সোমবার, ১৫ জুন, ২০২০
ডাঃ এইচ. এন. আশিকুর রহমান
রেজিস্ট্রার, মেডিসিন বিভাগ
কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল
১. ধরেন রাস্তায় কলার খোসা পড়ে আছে । একটু পরপর একেকজন পথচারী তাতে পা দিয়ে আছড়ে পড়ছে। কারো হাত ভাঙ্গে, কারো পা, কারো মাথা ফাটে, কেউ বা দাঁত হারায়, কারো ছিলে চামড়া ।
এই যে ইনজুরিগুলো তাদের একেকটার চিকিৎসা একেকরকম হলেও মূল চিকিৎসা হচ্ছে-
রাস্তা থেকে কলার খোসা তোলে ডাস্টবিনে ফেলা। এখানে হাত/পা ভাঙা অথবা মাথা ফাটার চিকিৎসাটা হচ্ছে সাপোর্টিভ (লক্ষণ বুঝে চিকিৎসা) আর কলার খোসাটা ডাস্টবিনে ফেলা হচ্ছে ডেফিনিটিভ (সুনির্দিষ্ট) চিকিৎসা।
২. মূল কথায় আসি-
এই যে করোনার এত এত ঔষধের নাম শুনেন সবই সাপোর্টিভ/লক্ষণ বুঝে চিকিৎসা…যা একেক রোগীর ক্ষেত্রে একেক রকম…
রোগীর বয়স, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা, করোনা ছাড়া অন্যান্য আনুষঙ্গিক রোগ (যেমন-ডায়াবেটিস, উচ্চরক্তচাপ), ভাইরাল লোড ইত্যাদির উপর নির্ভর করে যে আমার/আপনার অবস্থা কতটা খারাপ হবে…
খারাপ অবস্থাকে আমরা মোটাদাগে লক্ষণহীন-স্বল্পমাত্রা- মাঝারি মাত্রা-তীব্রমাত্রায় ভাগ করি এবং সেই মাত্রা ভেদেও চিকিৎসার তারতম্য হয়।
৩. কাজেই করোনার সাপোর্টিভ চিকিৎসা মোটাদাগে সবার জন্য এক না। তা রোগীভেদে ভিন্ন হয়। আপনাদের জ্ঞাতার্থে বলি কেবল নাপা(প্যারাসিটামল) খেয়েই আমার এক করোনা রোগী করোনা জয় করেছে।
তাই বলে কি বলবো যে নাপাই করোনার চিকিৎসা?
মোটেও না। সাপোর্টিভ চিকিৎসা নির্ভর করে আপনার কি ঘাটতি আছে তার উপর। আর একেকজনের ঘাটতি একেকরকম। তাই বলি, মুখস্থ ঔষধ খাওয়া নয়।
৪. আর হ্যাঁ- কলার খোসা ডাস্টবিনে ফেলার মতো করোনার সুনির্দিষ্ট চিকিৎসা এখনো মানুষের হাতে আসে নি। তাই তিন জিনিসের সমন্বয়ে করোনা প্রতিরোধ করুন-
ঘনঘন হাত ধোঁয়া- মাস্ক পরিধান করা- আর নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে চলাচল করা
একটা বাদ দিয়ে আরেকটা না। সম্ভব হলে তিনটা একসাথে। আল্লাহ সবার মঙ্গল করুন।