বুধবার, ১৬ অক্টোবর,২০২৪
পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক, নার্স ও কয়েকজন কর্মচারীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে নাছির উদ্দীন নামের একজনের বিরুদ্ধে। তিনি চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক দলের (জাসাস) সদস্য সচিব।
গত রবিবার (১৩ অক্টোবর) রাত সাড়ে ১০টার দিকে এ হামলা হয়। হামলায় আহত হয়েছেন জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. তারেকুল ইসলাম, সিনিয়র স্টাফ নার্স রুমু আকতার, জান্নাতুল নাঈম, ফারজানা আফরিনসহ আরো বেশ কয়েকজন কর্মচারী।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নাছির উদ্দিন রবিবার রাত আনুমানিক ১১টার দিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আবুল কাশেম (৭৫) নামে তার এক চাচাকে দেখতে যান। কিন্তু উন্নত চিকিৎসার জন্য ঘন্টাখানেক আগে আবুল কাশেমকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। নাছির কেন তার চাচাকে চট্টগ্রাম মেডিকেলে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে, তার কৈফিয়ত চান। ওই সময় কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. তারেকুল ইসলাম জানান, রোগীর অবস্থা ভালো নয়, তাই পাঠানো হয়েছে। এটি বলার পর ক্ষিপ্ত হয়ে যান নাছির। এক পর্যায়ে নাছির হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক, নার্স ও স্টাফদের ওপর চড়াও হয়ে মারধর ও গালিগালাজ করতে থাকেন। এতে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অন্যান্য রোগীদের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
হামলার বিষয়ে চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন ডা. জাহাঙ্গীর আলমকে অবগত করা হলে, তিনি সাথে সাথে বিষয়টি সেনাবাহিনী, পটিয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে জানান। রবিবার রাতেই ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনী ও পুলিশ গিয়ে হাতেনাতে নাছির উদ্দিনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
এ ব্যাপারে চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন ডা. জাহাঙ্গীর আলম চট্টগ্রামের স্থানীয় গণমাধ্যমকে বলেন, “পটিয়া হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক, নার্স ও স্টাফদের ওপর জাসাস নেতার হামলার ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও সিসিটিভি ফুটেজ দেখা হয়েছে। এ ঘটনার জন্য নাছির উদ্দিন দায়ী। সোমবার সকালে সেই জাসাস নেতার পক্ষে প্রতিনিধিসহ হামলার শিকার চিকিৎসক, নার্স ও স্টাফদের উপস্থিতিতে এক জরুরি মিটিংয়ের আয়োজন করা হয়। এ সময় নাছির উদ্দিন এ ঘটনার দায় স্বীকার করে ক্ষমা চেয়ে মুচলেকা দিলে আটকের প্রায় ১৫ ঘণ্টা পর তাকে পুলিশ ছেড়ে দেন।”
পটিয়া থানার ওসি আবু জায়েদ মো. নাজমুন নুর ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, জাসাস নেতা নাছির এ ঘটনার দায় স্বীকার করে ক্ষমা চেয়ে মুচলেকা দিলে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়। এ ঘটনায় কেউ মামলা করেননি।
মুচলেকা দিয়ে অভিযুক্তকে ছেড়ে দেয়া এবং মামলা না করার বিষয়ে জানতে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নাজমা আকতারকে গণমাধ্যমের পক্ষ থেকে একাধিকবার ফোন দেয়া হলেও তিনি রিসিভ না করায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। তবে চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন ডা. জাহাঙ্গীর আলমকে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি কোন উত্তর দেননি।
প্ল্যাটফর্ম প্রতিবেদকঃ মঈন উদ্দীন আহমদ শিবলী