বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০২৪
কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ (কুমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা প্রদানে বিভিন্ন অনিয়ম ও হয়রানির অভিযোগের প্রেক্ষিতে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), কুমিল্লা সমন্বিত জেলা কার্যালয় থেকে গত ২৩ ডিসেম্বর একটি এনফোর্সমেন্ট অভিযান চালানো হয়েছে।
অভিযান চলাকালে দুদক টিম প্রথমে ছদ্মবেশে হাসপাতালের বহির্বিভাগ ও জরুরী বিভাগে সেবাগ্রহীতাদের সাথে কথা বলে এবং দালালের উপস্থিতি শনাক্ত করে। পরবর্তীতে টিম বিভিন্ন ওয়ার্ডে ভর্তিরত রোগীদের সাথে কথা বলে নানা অনিয়মের তথ্য পায়। ওই হাসপাতালের ওয়ার্ডবয় কর্তৃক আর্থিক সুবিধার বিনিময়ে কম্বল, বালিশ, ট্রলি এবং হুইল চেয়ার সরবরাহ হয় মর্মে টিম জানতে পারে।
এনফোর্সমেন্ট টিম ঔষধ স্টোর, প্যাথলজি বিভাগ, খাবার ব্যবস্থাপনাসহ অন্যান্য সংশ্লিষ্ট রেজিস্ট্রার পর্যালোচনা করে অনিয়মের বিষয় প্রত্যক্ষ করে। টিম কর্তৃক প্রাপ্ত অনিয়মসমূহের বিষয়ে হাসপাতালের পরিচালককে অবহিত করা হলে তিনি কিছু বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করেন এবং অবশিষ্ট অভিযোগসমূহের বিষয়ে আশু ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে দুদক টিমকে আশ্বস্ত করেন।
এছাড়াও হাসপাতালে সিট বাণিজ্য, বিনা স্লিপে ঔষধ বিতরণ, ঔষধের হিসাবে গড়মিল, বিছানার নিচে তেলাপোকা, অপরিচ্ছন্নতা, দালালদের দৌরাত্মসহ নানা অনিয়ম চোখে পড়ে দুদক কর্মকর্তাদের।
অভিযান শেষে দুদকের সহকারি পরিচালক ও অভিযানের টিম মেম্বার তারিকুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, “দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রধান কার্যালয়ের অনুমোদন সাপেক্ষে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বিভিন্ন অনিয়ম ও হয়রানির কারণে একটি অভিযান পরিচালনার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়। সেই মোতাবেক জেলা কার্যালয় থেকে আমরা এই অভিযানটি পরিচালনা করি। বিভিন্ন অভিযোগের ভিত্তিতে এখানে এসে দেখতে পাই এখানে দালালদের একটি দৌরাত্ম রয়েছে। কয়েকজন দালালকে চিহ্নিত করা হয়েছে। ছবি দেখে তাদেরকে নিশ্চিত হওয়া গিয়েছে।”
তিনি আরো বলেন, ” হাসপাতালের বিভিন্ন কেবিন, ওয়ার্ডে পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার যথেষ্ট ঘাটতি দেখা গিয়েছে। এখানে অবকাঠামোগত সমস্যা আছে। পরিচালক বলেছেন গণপূর্ত বিভাগ কাজ করছেনা। গণপূর্ত বিভাগ বলেছে তারা আগামীকাল (২৪ ডিসেম্বর) হাসপাতালে এসে বিষয়টি দেখবেন। রোগীরা অভিযোগ করেছেন ওয়ার্ডবয় গুলো অন্যায়ভাবে ৪শ, ৫শ এমনকি হাজার টাকাও দাবী করে। ডাক্তারদের সিল ও স্বাক্ষর বিহীন ঔষধ বিতরণের স্লিপ পাওয়া গিয়েছে। আমরা যে অনিয়ম ও অভিযোগ পেয়েছি তা প্রতিবেদন আকারে প্রধান কার্যালয় বরাবর দাখিল করবো। কমিশন পরবর্তীতে যেভাবে নির্দেশনা দিবে সেই মোতাবেক কাজ করবো।”
গত ২৩ ডিসেম্বর সোমবার দুপুরে দুর্নীতি দমন কমিশন কুমিল্লা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো: মাসুম আলীর নেতৃত্বে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সহকারি পরিচালক ও টিম লিডার তারিকুর রহমান, উপ-সহকারি পরিচালক মো: ইমরান খান, কনস্টেবল মামুনুর রশিদ।
প্ল্যাটফর্ম/