প্ল্যাটফর্ম নিউজ, ২২ সেপ্টেম্বর,২০২০, মঙ্গলবার
কোভিড-১৯ বা করোনা ভাইরাসের নতুন কোনো টিকা পাওয়া গেলে তা সারা বিশ্বে দ্রুত ও ন্যায় সংগত বিতরণ করতে একটি ‘ঐতিহাসিক’ চুক্তিতে সম্মত হয়েছে বিশ্বের ১৫৬টি দেশ। চুক্তিতে সম্মত দেশগুলোর মোট জনসংখ্যার ৩ শতাংশকে দ্রুত এ টিকা দেওয়া হবে। এর আওতায় পড়বে অনুন্নত স্বাস্থ্য সেবা খাতের সাথে যুক্ত সম্মুখ সারিতে থাকা স্বাস্থ্যকর্মী ও সামাজিক সেবা খাতে যুক্ত লোকজন। ইংরেজি দৈনিক দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং কোভ্যাক্সের উদ্যোগে উচ্চ আয়ের ৬৪ টি দেশ ইতিমধ্যে এতে যুক্ত হয়েছে। এর মধ্যে ৩৫ টি দেশ ও ইউরোপিয়ান কমিশনের পক্ষ থেকে সাহায্যের প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেছে। এছাড়া এদের সাথে আরও ৩৮ টি দেশ খুব তাড়াতাড়ি যুক্ত হবে বলে জানা গেছে। এই উদ্যোগের মাধ্যমে ২০২১ সালের মধ্যে বিশ্বে ২০০ কোটি মানুষকে নিরাপদ ও কার্যকর টিকা দেওয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। বিভিন্ন দেশের সরকার, টিকা প্রস্তুতকারক কোম্পানি, বিভিন্ন সংস্থা ও ব্যক্তির পক্ষ থেকে টিকা গবেষণা ও উন্নয়নে ১৪০ কোটি মার্কিন ডলারের প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং কোভ্যাক্সের এই উদ্যোগটির সঙ্গে রয়েছে কোয়ালিশন ফর এপিডেমিক প্রিপেয়ার্ডনেস ইনোভেশন ও দাতব্য সংস্থা গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ভ্যাকসিন অ্যান্ড ইমিউনাইজেশন (জিএভিআই)। তবে এই উদ্যোগটির সাথে যুক্তরাষ্ট্র থাকছে না বলে জানা গেছে। কার্যকর টিকা পাওয়া গেলে তা বিশ্বের উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে সম বন্টনের বিষয়টিতে নিশ্চয়তা দেওয়া হয়। তবে প্রথমে তা খুব কম পরিমাণে পাওয়া যাবে, এটা স্বীকার করে নেওয়া হয়েছে। টিকা প্রাথমিকভাবে অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর জনসংখ্যার ৩ শতাংশের জন্য দেওয়া হবে। পরে সময়ের সঙ্গে এই হার ২০ শতাংশে পৌঁছাতে পারে বলে জানা যায়।
গতকাল সোমবার জেনেভায় এক ব্রিফিংয়ে চুক্তির বিষয়টি জানানো হয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক তেদরোস আধানোম গেব্রেয়াসুস বলেন,
”কোভ্যাক্স বিশ্বের বৃহত্তম এবং কোভিডের টিকাগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বৈচিত্র্যপূর্ণ পোর্টফোলিও উপস্থাপন করেছে। এর মাধ্যমে সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকা ব্যক্তিদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। এ উদ্যোগে সব দেশের কিছু মানুষকে টিকা দেওয়া হবে, কিছু দেশের সব মানুষকে টিকা দেওয়া হবে না।”
সিইপিআই এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ডাঃ রিচার্ড হ্যাচেট বলেছেন,
“এই মহামারী মোকাবেলায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় একত্রিত হওয়া জন স্বাস্থ্যের ইতিহাসের এক যুগান্তকারী মুহূর্ত।”
তিনি আরও বলেন, ”কোভ্যাক্সের মূল লক্ষ্যটি পূরণ করতে হবে এবং তা হল ২০২১ সালের মধ্যে ২০০ কোটি মানুষকে ভ্যাকসিনের ডোজ দেওয়া। আজ, আমরা সেই লক্ষ্যে সবার সুবিধার জন্য এক ধাপ অতিক্রম করলাম। ”
তথ্যসূত্রঃ দ্য গার্ডিয়ান