প্ল্যাটফর্ম নিউজ, ৪ মে, ২০২০, সোমবার
করোনা কালে একটি কাজ করা আমরা ভুলে যাই, তা হলো এই নষ্ট চরিত্রের ভাইরাসকে দমাতে চাই শক্তিশালী দেহরক্ষী। আমাদের ভেতরের শক্তি বেজায় লড়াই করে, তা না হলে আমরা সবাই এতদিনে অক্কা পেতাম। এই ভেতরের শক্তিকে আরও সবল করা চাই। অন্তত আমাদের কিছু বদভ্যাসে যাতে দুর্বল না হয় তাও দেখা প্রয়োজন।
এমন কিছু বদভ্যাস, তাদের ক্ষতিকারক প্রভাব ও করণীয় নিয়ে পরামর্শ দিয়েছেন অধ্যাপক ডা. শুভাগত চৌধুরী ।
১। ঘুম কমঃ যথেষ্ট ঘুম না হলে ভাইরাস আক্রমন করতে পারে। তাছাড়া সংক্রমণ হলে তা থেকে সেরে উঠতে লাগবে সময়। কারন ঘুম কম হলে দেহের প্রতিরোধ সেনারা ঠিক মত উৎপন্ন হতে পারেনা। ঘুমের সময় শরীর উৎপন্ন করে কিছু প্রোটিন, যা ইমিউন সিস্টেমকে সাহায্য করে, যেমন “সাইটোকিনস”।
২। দুশ্চিন্তাঃ উদ্বেগ উৎকণ্ঠা এসব জীবাণুর সামনে দুর্বল লড়াকু। দুশ্চিন্তা গভীর হলে মাত্র ৩০ মিনিটে ইমিউন প্রতিক্রিয়া দুর্বল হয়ে যায়। অবিরাম স্ট্রেস আরও বড় সমস্যা। তাই দুশ্চিন্তা নিজে তাড়াতে না পারলে মনোরোগ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
৩। কম মাত্রায় ভিটামিন ডিঃ আমাদের এই ভিটামিন দরকার মজবুত হাড় আর সুস্থ রক্ত-কনিকার জন্য। তবে ইমিউন সিস্টেম সবল করতেও এর দরকার। পাওয়া যাবে ডিম, তৈলাক্ত মাছ আর ফরটি ফাইড খাবারে। মুল্যবান উৎস হল সূর্যালোক। মুখ হাত আর বাহুতে ২-১৫ মিনিট, সপ্তাহে দুই তিন বার লাগালে যথেষ্ট। নিখরচা!
৪। কিছু ওষুধঃ এলার্জির কিছু ওষুধ, আর্থরাইটিস, লুপাস, আই বি এস, অর্গান ট্রান্সপ্ল্যানট এসবের ওষুধ ও কেমোথেরাপির ক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
৫। খুব কম ফল সবজি গ্রহণ করলেঃ এসব খাবার শ্বেত কণিকা উৎপাদনে সহায়ক। তাজা সবজি, বীজ বাদাম থেকে আসে জিঙ্ক, বিটা ক্যারোটিন, ভিটামিন এ, সি, ই। উদ্ভিজ্জ খাবার আশে ভর্তি, যা মেদ কমাতে সহায়ক। ফল, শাক-সবজি খেলে সবল হয় দেহ প্রতি রোধ।
৬। ধূমপান আর মাদক যেমন মারিহুয়ানাঃ ফুসফুসে প্রদাহ আর পরে শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা করে। গলা দিয়ে শ্লেষ্মা আর কফ কাশি ফুসফুস সংক্রমণের লক্ষণ।
৭। হাই ফ্যাট ডায়েটঃ তৈল জীবাণু রোধী কোষ শ্বেত কণিকার কার্যকারিতা রোধ করে। অবিরাম হাই ফ্যাট ডায়েট খেলে অন্ত্রের হিতকর জীবাণু, যা ইমিউন প্রতিক্রিয়া করে এদের ভারসাম্য গোলমাল হয়ে যায়। তবে লো ফ্যাট দুধ দধি চিনি খেলে এ সমস্যা হয় না। লিন প্রোটিন যেমন মাছ, চিকেনও বেশ উপকারী। স্থুল হলে ফ্লু করোনা সব জোরে শোরে ধরে।
৮। বাইরে খুব কম যাওয়াঃ দেখা হয় নাই চক্ষু মেলিয়া এরকম হলে মুসকিল। রোদের আলোতে সামান্য অবগাহন হল না, আর লড়াকুটি কোষ সবল হল না। বাগানে আরা পার্কে কত গাছ, এরা তৈরি করে ফাইটনসাইডস আর নানা বস্তু যারা শ্বাসের সঙ্গে ঢুকে সবল করে ইমিউন সিস্টেমকে।
৯। ধূমপানঃ সিগারেটের নিকোটিন তামাক চিবানো, ভাপিং এসব দুর্বল করে ইমিউন সিস্টেমকে।
১০ । এলকোহলঃ অতিরিক্ত মদ্য পান দুর্বল করে দেহ প্রতিরোধ।
১১। তীব্র শোক অথবা মর্ম পীড়াঃ অতীব দুঃখ অবিরাম চললে ইমিউন সিস্টেম দমে যায়।
১২। ব্যায়াম না করলেঃ স্বাস্থ্য দমে যায়। জীবাণু রোধ শক্তি কমে যায় ।
১৩। মধুর মিলনঃ এমন অন্তরঙ্গতা ইমিউন সিস্টেমকে করে উজ্জীবিত। বাড়ায় রক্তে জীবাণু রোধী ইমিউনোগ্লোবিন এ।