রবিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৫
‘ইশারায় ডাকায় লাথি মারলেন চিকিৎসক’ – শিরোনামে বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভ্রান্তিকর সংবাদ প্রচার হচ্ছে। রবিবার (২৭ এপ্রিল) বিভিন্ন গণমাধ্যমে এ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশের পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে।

এমন বিভ্রান্তিকর সংবাদে মিডিয়া ট্রায়ালের শিকার হয়েছেন সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের আবাসিক চিকিৎসক ডা. তন্ময় দেবনাথ।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে খয়েরি শার্ট পরিহিত রোগীর স্বজন চিকিৎসক তাকে সুন্দরভাবে কথা বলতে বললে সে তাতে অস্বীকৃতি জানায়। ছড়িয়ে পড়া ভিডিওর ১৬ সেকেন্ডের মাথায় একই ব্যক্তিকে কর্তব্যরত চিকিৎসককে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করতে শোনা যায়।
ওয়ার্ডে কর্তব্যরত একজন চিকিৎসক প্ল্যাটফর্মকে জানান, “রোগী আমাদের ওয়ার্ডের। রোগীর ২০২৩ সালে এপেন্ডেসেকটমি হয়। পরবর্তীতে শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) রিকারেন্ট এবডোমিনাল পেইনের হিস্ট্রি নিয়ে ভর্তি হয়। রোগ নির্ণয় করতে স্যার কিছু বেইজ লাইন পরীক্ষার পাশাপাশি আর সিটি এবডোমেন দেন। সিটি এবডোমেন রিপোর্ট ভালো ছিলো।
আজকে আমাদের রুটিন ওটি ছিলো তাই ফ্লোর ডক্টর ছাড়া সবাই ওটিতে ছিলাম। এই রোগীর স্বজনদের দুইজন হুট করে এসে ডাক্তার টাকা খাইসে,বেশি টাকা খরচ করাইসে – এই ধরনের উস্কানিমূলক কথা বলতে থাকে। এক পর্যায়ে ভিডিওতে যে দাদাকে দেখা যাচ্ছে (ডা. তন্ময় দেবনাথ) উনাকে গিয়ে বিরক্ত করা শুরু করে।কে বা কারা দেখায় যে উনিই নাকি সেই ডাক্তার। দাদা (ডা. তন্ময়) আমাদের ইউনিটেরও না (একই ওয়ার্ডের অধীনে বেশ কয়েকটি ইউনিট থাকে, স্ব স্ব ইউনিটের চিকিৎসক স্ব স্ব ইউনিটের রোগীদের চিকিৎসা দেন) অন্য ইউনিটের।
এক পর্যায়ে কথা কাটাকাটি থেকে দাদাকে এক্সট্রিম বিরক্ত করে তুলে। দাদাকে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করা হয়। এখানে (ভিডিওতে) দাদার শট টাই শুধুমাত্র দেখানো হচ্ছে।রোগীর স্বজনরা যে এক্সট্রিম বদমাইশি করসে তা ভিডিওতে আনেই নাই। দাদা নরমালি এমন করার মানুষ না। তাকে উত্তেজিত করা হইসে।”
ওসমানি মেডিকেলের চিকিৎসক ডা. ইশতিয়াক আহমেদ বলেন, ও খুব ভাল এবং শান্ত স্বভাবের ছেলে। নিতান্ত ই বাধ্য না হলে এমন করার কথা না।
রোগীর পিতা আব্দুল কাদির প্ল্যাটফর্মকে জানান, ঘটনার সময় তিনি ওষুধ আনতে বাইরে ছিলেন জানিয়ে কোন ধরনের মন্তব্য করেননি।
সংশ্লিষ্টদের দাবি, এমন হলুদ সাংবাদিকতা রোগী ও চিকিৎসক সম্পর্ককে আরো নেতিবাচক করার পাশাপাশি স্বাস্থ্যখাতকে অস্থিতিশীল করবে। পাশাপাশি অতিদ্রুত চিকিৎসক সুরক্ষা আইন তৈরি ও বাস্তবায়নের দাবি জানান তারা।
প্ল্যাটফর্ম/এমইউএএস