দেশে ইপিআই টিকার কাভারেজ কমেছে ২ দশমিক ৩ শতাংশ

মঙ্গলবার, ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫

১৯৭৯ সাল থেকে প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচিকে (ইপিআই) সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে আসছে বাংলাদেশ। এতে কর্মসূচিটি দেশের সবচেয়ে সফল জনস্বাস্থ্য উদ্যোগ হিসেবে স্বীকৃত এবং বিশ্বব্যাপী সফল উদাহরণ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। তবে ২০১৯ সাল থেকে ২০২৩ সাল থেকে ৪ বছরে এপিআই কাভারেজ কমেছে ২ দশমিক ৩ শতাংশ। এ অবস্থায় দেশে সার্বজনীন স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করার জন্য টিকাদান কর্মসূচি শক্তিশালী করার কোনো বিকল্প নেই বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞ ও খাত সংশ্লিষ্টরা।

মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) সকালে রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফাউন্ডেশন ও ইউনিসেফের যৌথ আয়োজনে ‘হাই লেভেল মিটিং অন স্ট্রেন্থেনিং ইমিউন্যু প্রোগ্রাম টু এচিভ ইউনিভার্সেল হেলথ কাভারেজ ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক সভায় এ তথ্য জানানো হয়।

অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন গ্যাভী সিএসওর চেয়ার এবং স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক ডা. নিজাম উদ্দীন আহম্মেদ। তিনি বলেন, বাংলাদেশ সরকার ১৯৭৯ সাল থেকে প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচিকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে আসছে। এই কর্মসূচিটি বাংলাদেশের সবচেয়ে সফল জনস্বাস্থ্য উদ্যোগ হিসেবে স্বীকৃত এবং এটি বিশ্বব্যাপী সফলতার রোল মডেল হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। তবে কভারেজ ইভ্যালুয়েশন সার্ভে (সিইএস) রিপোর্ট ২০২৩ অনুসারে বর্তমান বাংলাদেশে টিকাদান কভারেজ ৮১ দশমিক ৬০ শতাংশ, যা কভারেজ ইভ্যালুয়েশন সার্ভে ২০১৯ (৮৩ দশমিক ৯০ শতাংশ) থেকে ২ দশমিক ৩ শতাংশ কম। এ থেকে বোঝা যায় বাংলাদেশে টিকাদান কভারেজের হার কিছুটা হ্রাস পেয়েছে, যা একটি উদ্বেগজনক বিষয়। এটি শিশুদের মধ্যে প্রতিরোধযোগ্য রোগের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।

ডা. নিজাম উদ্দীন আহম্মেদ বলেন, টিকাদান কার্যক্রমের সফলতার পাশাপাশি বাংলাদেশ অনেক জায়গায় পিছিয়ে আছে, যার মূল কারণ টিকাদান কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত জনবল সংকট। বরাদ্দকৃত পদগুলোর প্রায় ৪০ শতাংশ শূন্য রয়েছে এবং ইপিআই সদর দফতরে এই শূন্য পদের হার ৪৩ শতাংশ। এছাড়া সময় মতো বাজেট বরাদ্দ, পর্যাপ্ত টিকার ঘাটতি, সমন্বয়ের অভাব, টিকার অসম বণ্টন, দুর্বল মনিটরিং সিস্টেম, দুর্গম এলাকায় টিকা পরিবহনের জটিলতা ও সময়মত টিকা না পাওয়া ইত্যাদি, নিয়োগ প্রক্রিয়া দ্রুত সম্পাদন করা জরুরি।

ইউনিসেফ বাংলাদেশের হেলথ ম্যানেজার ডা. রিয়াদ মাহমুদ বলেন, টিকাদান হচ্ছে জীবন বাঁচিয়ে রাখার ইনভেস্টমেন্ট। টিকাদান কার্যক্রমে ১ ডলার ইনভেস্ট করলে ২৫.২ ডলার রিটার্ন পাওয়া যায়। এছাড়া ইপিআই টিকা গ্রহণের মাধ্যমে প্রতিবছর ৫০ লাখ মানুষের শরীরে রোগ হয় না। আমাদের অভিভাবকরা অনেক সময় বয়সের আগেই বাচ্চাদের টিকা দিয়ে ফেলি যার কোনো কার্যকারিতা থাকে না এবং এই টিকা গুলো ইনভ্যালিড টিকা হিসেবে গণ্য হয় এবং এই টিকার পরিমাণ ১২ শতাংশ শতাংশ। আমরা যদি এই ১২ শতাংশ ইনভেলিড টিকার পরিমাণ শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনতে পারি, তাহলে আমাদের সফলতার পরিমাণ বেড়ে দাঁড়াবে শতকরা ৯০ শতাংশ।

স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফাউন্ডেশনের পলিসি অ্যাডভাইজর ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. রফিকুল ইসলামের সঞ্চালনায় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন সিটি কর্পোরেশনের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা, ইউনিসেফ ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিনিধিরা।

প্ল্যাটফর্ম/

প্ল্যাটফর্ম কনট্রিবিউটর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Time limit is exhausted. Please reload the CAPTCHA.

Next Post

পদোন্নতিসহ বিভিন্ন দাবিতে কর্মবিরতি দিতে পারেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা

Tue Feb 25 , 2025
মঙ্গলবার, ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ স্বাস্থ্যসেবা ও চিকিৎসা শিক্ষার মানোন্নয়ন, আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন ও এমবিবিএস ডিগ্রির আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অক্ষুণ্ন রাখতে দ্রুত সুপারনিউমারারি পদোন্নতির দাবি জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা। এ লক্ষ্যে সরকার ও সংশ্লিষ্টদের এক সপ্তাহের আলটিমেটাম দিয়েছেন তারা। এরমধ্যে দাবি আদায় না হলে আগামী ৮ থেকে ১০ মার্চ পর্যন্ত দৈনিক দুই ঘণ্টা […]

Platform of Medical & Dental Society

Platform is a non-profit voluntary group of Bangladeshi doctors, medical and dental students, working to preserve doctors right and help them about career and other sectors by bringing out the positives, prospects & opportunities regarding health sector. It is a voluntary effort to build a positive Bangladesh by improving our health sector and motivating the doctors through positive thinking and doing. Platform started its journey on September 26, 2013.

Organization portfolio:
Click here for details
Platform Logo