জাপানের স্কলারশিপ সম্পর্কে আপনাদের খুব জিস্ট ইনফরমেশন দেয়ার চেষ্টা করছি।
প্রথমেই কিছু ব্যাপার জানা জরুরীঃ
১. জাপানে অনেকগুলো স্কলারশিপের যে কোনটার জন্য অ্যাপ্লাই করতে পারেন। মনবুশো সবচেয়ে প্রেস্টিজিয়াস কারণ এটা জাপান সরকার প্রদত্ত এবং প্রচুর স্টাইপেন্ডের জন্য এশিয়ার বেস্ট স্কলারশিপ।
২. আপনি যদি ডাক্তার হন, তাহলে আক্ষরিক অর্থেই আপনার জন্য এই স্কলারশিপ পাওয়া টাফ। ভার্সিটি এবং ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সের জন্য এটা বেশি সহজ।
৩. সাধারণত এই স্কলারশিপ রিসার্চারদের দেয়া হয়। সো সাবজেক্ট গুলো হবে Genetics, Bioengineering, Cellular Pathology, Molecular Physiology, Immunology এরকম। আপনি ক্লিনিক্যাল ডক্টর হতে চাইলে এটা পাওয়ার সম্ভাবনা কমে আসবে। উপরন্তু ক্লিনিক্যাল কোন পোস্ট গ্রাজুয়েশন ডিগ্রি BMDC অনুমোদন দিবে না।
৪. জাপানে আসার আগে অবশ্যই ভালভাবে ডিসিশন নিন। PhD করতে আপনার ন্যুনতম ৪ বছর এবং আগে মাস্টার্স করতে চাইলে ২ বছর লাগবে। শুধু মাস্টার্সের জন্য আসা উচিৎ না.. সেক্ষেত্রে টোটাল ৭ বছর মত। জাপানে অনেক বেশিদিন থাকতে হলে আপনার অভিযোজন ক্ষমতা প্রচুর বাড়াতে হবে।
#প্রসেসঃ
দুইভাবে অ্যাপ্লাই করা যায়। University or Embassy Recommendation. অ্যাম্বাসি দিয়ে আসতে হলে ভাল রেফারেন্স থাকা প্রয়োজন এবং কম্পিটিটিভও। আর জাপানিজ ভার্সিটি রিকমেন্ড করলে ৯০% শিউর আপনি স্কলারশিপটা পাবেন। জেনারেল আইডিয়ার জন্য নিচের লিংকটা ইম্পরট্যান্ট।
https://www.studyjapan.go.jp/en/toj/toj0302e.html
আসুন ভার্সিটি থেকে রিকমেন্ডশনে। আপনাকে প্রচুর ইমেইল করতে হবে এবং অবশ্যই ভাল কাভার লেটার লেখা জানতে হবে। মনে রাখুন ভার্সিটির প্রফেসর যদি ইম্প্রেসড হয় তবেই আপনার স্কলারশিপ হবে। জাপানের সব ভার্সিটির ওয়েবসাইটে প্রফেসরদের নাম ধাম কন্টাক্ট দেয়া আছে.. ইন্সটিটিউট আর সাবজেক্ট চয়েস করে ইমেইল করা শুরু করুন সবাইকে। Attachment হিসেবে আপনি জীবনে যা ভাল কিছু করছেন সেটা প্রেজেন্ট করুন। Any Research work, Survey, Publication, Journal involvement, Humanitarian works, Experience, Extracurricular activity যে কোন কিছু!
