করে দেন।
সবাইকে একসাথে হাসপাতালে আনার দরকার নেই।
ডাক্তার, নার্স, স্যাকমো প্রিজার্ভ করুন। এক সপ্তাহ ডিউটি করিয়ে আর এক সপ্তাহ ছুটি দিয়ে দেন।
খুব শীঘ্রই আমরা ডাক্তার, নার্সের স্বল্পতায় ভুগবো।
লাগলে নতুন ডাক্তার রিক্রুট করুন। তাদেরকে রোটায় আনুন।
ডাক্তারদের প্রণোদনা দিন। সার্টিফিকেট দিন। বোনাস দিন। তাদেরকে উৎসাহিত করুন।
পিপিইর যৌক্তিক ব্যবহার নিশ্চিত করুন।
সব জায়গায় পূর্ণ পিপিই লাগেনা। কনফার্মড পেশেন্টদের সামনে পিপিই পরে যাওয়া নিশ্চিত করুন। আর সাস্পেক্টেড রোগীকে গ্লাভস, মাস্ক পরে দেখলেও চলে। সেসবের যোগান নিশ্চিত করুন।
ট্রেনিং দিয়ে দ্রুত আইটিউ এক্সপার্ট এর সংখ্যা বাড়ান।
ভেন্টিলেটর নিশ্চিত করুন। সংখ্যা বাড়ান। না থাকলে, বিশ্বের কাছে চান।
সব হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ড গুলোকে কোভিড ওয়ার্ড করে ফেলুন। অপারেশন থিয়েটার কমিয়ে সে সবকে আইটিউ করে ফেলুন।
দয়া করে ওর্স্ট কেস সিনারিও ভেবে প্ল্যান করেন। আমাদের কিছু হবেনা, এই ধরনের বুজরুকি ধারন থেকে বের হন।আজীবন পয়সা খেয়েছেন, জনগনের কষ্টের টাকায় গাড়ি হাকিয়েছেন, বিদেশ ঘুরতে গিয়েছেন হাবিজাবি প্রোগ্রাম বানিয়ে।
দয়া করে দুইটা মাস জনগনের কথা ভাবেন। করোনায়তো আপনিও আক্রান্ত হতে পারেন! নিজের বা নিজের পরিবারের কথাও তো ভাববেন, নাকি?
আমার সমস্ত কাছের মানুষ বাংলাদেশে।
আমি তাদেরকে নিয়ে চিন্তিত।
আমি আমার দেশ নিয়ে চিন্তিত।
করোনাকে হালকা ভাবে নেয়া জনগনকে নিয়ে চিন্তিত।
আল্লাহ আমাদের সহায় হোক।
(করোনা ওয়ার্ডে কাজ করার সম্মুখ অভিজ্ঞতা থেকে বলসি। এইটা কোন কৌতুক না। হুট হাট মানুষ মারা যাচ্ছে। দ্রুত খারাপ হয়ে যাচ্ছে রোগী! ভয় পান৷ দয়া করে ভয় পান)
-Dr imran kais
MRCS ed
Clinical fellow
Chelsea and westminster NHS trust
London.