বুধবার, ৮ই এপ্রিল, ২০২০ খ্রিস্টাব্দ
গত ৩রা মার্চ প্রথম কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয় চট্টগ্রামে। চট্টগ্রামের আন্দরকিল্লা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এই কোভিড-১৯ আক্রান্ত ব্যক্তি প্রথমে নগরীর ন্যাশনাল হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করেন। ফলে কোয়ারেইন্টাইনে যেতে হয় ন্যাশনাল হাসপাতালের ইমার্জেন্সি মেডিকেল অফিসার ডা. দেবাশীষ বড়ুয়াকে। কোয়ারেন্টাইনে থাকা দিনগুলোর কথা জানালেন তিনি:
*রোগীর কী সমস্যা হয়েছিল? কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল?
– রোগী দুইদিনের জ্বর ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে আসেন। তিনি একজন COPD ও উচ্চ রক্তচাপ এর রোগী ছিলেন। দ্রুত Chest X-Ray করালে Consolidation পাই। এরপর সাসপেক্ট করি। অক্সিজেন সেচুরেশন ৬৭% থাকায় ICU তে রেফার করি। পরবর্তীতে কোভিড-১৯ পজিটিভ আসলে আমাদের জানানো হয়।
*রোগীকে ন্যাশনাল হাসপাতালের ICU তে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছিল সাসপেক্ট করার পরও?
– ICU তে তিন ঘন্টা রাখা হয়। এরপর জেনারেল হাসপাতালে রেফার করা হয়। এখানে আমি সহ ২১-২২ জন কোয়ারেন্টাইনে আছি। আপনাদের দোয়ায় আমরা ২২ জন সবাই ভালো আছি।
*কোয়ারেন্টাইনে কোথায় আছেন?
– ইন্সটিটিউশনাল কোয়ারেন্টাইনে আছি, কর্তৃপক্ষই সব ব্যবস্থা নিয়েছে।
*কোয়ারেন্টাইনে কীভাবে সময় কাটাচ্ছেন?
– টেলিভিশন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, মাঝে মধ্যে পড়ালেখা।
*পরিবার ও অথোরিটির সাথে কীভাবে যোগাযোগ করছেন?
– ফোনে, ইমো তে যোগাযোগ করি।
*কি কি সুযোগ সুবিধা পাচ্ছেন কোয়ারেইন্টাইনে? আলাদা ছুটি পাবেন?
– এক মাসের ইমার্জেন্সি লিভ, চিকিৎসা ফি, কোয়ারেন্টাইনের খরচ, খাওয়া দাওয়া, কোন অসুবিধা হলে দায়িত্ব নিবে এগুলোই।
ডা. দেবাশীষ বড়ুয়া সামাজিক গণ মাধ্যমে একটি স্ট্যাটাসে লিখেন,
কিন্তু গত শুক্রবার যখন জানতে পারলাম
আমি চিন্তা করেছি শুধুমাত্র আমার মায়ের জন্যে (যিনি চট্টগ্রামে থাকেন শুধুমাত্র আমার জন্যে)।
নিজেকে খুব দোষী মনে হচ্ছে। আমি সহ আরও ২২ জন এখন কোয়ারেন্টাইনে আছি!
আপনি হয়ত ২২ জন দেখছেন, আমি দেখি ২২ টি পরিবার, যারা সম্পুর্ন এই ২২ জনের উপর নির্ভরশীল। যারা ডাক্তারদের ১৪ গোষ্ঠী উদ্ধার করছেন তাদের বলছি, ডাক্তাররা কখনই সেবা দিতে পিছপা হয় নাই, হবেও না। কিছু ঘটনা ঘটছে যা মেনে নেয়া যায়না, তাই বলে আমাদের পরিবার নিয়ে গাল- মন্দ করার অধিকার আপনাদের নাই।
তিনি বাকী সব ডাক্তারদের উদ্দ্যেশ্যে বলেন, “নিজের Safety নিয়েই চিকিৎসা দিন,
আপনার সুরক্ষা আপনার হাতে।”
নিজস্ব প্রতিবেদক
সুবহে জামিল সুবাহ