প্ল্যাটফর্ম প্রতিবেদন, রবিবার, ১৭ এপ্রিল, ২০২০
কিছুদিন পরেই ঈদ। পবিত্র ঈদুল ফিতরে নিশ্চয়ই সবাই গ্রামে বেড়াতে আসবেন। বেড়ানো মানেই আনন্দ। এই আনন্দ কার ভালো না লাগে! বেড়াতে ভালো লাগে আমার ও। তবে এই আনন্দ বিষাদে রূপ নিতে পারে আপনাদের পরিবারে। এই ঈদ সিঁধ কেটে চোর আসার মতো করোনা ঘরে চুরি করে আসতে পারে আপনার সৌজন্যে।
কেউ একজন যদি করোনা পজিটিভ হোন আর পরিবারের সবাইকে ছড়িয়ে মনের আনন্দে ঢাকা,নারায়নগঞ্জ,নরসিংদী কিংবা চট্টগ্রাম ফেরত যান তবে আপনার বিবেক নিশ্চয়ই আপনাকে ক্ষমা করবে না। কেউ যদি আপনার ঘরে/বাড়িতে আপনারই কারনে মারা যায় তবে নিশ্চয়ই সারাজীবন আপনার নিকটাত্মীয়রা আপনাকে হত্যাকারী হিসেবে চিহ্নিত করবেন। কাজেই অতি আবেগপ্রবন না হয়ে কিছু বিষয় মেনে চলবেন-
১। যথাসম্ভব বাড়ি না আসার চেষ্টা করে নিজ বাসস্থানেই ঈদ করবেন। কারণ, রাস্তার যানবাহন থেকেই ছড়ানোর সম্ভাবনা থাকে বেশী।
২। নিতান্তই যদি বাড়ি আসতে হয় তবে চুপচাপ একটি ঘরে একাকি অবস্থান করবেন অথবা শহর থেকে যাদেরকে সাথে নিয়ে এসেছেন তাদের সাথেই থাকবেন।
৩। নিজ মা-বাবা অথবা নিকটাত্মীয় বয়স্কদের কাছ থেকে ১০০ হাত দূরে থাকবেন।
৪। বাইরে বেড়ানো একদম বন্ধ রাখবেন। এক ঈদে বন্ধুবান্ধব থেকে দূরে থাকলে কারোরই কিছু ক্ষতি হবে না, তবে কাছে এসে কোন প্রিয় বন্ধুকে আপনার উপসর্গবিহীন রোগটি দিয়ে তার মৃত্যুর কারন হতে পারেন।
৫। ঈদের জামাতে আপনার অংশগ্রহন দরকার নাই। আপনি ছাড়াও চমৎকার ঈদ জামাত হতে পারে। এটি ওয়াজিব নামাজ। আপনি না পড়লেও অন্যরা পড়লেই এর সওয়াব আপনি পাবেন।
৬। হোম কোয়ারেন্টাইন নিজে মেনে চলবেন এবং অন্যদেরকে মেনে চলতে উৎসাহিত করবেন।
৭। আপনি করোনা পরীক্ষা করে দেখেছেন আপনি নেগেটিভ তার মানে এই নয় যে করোনা আপনাকে ধরবে না। রাস্তায় সিএনজি, অটোতে আসার সময় হয়তোবা সাথে নিয়ে এসেছেন। রিপোর্ট বের হতে হতে যে সময় লাগে সেসময়ের মধ্যেও আপনি আক্রান্ত হতে পারেন।
কোনক্রমেই কোন স্বাস্থ্য কর্মীর সাথে কোন প্রকার দূর্ব্যবহার করবেন না। তারা আপনার কাছে যাবে, আপনার খোঁজখবর রাখবে। অসুস্থ হলে আমাদের সাথে যোগাযোগ করে আপনার চিকিৎসার ব্যবস্থা ও করবেন। তারা কাজ করবে আপনারই স্বার্থে, দেশের সকলের স্বার্থে। তারা তাদের দায়িত্ব পালন করবেন আর আপনি আপনার নাগরিক দায়িত্ব পালন করবেন।
স্বাস্থ্য কর্মীদের সাথে দূর্ব্যবহার করলে কি শাস্তি দেয়া হয় এটি দয়া করে জেনে নিবেন। কেউ কেউ শাস্তি পেয়েছেন ও।
সবাই ঘরে থাকুন।
সবাই সুস্থ থাকুন।
আপনার সুস্থতার জন্যই আমরা আমাদের পরিবার পরিজন ছেড়ে মাসের পর মাস দূরে থাকছি।
ডা. মোহাম্মদ আল-মামুন
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা
বাঞ্ছারামপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া