১৭ মার্চ ২০২০:
ডা. জাহিদুর রহমান, ভাইরোলজিস্ট
সহকারী অধ্যাপক, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ, ঢাকা
ইতালিতে প্রথম কোভিড-১৯ এর প্রথম রোগী সনাক্ত হয়েছিল এ বছর ৩১ জানুয়ারি। পরের ৩ সপ্তাহে রোগী সনাক্ত হয়েছিল মাত্র ২ জন। তারপর ২১ ফেব্রুয়ারি একদিনেই ২৮ জন সনাক্ত করা হল, মারা গেল ২ জন। তারপর থেকে প্রতিদিন পাল্লা দিয়ে আক্রান্ত এবং মৃতের সংখ্যা বেড়েই চলছে।
এই মুহূর্তে সে দেশে আক্রান্ত ২৭,৯৮০ জন এবং মৃতের সংখ্যা ২১৫৮ জন। গত ২৪ ঘন্টায় সর্বাধিক ৩৬৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। ইউরোপের অন্যান্য দেশগুলোর প্যাটার্নও প্রায় একই রকম। এই থেকেই বোঝা যায় শুরুটা একজন থেকে হলেও SARS-CoV-2 ভাইরাস চুপচাপ বসে ছিল না। এই ভাইরাস শরীরে প্রবেশ করে লক্ষণ প্রকাশ করতে সাধারণত ২-৩ সপ্তাহ সময় নেয়। ইতালিতে ফেব্রুয়ারির প্রথম দিকে এ কারণেই কোন রোগী আবিষ্কৃত হয়নি। কিন্তু যখন হয়েছে, তখন আর উপায় ছিল না। আজকে বিশ্বের অন্যতম ধনী, প্রভাবশালী দেশের নাগরিক হয়েও সে দেশের রোগীরা আইসিইউতে বেড পাচ্ছে না।
বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত কোভিড-১৯ এর মাত্র ৮ জন রোগী সনাক্ত হলেও SARS-CoV-2 ভাইরাস কিন্তু ঠিকই একজনের শরীর থেকে অন্য জনের শরীরে ছড়িয়ে পড়ছে। বাকিদের কথা বাদ দিলাম, বর্তমানে হোম কোয়ারাইন্টাইনে থাকা ৩১৮০ জন যে শেষ পর্যন্ত কয়জন মানুষকে আক্রান্ত করবে, সেটা টের পাওয়া যাবে আরো দুই সপ্তাহ পরে। ভারত, পাকিস্তানের মত দেশও অধিক ঝুঁকিপূর্ণ দেশ থেকে আসা মানুষদের ইনস্টিটিউশনাল কোয়ারাইন্টাইন করে রাখছে। আমরা কেন জেনে, শুনে, বুঝে এরকম আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত নিচ্ছি?
নীতি নির্ধারকদের প্রতি অনুরোধ, আপনারা উট পাখির মত বালুতে মুখ গুঁজে থাকবেন না। আইন শৃঙ্খলা বাহিনী, প্রয়োজনে সেনাবাহিনীর সাহায্য নিয়ে হলেও হোম কোয়ারাইন্টাইনে থাকা এবং ইতিমধ্যে তাদের সংস্পর্শে আসা সবাইকে বাধ্যতামূলক ইনস্টিটিউশনাল কোয়ারাইন্টাইন করুন। যে কোন মূল্যে তাদের সেখানে ১৪ দিন থাকতে বাধ্য করুন। এতবার দৃষ্টি আকর্ষণের পরও যদি দেশে কোভিড-১৯ এর মহামারী হয়, এর দায় কিন্তু ঐ “নবাবজাদা” প্রবাসীরা নয়, আপনাদেরকেই নিতে হবে। মাইন্ড ইট।