ম্যালেরিয়া অথবা HIV প্রতিরোধের মত,বিশ্বব্যাপী গৃহীত উদ্যোগের অভাবে এবং এ বিষয়ে বিনিয়োগের অভাবে,প্রতিবছর নিউমোনিয়া রোগ নির্ণয়ে সবচেয়ে বেশি ভুল হয় এবং ভুল চিকিৎসা দেয়া হয়।এদের মধ্যে বেশিরভাগ শিশুই মারা যায়।বিশ্ব সংস্থা ও সরকারের শুভদৃষ্টি এবং রিসার্চের অভাব রয়েছে নিউমোনিয়া নিয়ে।
UNICEF এর নিউমোনিয়া স্পেশালিষ্ট ডা.স্টিফেন পিটারসন এ মত প্রকাশ করেন।
প্রতি বছর ৩লাখ শিশু মারা যায় ডায়রিয়ায় আর ৫লাখ শিশু ম্যালেরিয়ায়। কিন্তু নিউমোনিয়াতে মারা যায় ৯লাখ শিশু।শিশুমৃত্যুর হার বৃদ্ধিতে নিউমোনিয়া ডায়রিয়ার স্থান দখল করে নিয়েছে।কিন্তু তা এ জন্য নয় যে নিউমোনিয়ায় মৃত্যুর হার বেড়েছে বরং ডায়রিয়ায় মৃত্যুহার কমে যাওয়ার দরুণ এটা হয়েছে।যা সম্ভব হয়েছে ভ্যাক্সিন(টিকা),স্বল্পমূল্যের চিকিৎসা সেবা এবং স্যানিটারি ল্যাট্রিনের জন্য।
প্রফেসর ক্লুগেন বলেন এখন নিউমোনিয়া রোধেও আমাদের এভাবে কাজ করা উচিত।নিম্ন আয়ের দেশের শিশুরা এক্ষেত্রে বেশি আক্রান্ত। কারণ ভ্যাক্সিন।এই ভ্যাক্সিন এর মূল্য অনেক বেশি।নিউমোনিয়ার ভ্যাক্সিনের দাম বেশি হওয়ার কারণে বেশিরভাগ দেশই এ ব্যয় বহন করতে অক্ষম।
তবে জন্মের পরে ৬মাস শিশুকে শুধুমাত্র মায়ের বুকের দুধ খাওয়ানো উচিত।বাড়তি খাবার দেয়া উচিত নয়। যা শিশুদের রোদ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।শিশুর নিউমোনিয়া হওয়ার পরিমান কমায় দেয় প্রায়
এক চতুর্থাংশ।
নিউমোনিয়া প্রতিরোধ এবং চিকিৎসায় যে বিনিয়োগের প্রয়োজন তা এখনও অনুপস্থিত। চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মীগণ জীবন বাচাঁতে তাদের নিজেদের কম খরচের উপায় উদ্ভাবন করছেন। এমনই একজন বাংলাদেশী চিকিৎসক মোঃ জুবায়ের চিশতি যিনি আইসিডিডিআরবি তে কর্মরত আছেন।
ডা.জুবায়ের আবিষ্কার করেন স্বল্প ব্যয়বহুল বাবল সিপিএপি[continuous positive airway pressure]।
যা তৈরি করা হয়েছে শ্যাম্পুর বোতল দিয়ে।এই ডেভাইসটি ভ্যান্টিলেটর মেসিনের কাজ সম্পন্ন করতে পারে।পার্থক্য একটাই এর দাম ২০০টাকারও কম কিন্তু একটা ভ্যান্টিলেটর মেসিনের দাম ১৫লাখ টাকারও বেশি।আইসিডিডিআরবি তে এটা প্রমাণিত হয়েছে যে,এই ডেভাইস ব্যবহার করে নিউমোনিয়ায় মৃত্যুহার ৭৫ শতাংশ কমায় আনা সম্ভব হয়েছে।
প্রিম্যাচিউরড বেবিদের চিকিৎসায় আপাতত এই ডেভাইস ব্যবহৃত হচ্ছে এবং ইথিয়পীয়ায় পরীক্ষিত হচ্ছে।
এই আবিষ্কার নিউমোনিয়া প্রতিরোধে ব্যাপক ভূমিকা পালন করবে বলে বলেছেন ডা.পিটারসন।
প্ল্যাটফর্ম ফিচার রাইটারঃ উর্বী সারাফ আনিকা
৫ম বর্ষ
রংপুর কমিউনিটি মেডিকেল কলেজ।