প্ল্যাটফর্ম নিউজ, ২১ জুন, ২০২০, রবিবার
সোলার রেটিনোপ্যাথি/ফোটিক রেটিনোপ্যাথি/একলিপ্স বার্ন/সৌর রেটিনোপ্যাথি অথবা সহজ বাংলায় সূর্যগ্রহণ জনিত চোখের সমস্যা।
সরাসরি সূর্যের দিকে তাকিয়ে চোখের ক্ষতি হওয়ার কারণটি হলো সৌর রেটিনোপ্যাথি। ১৯৯৯ সালের ১১ ই আগস্ট সূর্যগ্রহণে সূর্যের দিকে নজর রাখার ফলে দেশের অনেক মানুষ চোখের ক্ষতির ঝুঁকিতে পড়েছিল।
চোখের সামনের অংশে পিউপিল এবং লেন্স রয়েছে যা চোখের পিছনে রেটিনায় চিত্রগুলোকে ফোকাস করে সামঞ্জস্য করে। রেটিনা অসংখ্য সূক্ষ্ম কোষ দ্বারা গঠিত যা আলোর প্রতি সংবেদনশীল।
সূর্যগ্রহনের সময় খালি চোখে সূর্যের দিকে তাকালে সৌর রেটিনোপ্যাথি হতে পারে। সাধারণত সূর্যের দিকে তাকালে তীব্র আলোতে পিউপিল সঙ্কুচিত হয়, কিন্তু সূর্যগ্রহনের সময় আলোর তীব্রতা কমে যাওয়ায় পিউপিল কিছুটা বড় হয়ে যায়। ফলে সূর্যের ক্ষতিকারক ইনফ্রারেড রশ্মি সরাসরি চোখের ভিতরে প্রবেশ করে লেন্স দিয়ে রেটিনার আলোর প্রতি সবচেয়ে সংবেদনশীল ম্যাকুলাতে আঘাত করে। এটি রেটিনাকে পুড়িয়ে ফেলে এবং সেই কোষগুলি ধ্বংস করে যা আমাদের দৃষ্টিতে সহায়তা করে।
সোলার রেটিনোপ্যাথি
রেটিনায় কোনও ব্যথা-সংবেদনশীল স্নায়ু না থাকায় এই ক্ষতি হওয়ার সময় কোনও ব্যথা অনুভব হয় না।
তবে যে সকল উপসর্গ দেখা যায়:
- সূর্যের দিকে তাকানোর কিছুক্ষন পর দুই চোখে ঝাপসা দেখা, বিশেষ করে সেন্ট্রাল ভিশন হারিয়ে যেতে পারে।
- সেই সাথে হঠাৎ কাছের জিনিস দেখতে সমস্যা বা কোন জিনিস দেখতে স্বাভাবিকের চেয়ে বড় বা ছোট দেখতে পাওয়া।
- উজ্জ্বল আলোতে অস্বস্তি বোধ হতে পারে।
বাংলাদেশ সময় ২১জুন রবিবারে এই সূর্য গ্রহন শুরু হচ্ছে সকাল ৯.৪৬ মিনিট থেকে এবং গ্রহন সমাপ্তি ৩.৩৪ মিনিট। অর্থাৎ গ্রহণ স্থিতি ৫:৪৮ মিনিট ধরে এই সূর্য গ্রহন চলবে।
প্রথমেই করণীয় :
- সূর্যগ্রহনের সময় খালি চোখে সূর্যের দিকে না তাকানো।
- প্রয়োজনে ফিল্টার গ্লাস ব্যবহার করা।
ক্ষতিটা কী স্থায়ী হয় ?
যদি ক্ষতিটি হালকা হয় তবে চোখের পিছনে ফোলাভাব কমে যাওয়ার পরে আপনার দৃষ্টিশক্তি স্বাভাবিক হয়ে যেতে পারে। সময়ের দৈর্ঘ্য প্রতিটি পৃথক এবং ক্ষতির পরিমাণের সাথে পরিবর্তিত হয়। চক্ষু বিশেষজ্ঞ আপনাকে ফোলাভাব কমে যাওয়ার এবং অস্বস্তি হ্রাস করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। দুর্ভাগ্যক্রমে, ক্ষতিটি আরও তীব্র হলে আপনার দৃষ্টিশক্তি স্থায়ীভাবে প্রভাবিত হতে পারে। কয়েক সপ্তাহের মধ্যে আপনার দর্শন পর্যবেক্ষণের মাধ্যমেই চক্ষু বিশেষজ্ঞ দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করতে সক্ষম হবেন।
তাই ২১ জুন সূর্যগ্রহণের সময় সবাইকে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।
তথ্যসূত্র :
আল মাহমুদ লিমন
চক্ষু বিশেষজ্ঞ ও ফ্যাকো সার্জন
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল