প্ল্যাটফর্ম নিউজ
সোমবার, ১২ মে, ২০২০
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অনুমতি নিয়ে গত এক মাস ধরে করোনা ভাইরাস শনাক্তের জন্য নমুনা সংগ্রহ করে আসছে ‘জে কি জে হেলথকেয়ার’ নামে ঢাকার একটি বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন।
সম্পূর্ণ বিনামূল্যেই করোনা সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের নমুনা সংগ্রহ করে এই ‘জে কি জে হেলথকেয়ার’ প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠানটি ‘ওভাল গ্রুপ’র একটি অঙ্গসংগঠন। ওভাল গ্রুপের চেয়ারম্যান ডা. সাবরিনা আরিফ চৌধুরী বলেন, বেসরকারি কোনো প্রতিষ্ঠান হিসেবে তারাই প্রথম বুথ স্থাপন করে নমুনা সংগ্রহ করছেন। তাছাড়াও সরকারের অনুমতি নিয়ে তারা সর্বপ্রথম করোনার ঝুঁকিপ্রবণ অঞ্চল নারায়ণগঞ্জে বুথ স্থাপন করেন। পরবর্তী সময়ে ঢাকার কয়েকটি ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় এই স্যাম্পল কালেকশন বুথ স্থাপন করা হয়। ফলে ওই সব এলাকার সবধরনের মানুষজন ঝুঁকি এড়িয়ে নমুনা পরীক্ষা করাতে পারছে তাদের বুথগুলো থেকে।
সংগঠনটি ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জের আলাদা আলাদা স্থানে ৪৪ টি নমুনা সংগ্রহের বুথ স্থাপন করেছে। প্রতিদিন বুথগুলো ৩০০-৩৫০ জনের নমুনা সংগ্রহ করে থাকে। পরে সংগ্রহকৃত নমুনা সরকার নির্ধারিত করোনা শনাক্তকরণ ল্যাবে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। নমুনাগুলো পরীক্ষা করার পর ফলাফল মুঠোফোনের মাধ্যমে নমুনা প্রদানকারীদের জানিয়ে দেওয়া হয়।
প্রতিষ্ঠানটির একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, ঢাকার রাজারবাগ পুলিশ লাইনস, খিলগাঁও গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজ, সবুজবাগ আদর্শ গার্লস কলেজ এবং কড়াইল বস্তি এলাকায় করোনা পরীক্ষার নমুনা সংগ্রহের বুথ স্থাপন করেছে জে কি জে হেলথকেয়ার। এ ছাড়া গত ৮ এপ্রিল থেকে নারায়ণগঞ্জ সরকারি উচ্চবিদ্যালয় ও সিদ্ধিরগঞ্জের এম এইচ বুলু স্কুল অ্যান্ড কলেজে বুথের মাধ্যমে করোনার নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে। প্রতিদিন বেলা ১১টা থেকে ২টা পর্যন্ত বুথগুলোতে নমুনা সংগ্রহ করা হয়। পাশাপাশি আগামী সপ্তাহ থেকে নমুনা সংগ্রহের জন্য রাজধানীর গুলশান, উত্তরা ও বাড্ডা এলাকায় বুথ স্থাপন করা হবে।
প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তা শাম্মী ওয়াদুদ বলেন,
“দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকার পাশাপাশি উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকায়ও নমুনা সংগ্রহের সিদ্ধান্ত হয়েছে। প্রাথমিকভাবে গুলশান ও উত্তরার দুটি এলাকায় এবং বাড্ডায় নমুনা সংগ্রহের জন্য ৪০টির মতো বুথ স্থাপন করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। বাংলাদেশে যেসব বিদেশি কূটনৈতিক রয়েছেন, তাঁদের জন্য গুলশানে আলাদা বুথ হবে। আর স্থানীয়দের নমুনা সংগ্রহের জন্য আলাদা বুথ স্থাপন করা হবে।”
করোনা শনাক্তকরণ পরীক্ষার নমুনা সংগ্রহের জন্য ৪০০ স্বাস্থ্যকর্মী বিভিন্ন বুথে কাজ করে আসছেন। তাছাড়াও নমুনা সংগ্রহের বুথ স্থাপনের আগে নমুনা সংগ্রহকারী সব কর্মীকে প্রতিষ্ঠানটি থেকে যথাযথ প্রশিক্ষণ দিয়ে নমুনা সংগ্রহের কাজে পাঠানো হয়। তাছাড়াও প্রত্যেক কর্মীকে পার্সোনাল প্রটেকশন ইকুইপমেন্ট (পিপিই) সরবরাহ করাসহ সব ধরনের জিনিসপত্র সরবরাহ করে আসছে প্রতিষ্ঠানটি। বুথের মাধ্যমে নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে বলে সেসব স্বাস্থ্যকর্মীদের করোনা সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি থাকছে না।
তবে করোনা করোনা আক্রান্ত সন্দেহভাজন ব্যক্তি বুথে এসে নমুনা দেওয়ার আগে কিছু নিয়মকানুন অনুসরণ করতে হবে বলে প্রতিষ্ঠানটি থেকে জানানো হয়।
– বুথে নমুনা জমা দিতে হলে মোবাইল নম্বর এবং জাতীয় পরিচয়পত্র সঙ্গে করে নিয়ে আসতে হবে।
– বুথে আসার পর প্রশিক্ষিত কর্মীরা করোনা আক্রান্ত সন্দেহভাজন ব্যক্তির কাছে কয়েকটি তথ্য জানা হবে,
যেমন, তিনি ডায়াবেটিস কিংবা কিডনিজনিত রোগে ভুগছেন কি না।
করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে ছিলেন কি না ইত্যাদি।
এরপর সব তথ্য ডাটা ফর্মে লিপিবদ্ধ করার পর প্রশিক্ষিত কর্মীরা করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করে থাকেন।
করোনাভাইরাসে সংক্রমিত সন্দেহভাজন ব্যক্তি নমুনা দেওয়া এবং পরীক্ষার ফলাফল জানার ব্যাপারে প্রতিষ্ঠানটির মুঠোফোন (+৮৮০১৭৯২৪৪৪১১১) নম্বরে যোগাযোগ করার জন্য বলা হয়েছে।
সম্পুর্ন বিনামূল্যে সবধরনের মানুষজন এই বুথগুলোতে এসে নমুনা জমা দিতে পারবে।
নিজস্ব প্রতিবেদক
আশরাফ মাহাদী