৭ জানুয়ারি, ২০২০
মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের অন্যতম ট্রাস্টি ডা. সারওয়ার আলীর বাসায় ঢুকে তাকে ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের ছুরিকাঘাত করে হত্যার চেষ্টা চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় বাড়ির দারোয়ান হাসান ও গাড়িচালক নাজমুলসহ অজ্ঞাত পরিচয়ের আরো চার-পাঁচজনকে আসামি করে উত্তরা পশ্চিম থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন এই চিকিৎসক। এ ঘটনায় বাড়ির দারোয়ান হাসানকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
গত ৫ জানুয়ারি (রবিবার) রাতে রাজধানীর উত্তরার ৭ নম্বর সেক্টরে ছায়ানটের নির্বাহী সভাপতি সারওয়ার আলীর বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
সারওয়ার আলী মামলায় অভিযোগ করেছেন,
রবিবার রাত সোয়া ১০টার দিকে অজ্ঞাতপরিচয় দুই যুবক উত্তরার সারওয়ার আলীর বাড়িতে ঢোকে। তারা ওই বাড়ির তৃতীয় তলায় গিয়ে তাঁর মেয়ে সায়মা আলীর বাসার দরজায় ধাক্কা দেয়। দরজা খুলে দেয়া হলে দুর্বৃত্তরা ভেতরে গিয়ে সারওয়ার আলীর মেয়ে ও জামাতাকে ছুরিকাঘাত করে হত্যার চেষ্টা চালায়। পরে বাড়ির চতুর্থ তলায় গিয়ে সারওয়ার আলী ও তাঁর স্ত্রীকে হত্যার চেষ্টা করে। তখন তিনতলা থেকে আমার মেয়ে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯–এ ফোন করে। তারা বাঁচার জন্য চিৎকার করে। এরই মধ্যে দোতলার ভাড়াটে শাহাবুদ্দিন চাকলাদার ও তাঁর ছেলে মোবাশ্বের চাকলাদার এগিয়ে আসেন। এতে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়। তিনি বলেন, ফোন করার চার মিনিটের মধ্যে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। তাঁর সন্দেহ, ভবনের দারোয়ান হাসানের সঙ্গে দুর্বৃত্তদের যোগসাজশ রয়েছে। সে আগে থেকেই বাড়ির ফটক খোলা রেখেছিল।
দোতলার বাসিন্দা শাহাবুদ্দিন চাকলাদার বলেন, চিৎকার শুনে তিনি ও তার ছেলে মোবাশ্বের চাকলাদার চারতলায় গিয়ে দেখেন, এক দুর্বৃত্ত সারওয়ার আলী ও মাখদুমা নার্গিসের শরীরের ওপর দুই পা দিয়ে বসে আছেন। তখন তিনি ধমক দিয়ে পরিচয় জানতে চাইলে ওই দুর্বৃত্ত তাকে ও তার ছেলের হাতে ছুরিকাঘাত করে। এ সময় তার ছেলে টেবিলের কাচ ছুড়ে মারার চেষ্টা করলে দুর্বৃত্ত পালিয়ে যায়।
পরে উত্তরা পশ্চিম থানার পুলিশ তল্লাশি চালিয়ে ওই বাড়ির পার্কিং স্থল থেকে একটি স্ক্রু ড্রাইভার, ব্যাগে থাকা সাতটি চাপাতি, বৈদ্যুতিক শক দেওয়ার যন্ত্র, টিভি ক্যামেরার স্ট্যান্ড, সিনথেটিক দড়ি ও একটি কেমিক্যাল স্প্রে উদ্ধার করে। তাদের কাছ থেকে জানা যায়, বাড়ির দারোয়ান হাসানের কাছ থেকে একটি মুঠোফোন উদ্ধার করা হয়েছে। ফোনটি ছিল মাখদুমা নার্গিসের গাড়িচালক নাজমুলের, সেটি দারোয়ান হাসান ব্যবহার করছিলেন। হামলার দিন দারোয়ানের ওই ফোনে অন্তত ২৫টি কল এসেছিল।
উত্তরা পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তপন চন্দ্র সাহা বলেন, পুরো ঘটনাটি গুরুত্ব দিয়ে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ ঘটনায় বাড়ির দারোয়ান হাসানকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
প্রতিবেদক/ ফাহমিদা হক মিতি