বুধবার, ১০ জুন, ২০২০
ডা. মোবাশ্বের আহমেদ
মেডিকেল অফিসার,
পীরগাছা উপজেলা হেলথ কমপ্লেক্স, রংপুর
একজন বৃদ্ধ মহিলাকে নিয়ে তার মেয়ে চেম্বারে ঢুকল, ভাইকেও ডেকে ঢুকালো। বাদ সালাম জানালো, ভাই বিদেশে থাকে। কয়েকদিন পরে আবার যাবে। ভাইকেও জানালো আমি অনেক অনেক ভালো ডাক্তার আরো একগাদা প্রশংসা। রোগী তার মা।
আমি বৃদ্ধা মাকে দেখতেছি। আর মেয়ে বারবার বলতেছে স্যার যত পরীক্ষা লাগে দিয়ে দেন। শরীরটা পুরো চেক আপ করা দরকার। মা প্রায়ই অসুস্থ্য হয়। আমি ৬০ বছরের বৃদ্ধার জন্য রুটিন পরীক্ষার বাইরেও সিরাম লিপিড প্রোফাইল দিলাম। মেয়ে দেখি এবার বলছে স্যার লিভার ফাংশন টেস্ট বা আল্ট্রাসনোগ্রাম দিতে হবে না? আমি হেসে বললাম, “না লাগবে না আপাতত।”
মনে মনে খুশি হলাম। মায়ের কি যত্ন। বৃদ্ধা কে বলেও ফেললাম মা আপনার ছেলে মেয়েরা তো নিজেরাও মা-বাবা হয়েছে অথচ এখনো আপনার অনেক খেয়াল রাখে। খুব ভালো লাগল।
রোগী যাওয়ার পর রিসিপশনিষ্ট কে বললাম, “দেখেছেন বৃদ্ধার ছেলে মেয়েরা কত ভালো? বিশেষ করে মেয়েটা!”
রিসপশনিষ্ট যা বলল তাতে আমি থ’ হয়ে গেলাম।
– “স্যার আপনার ভিজিট কত?”
অবাক হয়ে বললাম, “কেন? ৩০০ টাকা।”
– “আর ঐ মহিলা মাকে দেখিয়ে ইনভেস্টিগেশন এর পার্সেন্টেজ বাবদ ১৪০০ টাকা নিয়ে গেল।”
– “ইনভেস্টিগেশন এর টাকা দিল কে?”
– “কেন বিদেশী ভাই!”
তাই বলে মায়ের কাছ থেকেও পার্সেন্টেজ …! এতক্ষনে তার বারবার ইনিভেস্টিগন চাওয়ার মর্ম বুঝলাম!
আর কিছু না বলে রুমে এসে চেয়ারে চোখ বন্ধ করে দুলছি আর ভাবছি আসলে কসাই কে?