বুধবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৫
বাবা মায়ের নেই কোনো সন্ধান। আহত অবস্থায় পড়ে ছিলেন রাস্তার পাশে। আরেক শিশু মুগ্ধকে ব্যাগ এ করে অজ্ঞাত কেউ রেখে গিয়েছিলো রাজধানীর মাতুয়াইল মেডিকেল এর বারান্দায়!
সেখান থেকেই উদ্ধার করে চিকিৎসা দিয়ে বাবার শূন্যতা পূরণ এর চেষ্টা করছেন চিকিৎসক ডাঃ মুজিবুর রহমান।

এ বিষয়ে ডাঃ মুজিবুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেছেন, “একজনকে পেয়েছি আমরা মোগরাপাড়া চৌরাস্তায় ডাস্টবিনে,আরেকজনকে আসলে কোথায় যে তার জন্ম হয়েছে! কোথায় ছিলো সেটার কোনো ইয়ে নাই! একজন ভদ্রমহিলা পলিথিন এর ব্যাগ এ করে ওকে হাসপাতালের বারান্দায় রেখে যায়!
তারপর থেকে ১২৬ দিন যাবৎ মুগ্ধ আমার কাছে, তার ওজন ছিলো ৯০০ গ্রাম!
আর নায়লা আজকে ৬৫ দিন যাবৎ আমার কাছে! ওরা ২ জনই লাইফ সাপোর্টে! ২ জনই মুমূর্ষু ছিলো! দুই জনই ভালো আছে এখন আলহামদুলিল্লাহ ”
শুধু এই ২ শিশু নয়! বিগত ১০ বছর ধরে মুগ্ধ আর নায়লার মতো অন্তত ৯৪ সদ্যজাত শিশুকে রাস্তা থেকে কুড়িয়ে এভাবেই চিকিৎসা দিয়েছেন নবজাতক বিশেষজ্ঞ ডাঃ মুজিবুর রহমান! যেখানে ৯৪ জন পথ নবজাতক উদ্ধার করা হলেও তাদের মধ্যে ৬৪ জনই মারা গিয়েছে!
তিনি আরো বলেন, “আমার জানামতে বাংলাদেশে সহ পৃথিবীর অনেক দেশে পথ শিশুদের নিয়ে অনেক প্রতিষ্ঠান আছেন এবং তারা কাজ করে যাচ্ছেন, নিরলস ভাবে শ্রম দিয়ে যাচ্ছেন! শুধুমাত্র এই পথ নবজাতক নিয়ে কাজ করেন এরকম একটি প্রতিষ্ঠান ও খুঁজে পাই নাই! আমি ২০১৫ সাল থেকে এই পথ নবজাতদের নিয়ে কাজ করছি। আমি চাই আপনারা আমার পাশে এগিয়ে আসুন। এই পথ নবজাতকদের যে করুন দূরদশা! আমরা তাদেরকে এ থেকে মুক্তি দিই।”
এমন নবজাতকদের সুরক্ষায় বৃহৎ পরিসরে নিউবর্ন হাব গড়ে তোলার ইচ্ছে এই চিকিৎসকের। যেখানে সামাজিক ও আর্থিক দৈন্যতায় থাকা মায়েদের অনাকাঙ্ক্ষিত সন্তানকেও রাখা যাবে নাম পরিচয় গোপন রেখে। এতে অবহেলায় নবজাতকের মৃত্যু ও রোধ করা সম্ভব হবে।
সম্পূর্ণ বিনা টাকায় বিনা খরচে ঐখানে চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন করা হবে! এই নিউবর্ন হাব তৈরি সম্ভব হলে এমন নবজাতকদেরকে আর রাস্তা ঘাটে ফেলে দিতে হবে না! জাতীয় প্রেস ক্লাবে বিশ্ব পথশিশু দিবসে বড় পরিসরে নিউবর্ন হাব তৈরির দাবি তুলে ধরেন এই চিকিৎসক।
এ প্রসঙ্গে অভিনেতা ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন,”এরকম ভাবে হারিয়ে যাক!রাস্তায় পরে থাকুক!এভাবে মৃত্যু হোক এটা কাম্য নয়!”
পথ নবজাতকদের জন্য নিউবর্ন হাব হবে পরিচয় গোপন রেখেই শিশুকে রেখে যাওয়ার সুযোগ। যা শিশুর জীবন রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
প্ল্যাটফর্ম প্রতিবেদকঃ মেহরুবা আক্তার