জাপানের স্যাররা ডকুমেন্টস অনেক পছন্দ করে। আপনি আমাদের দেশের রিসার্চার স্যারদের কাছ থেকে ভাল রিকমেন্ডেশন আনলেও সেটা এক্সেপ্টেড হবে। এসব স্যারদের জানতে Researchgate.com ওয়েবসাইট দেখতে পারেন।
#ডাক্তাররা_ধরা খাবেন যদি মাস্টার্স না থাকে, কারণ এটার থিসিস পেপারটাই জাপানের জন্য মূল ডকুমেন্ট যা বাদে সরাসরি PhD তে আসা প্রায় অসম্ভব। বিসিএস, এফসিপিএসের জন্য বাংলাদেশের কোন ডাক্তারের পক্ষে ইন্টার্নির পরপরই মাস্টার্সে যাওয়া ইজি না। এক্ষেত্রে একটা বুদ্ধি বাতলে দিই.. বাংলাদেশে অনেক স্যাররাই রিসার্চ পেপার লিখেন। তাদের সাথে আপনি যে কোন একটা প্রজেক্টে ইনভলভড হন। আপনার নামে যদি Co-authorship চলে আসে এবং সেটা ইন্টারন্যাশনালি অ্যাপ্রুভড হয় তাহলে ঐ আর্টিকেল বা পেপারটাই আপনাকে অনেক দূর নিয়ে যাবে। তবে গোড়া একটাই, Masters is the Basic requirement.
অ্যাম্বাসি রিকমেন্ডেশন দিয়ে আসতে হলে আপনাকে জাস্ট ডকুমেন্টস প্রিপেয়ারড করে অ্যাম্বাসিতে যেতে হবে। বছরে ২ সেশনে অ্যাপ্লাই করতে পারবেন। আগামী ফেব্রুয়ারি মার্চের দিকে সার্কুলার দিবে, এক্ষেত্রে আপনি শুধু যোগাযোগ রাখবেন তাদের সাথে।
+88029840010 – Embassy of Japan. এখানে ফোন দিয়ে আপনি এজুকেশন সেকশন থেকে ইনফো নিতে পারবেন।
+88029145288 – JUAAB. মূলত তারাই জাপানের সাথে বাংলাদেশি স্কলারদের সম্পর্ক স্থাপন করে। অবশ্যই তাদের সাথে যোগাযোগ করবেন।
IELTS জাপানে আবশ্যকীয় না। উল্টা যদি কিছু জাপানিজ জানেন তাহলে বেনেফিট আছে। তবে IELTS থাকলে এটা অ্যাপ্লিকেশনের কোয়ালিটি বাড়াবে.. 6.5 স্কোরই যথেষ্ঠ।
ক্ষুদ্র জ্ঞানে যা সম্ভব শেয়ার করলাম,
শেষে দুইটা কথাঃ
১. আমি একজন ডাক্তার, আমার মাস্টার্স নেই, কোন ইন্টারন্যাশনাল পাবলিকেশন নেই, তাহলে আমি আসলাম কীভাবে? শর্টে বললে আমি একটা জাপানিজ কোম্পানিতে ইনভলভড ছিলাম। সেখানকার মেডিসিনের কনসালটেন্ট আমাকে স্পেশাল রেফারেন্স দিয়ে নিয়ে আসছেন।
২. জাপানে একটা টমেটো ১২০ টাকা, একটা রসুন ১৫০ টাকা, ১০ মিনিটের বাস ভাড়া ২৫০ টাকা। ভুলেও স্কলারশিপ বাদে পড়তে আসবেন না!
লেখকঃ ডাঃ আবিদুর রহমান
শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ
সেশনঃ ২০০৯-১০
প্ল্যাটফর্ম রাইটারঃউর্বী সারাফ আনিকা
৫ম বর্ষ
রংপুর কমিউনিটি মেডিকেল কলেজ।
অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনায়। আমার একটা আবদার ছিলো। যদি দেশে বা দেশের বাইরে MPH করে/ পাবলিক হেলথে ক্যারিয়ার করে প্রতিষ্ঠিত হতে চাই তাহলে করণীয় কি। কোন ইন্সটিটিউশন ভালো হবে, বা প্রসিডিউরটা কি এবং খরচ কতো হতে পারে (দেশে ও বিদেশে)? এই নিয়ে যদি আমায় একটা আর্টিকেল সাজেস্ট করেন বা আপনি নিজেই পরামর্শ দেন তাহলে খুবই উপকৃত হতাম।
Soumik Talukder
Final year, Session : 2012-13
Khulna Medical College