শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪
নিজস্ব হাসপাতাল ছাড়াই যশোর মেডিকেল কলেজ পার করেছে ১৪ বছর! ফলে এখনও শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণ ক্লাসের জন্য দীর্ঘ ৫ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে যেতে হয় যশোর জেনারেল হাসপাতালে। এতে শিক্ষার্থীরা যেমন ভোগান্তির পাশাপাশি উন্নত চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন বৃহত্তর যশোর অঞ্চল তথা যশোর, ঝিনাইদহ, মাগুরা, নড়াইল জেলার ২০ লক্ষাধিক মানুষ।
বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকারের সময় ২০০৬ সালে যশোরে মেডিকেল কলেজ স্থাপনের অনুমোদন দেয় সরকার।
যশোর শহর থেকে ৫ কিলোমিটার দক্ষিণে হরিণার বিল এলাকায় ৭৫ বিঘা জমি অধিগ্রহণও করার পর ২০১০-১১ সেশনে প্রথমবারের মতো শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়। অস্থায়ীভাবে যশোর জেনারেল হাসপাতালে কলেজের কার্যক্রম শুরু হয়। পরবর্তীতে ২০১৬ সালের আগস্ট মাসে হরিণার বিল এলাকায় নিজস্ব ক্যাম্পাসে কার্যক্রম শুরু হয় যশোর মেডিকেল কলেজের। এরপর ০৮ বছর অতিবাহিত হলেও নিজস্ব মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল করা হয়নি।
যশোরে মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার দাবিতে আন্দোলন শুরু হলে এক পর্যায়ে গত ২০২৩ সালের ২৯ আগস্ট জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে (একনেক) ৫০০ শয্যা বিশিষ্ট যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল অনুমোদন করা হয়। একই সাথে চারটি জেলায় (যশোর, কক্সবাজার, পাবনা ও নোয়াখালী) মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল নির্মাণের জন্য একজন প্রকল্প পরিচালক নিয়োগের পাশাপাশি বাজেটও বরাদ্দ দেয়া হয়। তবে প্ল্যাটফর্ম প্রতিবেদকের এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার কোন কার্যক্রম শুরু হয়নি।
যশোর মেডিকেল কলেজের চতুর্থ বর্ষের একজন শিক্ষার্থী প্ল্যাটফর্মকে বলেন, “মাসে প্রায় প্রতিদিনই দুই বেলা ওয়ার্ডে ক্লাস (থিউরিটিক্যাল ও প্রাকটিক্যাল) থাকে, এটা আমাদের সিলেবাসের অংশ। কিন্তু ক্যাম্পাস থেকে হাসপাতাল ৫ কিলোমিটার দূরে হওয়ায় রাতে যাওয়া-আসা করার সময় নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতে হয়। তাই বেশিরভাগ শিক্ষার্থীই সব ক্লাসে উপস্থিত থাকতে পারে না।” আরো কয়েকজন শিক্ষার্থীর সাথে কথা বলেও একই অভিযোগ পাওয়া যায়।
যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা সংগ্রাম কমিটির সদস্য সচিব জিল্লুর রহমান ভিটু বলেন, “বহু আন্দোলন-কর্মসূচীর পর গতবছর হাসপাতালের অনুমোদন দেয়া হয়েছিল। কিন্তু এখনো তা বাস্তবায়নে পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। এভাবে চলতে থাকলে আমাদেরকে আবারও আন্দোলনে নামতে বাধ্য করা হবে। এবার যশোরের মানুষকে নিয়ে আরো কঠিন আন্দোলন গড়ে তুলব।”
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, একনেকে অনুমোদন পাওয়া চার জেলার মধ্যে শুধুমাত্র পাবনায় মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল নির্মাণ কাজের অগ্রগতি হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের এক চিঠির প্রেক্ষিতে নোয়াখালীতে ১০ তলা হাসপাতাল ভবন নির্মাণের কাজ বন্ধ করে দেয়া হয়। কিন্তু যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল নির্মাণের বন্ধের বিষয়ে কোন নথি না থাকলেও কাজ আরম্ভ হয়নি।
প্ল্যাটফর্ম প্রতিবেদক: মঈন উদ্দিন আহমদ শিবলী