শনিবার, ১৩ জুন, ২০২০
ডা. ফাহমিদা রশীদ স্বাতি
সহকারী অধ্যাপক, গাইনী এন্ড অবস
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল
করোনার এই ত্রাহি ত্রাহি অবস্থায় কেউ এর ছোবল থেকে রক্ষা পাচ্ছে না- বাচ্চা, যুবক, বয়স্ক, পুরুষ, মহিলা সবাই আক্রান্ত হচ্ছেন। সেই সাথে যারা এখন গর্ভবতী আছেন, তারাও আক্রান্ত হচ্ছেন।
যেসব গর্ভবতী মায়েদের উপসর্গ দেখা দিচ্ছে, তাদের অনেকের প্রশ্ন, “এ ক’মাস তো আমরা বের হই নি তাহলে আমার কিভাবে হল? আমারটা মনে হয় সাধারণ সর্দি-কাশি।” তাদের অনেকেই মানতে নারাজ যে তাদের করোনা হয়েছে। তাই অনেকেই নিজের অবহেলায় বা পরিবারের বাঁধার কারনে পরীক্ষার আওতায় আসছেন না।
কিন্তু পরীক্ষা না করার সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে জানতে হবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কিছু কোভিড রিস্ক গ্রুপ এর কথা বলেছেন, যাদের করোনা হলে খারাপ হবার সম্ভাবনা আছে। গর্ভবতী মহিলারা এই গ্রুপে পড়েন।
বেশির ভাগ গর্ভবতী মহিলাদের অন্যান্য রোগীদের মত মৃদু উপসর্গ হয় এবং বাসায় চিকিৎসা নিলেই ভাল হয়ে যায়। বিশেষ কোন চিকিৎসাও লাগেনা তাদের। উপসর্গ অনুযায়ী চিকিৎসা দিলেই কিছুদিনের মধ্যে সম্পূর্ন সুস্থ হয়ে যায় তারা। তবে কিছু কিছু গর্ভবতী মহিলা খারাপ হয়ে যেতে পারেন।
তারা হলেন-
১। প্রেগন্যান্সি ২৮ সপ্তাহের বেশি।
২। প্রেগন্যান্সি সাথে ডায়াবেটিস।
৩। প্রেগন্যান্সি সাথে হাই প্রেসার।
৪। প্রেগন্যান্সি সাথে হাঁপানি।
৫। প্রেগন্যান্সি সাথে হার্টের সমস্যা।
৬। প্রেগন্যান্সি সাথে ওজন বেশি।
৭। প্রেগন্যান্সি সাথে বয়স ৩৫ এর বেশি।
৮। অন্য ঝুঁকিমুক্ত গর্ভবতী কোভিড রোগীর ৫%-১০%।
কিন্তু আগে থেকে ধারনা করা সম্ভব না, কে ভালো থাকবেন, কে খারাপ হবেন। তাই কোভিড উপসর্গ দেখা দিলেই (যেমনঃ জ্বর, কাশি, গলা ব্যাথা, স্বাদ-গন্ধ না পাওয়া, ডায়রিয়া ইত্যাদি) অবশ্যই কোভিড টেস্ট করাতে হবে। এরপর বাসায় ফলোআপ এর মাধ্যমে চিকিৎসা নিতে হবে।
ফলোআপের সময় যেকোন সমস্যা দেখা দিলে, সাথে সাথে হাসপাতালে ভর্তি সহ বিশেষ পরীক্ষা ও ওষুধের মাধ্যমে রোগীকে চিকিৎসা করলে অনেককেই খারাপ পরিনতি থেকে ফিরিয়ে এনে মা- বাচ্চা দুজনের জীবন বাঁচানো সম্ভব।
তাই প্রতিটি গর্ভবতী মহিলা যারই কোভিড উপসর্গ হবে তাকেই পরীক্ষা করানোটা খুব জরুরী।